আজ ‘বিশ্ব হিজাব দিবস। গত ২০১৩ সালের ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ‘বিশ্ব হিজাব দিবস’ পালন করা শুরু হয়। সেই থেকে এতে ব্যাপক সাড়া মেলে, যে কারণে হাজারো অমুসলিম নারীও হিজাব পরে দিবসটি পালন করেন। বিশ্ব হিজাব দিবস সম্পর্কে আমরা অনেকেই হয়তো তেমন কিছু জানেন না। এ ব্যাপারে কিছু তথ্য জেনে নিন-
‘বিশ্ব হিজাব দিবস’ উদযাপনের চিন্তাটা প্রথমে আসে নিউইয়র্কের বাসিন্দা নাজমা খান নামের এক নারীর মনে। হিজাবকে অনেকে দেখেন নারীদের অবদমন ও বিভাজন সৃষ্টির প্রতীক হিসেবে। নানা বিতর্ক মোকাবেলায় এই বিশ্ব হিজাব দিবসের ডাক দেন নাজমা। নাজমা খানের জন্ম বাংলাদেশে। যিনি ১১ বছর বয়স থেকে নিউইয়র্কে স্থায়ীভাবে বসবাস করে আসছেন। অমুসলিম ও মুসলিম নারীদের যারা সচরাচর হিজাব পরেন না, তাদের অনেকের মনোযোগ আকর্ষণ করেন তিনি।
এদিকে হিজাব দিবস পালনের ডাক দেয়ার প্রেক্ষাপট হিসেবে নাজমা জানান, তিনি যখন হিজাব মাথায় স্কুলে যেতেন, তখন তাকে অনেক অপমান ও লাঞ্ছনার শিকার হতে হতো। মাধ্যমিক স্কুলে পড়ার সময় তাকে ব্যাটম্যান এবং নিনজা বলে ডাকা হত। আর আমেরিকার টুইন টাওয়ারে হামলার পর তাকে ডাকা হত ওসামা বিন লাদেন এবং সন্ত্রাসী বলে।
নাজমা আরও বলেন, ‘স্কুলে কেবল আমিই হিজাব পরতাম। এ জন্য নানা বৈষম্যের শিকার হতে হয়েছে। তাই ভাবলাম, অমুসলিম নারীরা যদি মাত্র এক দিনের জন্য হলেও হিজাব পরেন, তাহলে মুসলিম নারীদের আর এ ধরনের বৈষম্যের শিকার হতে হবে না।’
মূলত ফেইসবুক, টূইটারের মতো সোশ্যাল নেটোয়ার্কের মাধমেই এই দিবসটির চেতনা ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, ভারত, পাকিস্তান, ফ্রান্স, জার্মানির মতো বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ে। এই বছর প্রায় ৫০ টিরও বেশি দেশে ফেব্রুয়ারির প্রথম দিনটি নানান আয়োজনের মধ্য দিয়ে উদযাপিত হয় এই হিজাব দিবস। এরই ধারাবাহিকতায় এবার ৩য় বারের মতো বিশ্ব হিজাব দিবস ১৪০টি দেশে পালিত হচ্ছে।
হিজাব আজকাল বাংলাদেশ সহ পাশ্চাত্যের অনেক দেশেই মুসলিম মেয়েদের জন্যে কেবল একটা ফ্যাশনের নতুন ধারা হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এই দিবসের মাধ্যমে ইসলামে পর্দার বিধানের যে গুরুত্ব, পর্দার প্রকৃত ধারনা এবং চেতনাকে খুব একটা প্রাধান্য দেয়া হয়নি। তবে এই দিবসের মাধ্যমে নাজমা খান অনেক মেয়ের মনেই হিজাবের গ্রহনযোগ্যতা সম্পর্কে কিছু আগ্রহ তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন।