Home » হকারদের পর মেয়র ফাটাকেষ্টের নতুন টার্গেট

হকারদের পর মেয়র ফাটাকেষ্টের নতুন টার্গেট

হকারদের পর ড্রাইভার, এমন লক্ষ্য নিয়েই এগুচ্ছে সিটি কর্পোরেশন। নগরীর ফুটপাত মুক্ত করতে পর্যায়ক্রমে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ গ্রহন করতে প্রস্তুত তারা। সম্প্রতি এ প্রতিবেদকের সাথে আলাপকালে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী জানিয়েছেন তার এই লক্ষ্যের কথা।

সিলেট মহানগরীর ফুটপাত মুক্ত করতে রীতিমতো জেহাদ চলছে। একপক্ষে মেয়রের নেতৃত্বে সিলেট সিটি কর্পোরেশন, অপর পক্ষে ভাসমান ব্যবসায়ীরা। প্রায় প্রতিদিন অভিযান চলছে নগরীর প্রধান কয়েকটি অংশে। একের পর এক সাঁড়াশী অভিযানে ফুটপাত সাময়িকভাবে মুক্ত হলেও কিছুকিছু জায়গায় আবারও বসে পড়ছে হকাররা। 

তবে সিলেটের মেয়র জানিয়েছেন, যেকোন মূল্যে তিনি মহানগরীর ফুটপাত মুক্ত করবেনই।

তার এমন কঠোর অবস্থানকে সচেতন নগরবাসী স্বাগত জানালেও কিছুকিছু ক্ষেত্রে কঠোর সমালোচনাও হচ্ছে। আর তা হচ্ছে নগরজুড়ে গজিয়ে উঠা অসংখ্য অবৈধ গাড়ির ষ্ট্যান্ড নিয়ে।

সিলেটের ফুটপাত দখল করে নাগরিক বিড়ম্বনা সৃষ্টির জন্য যেমন হকাররা দায়ী, তেমনি অবৈধভাবে গড়ে উঠা অটোরিকশা ও মিনিবাস ষ্ট্যান্ডগুলোর দায়ও কোন অংশে কম নয়। একই স্থানে একাধিক ষ্ট্যান্ড নগরীর যত্রতত্র দেখা যায়। এমনকি কাজিরবাজার ব্রিজের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় স্থাপনা দখল করেও চলছে অটোরিকশা ষ্ট্যান্ড। বন্দরবাজার, কোর্টপয়েন্ট, আম্বরখানা, সুরমা পয়েন্ট, আদালতপাড়া, জিতু মিয়ার পয়েন্ট, রিকাবিবাজার, ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মদীনা মার্কেট, কিনব্রিজের দক্ষিণ মোড়, মেন্দিবাগ, উপশহর মোড়সহ নগরীর প্রায় সব প্রধান সড়কে একাধিক, এমনকি কোনকোন স্থানে প্রায় ৩/৪টি সিএনজি অটোরিকশা ষ্ট্যান্ড দীর্ঘদিন থেকে অবৈধভাবে টিকে আছে। তাছাড়া ক’দিন পরপরই নতুন নতুন ষ্ট্যান্ড গড়েও উঠছে। এক্ষেত্রে চালকসহ তাদের নেতাদের ধারালো যুক্তির নাম, জনগনের চাহিদা। চাহিদা বিবেচনায় যত্রতত্র তারা সিএনজি অটোরিকশা ষ্ট্যান্ড গড়ে তুলছে আর উৎপাদন করছে জনগনের ভোগান্তি।

একইভাবে দায়ী মিনিবাস ষ্ট্যান্ডগুলোও। সিলেট মহানগরীর ভিআইপি রোডের চৌহাট্টা পয়েন্ট থেকে শুরু করে স্টেডিয়াম পাড়া পর্যন্ত দখল করে সারাদিন দাঁড়িয়ে থাকে অসংখ্য মিনিবাস বা লাইটেস। জানা গেছে, এটিও একটি অননুমোদিত। এমন আরেকটি ষ্ট্যান্ড আছে ভিআইপি রোড তালতলায়। আছে নগরীর আরো কয়েকটি স্থানে।

মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী আদালতের নির্দেশনা মাথায় নিয়ে নগরীর ফুটপাত মুক্ত করতে তার প্রথম মেয়াদ থেকেই সোচ্চার। দ্বিতীয় মেয়াদেও ফুটপাত মুক্ত করার কাজ শুরু করেছেন। ভাসমান ব্যবসায়ী বা হকারদের ব্যাপারে তিনি কঠোর ভূমিকায় অবতীর্ণ হলেও অবৈধ ষ্ট্যান্ডগুলোর ব্যাপারে আগেও তেমন কোন ভূমিকা রাখেননি, এবারও না। অন্তত এখন পর্যন্ত।

তবে বিষয়টি নিয়ে যে তিনি বা তার সহকর্মিরা চিন্তা করছেন, সম্প্রতি এ প্রতিবেদকের সাথে আলাপচারিতায় তা স্পষ্ট করেছেন। জানিয়েছেন, পর্যায়ক্রমে সিলেটের সবগুলো ফুটপাতই উদ্ধার করা হবে। ভাসমান ব্যবসায়ীদের মতো সিএনজি চালিত অটোরিকশা বা মিনিবাস ষ্ট্যান্ডগুলোর বিরুদ্ধেও অ্যাকশন নেওয়া হবে। স্বচ্ছন্দে নগরবাসীর চলাফেরার জন্য মুক্ত ফুটপাত জরুরী। তার জন্য যা যা করা প্রয়োজন আমি তাই করবো। তিনি এসব ব্যাপারে নগরবাসীর আরও সচেতন ভূমিকার প্রত্যাশাও ব্যাক্ত করেছেন।

এছাড়া সিটি কর্পোরেশনের সাথে সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানিয়েছে, হকারদের পর অবৈধ গাড়ির ষ্ট্যান্ডগুলোও উচ্ছেদ করার লক্ষ্য নিয়ে তারা অগ্রসর হচ্ছেন।

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *