Home » সিলেটের ব্যাডমিন্টনের জটিলতা নিয়ে যা বললেন সাবেক খেলোয়াড়রা

সিলেটের ব্যাডমিন্টনের জটিলতা নিয়ে যা বললেন সাবেক খেলোয়াড়রা

 সিলেটে ১৯ ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড়কে বহিস্কার ও পাঁচ দিনের মাথায় তা প্রত্যাহার নিয়ে ক্রীড়াঙ্গনে চলছে তোলপাড়। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে দেশের ব্যাডমিন্টনে সিলেটের গৌরবজনক অবস্থান ধরে রাখা নিয়ে দেখা দিয়েছে শঙ্কা। বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার করলেও নিষেধাজ্ঞা বহাল রয়েছে জেলা ক্রীড়া সংস্থার কোন স্থাপনায় ওই খেলোয়াড়দের অনুশীলনে। আগামী ২ ফেব্রুয়ারি কারণ দর্শানো নোটিশের জবাব দিতেও বলা হয়েছে সংশ্লিষ্ট খেলোয়াড়দের। এমতাবস্থায় সিলেটের ব্যাডমিন্টনের স্বার্থে জেলা ক্রীড়া সংস্থার হস্তক্ষেপ কামনা করছেন সাবেক কৃতি খেলোয়াড়রা। 

জানা যায়, গত ১৬ ও ১৭ জানুয়ারি ব্রিটিশ বাংলাদেশি খেলোয়াড়দের সাথে আয়োজিত প্রীতি টুর্নামেন্টে অংশ নিতে অপারগতা প্রকাশ করেন জাতীয় ব্যাডমিন্টন তারকা এনাম, দুলাল, খালেদ, সোহেল, গৌরব, মাঙ্গালসহ ১৯ খেলোয়াড়। সফররত ব্রিটিশ বাংলাদেশি খেলোয়াড়দের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের কারণে টুর্নামেন্টটিতে খেলবেন না এমন কথা জেলা ক্রীড়া সংস্থাকে আগেই জানিয়ে রেখেছিলেন খেলোয়াড়রা। শেষ পর্যন্ত টুর্নামেন্টে অংশ না নেয়ায় গত ২৩ জানুয়ারি ওই ১৯ খেলোয়াড়কে শোকজ, সাময়িক বহিস্কার ও অনুশীলনে ক্রীড়া সংস্থার স্থাপনা ব্যবহার না করতে জেলা ব্যাডমিন্টন কমিটির সম্পাদক লিয়াকত হোসেন স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। ওই চিঠি প্রেরণের পাঁচদিনের মধ্যে গত ২৭ জানুয়ারি পুণরায় চিঠি পাঠিয়ে বহিস্কার প্রত্যাহার করে শোকজ বহাল রাখেন লিয়াকত হোসেন। 

এদিকে, শোকজপ্রাপ্তরা অভিযোগ তুলেছেন সম্পাদকের দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে লিয়াকত হোসেন স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে ব্যাডমিন্টন কমিটি চালাচ্ছেন। ব্যাডমিন্টন কমিটির সম্পাদক হিসেবে শোকজ করা বা বহিস্কারাদেশ প্রদানের এখতিয়ার লিয়াকতের নেই এমন অভিযোগও তুলেন তারা।
এ ব্যাপারে সিলেট সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর ও সাবেক ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড় আজাদুর রহমান আজাদ বলেন, সিলেটের খেলোয়াড়রাই এখন দেশের ব্যাডমিন্টনে প্রতিনিধিত্ব করছেন। দেশে-বিদেশে বিভিন্ন টুর্নামেন্টে অংশ নিয়ে কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফলের মাধ্যমে তারা সিলেট তথা দেশের জন্য সুনাম বয়ে আনছেন। একটি প্রীতি টুর্নামেন্টকে ঘিরে সিলেটের ব্যাডমিন্টনে যে অস্বস্তিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে তা মোটেই কাম্য নয়। ব্যাডমিন্টনের স্বার্থে খেলোয়াড় ও জেলা ব্যাডমিন্টন কমিটিকে নিয়ে বসে জেলা ক্রীড়া সংস্থা সমস্যার সমাধান করা উচিত।
সাবেক কৃতি ব্যাডমিন্টন তারকা লোকমান আহমদ বলেন, খেলোয়াড়দের যেমন ক্রীড়া সংস্থার প্রয়োজন আছে, তেমনি ক্রীড়া সংস্থারও প্রয়োজন আছে খেলোয়াড়দের। ক্রীড়া সংস্থার স্থাপনা ব্যবহার করতে না পারলে আমরা কেউই জাতীয় মানের খেলোয়াড় হতে পারতাম না। যারা ক্রীড়া সংস্থার ব্যানারে আয়োজিত টুর্নামেন্টে অংশ নেননি তারা ভুল করেছেন। ক্রীড়া সংস্থার সম্মান রক্ষার্থে তারা খেলায় অংশ নেয়া উচিত ছিল। আমার মনে হচ্ছে দুইপক্ষের মধ্যেই গড়মিল আছে। যারা টুর্নামেন্টে অংশ নেননি তাদেরকে শোকজ করা যেতেই পারে, কিন্তু বহিস্কার করা ঠিক হয়নি। এখন ব্যাডমিন্টনের স্বার্থে উভয় পক্ষের উচিত সমঝোতার মাধ্যমে বিষয়টির সমাধান করা।
সাবেক কিংবদন্তি ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড় আহমদ জুলকারনাইন বলেন, যে টুর্নামেন্ট নিয়ে জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে তা জেলা ক্রীড়া সংস্থার এ্যাফিলেটেড কোন খেলা নয়। এটি একটি প্রদর্শনী টুর্নামেন্ট ছিল। ওই টুর্নামেন্টে না খেলার জন্য আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে খেলোয়াড়দের বহিস্কার করা অনুচিত। কি কারণে খেলোয়াড়রা খেলেনি তাও সংশ্লিষ্টদের জানা উচিত ছিল। জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক উভয়পক্ষকে ডেকে সমঝোতা করে দিলেই সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। 

সিলেট জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মাহি উদ্দিন আহমদ সেলিম বলেন, বিষয়টি জেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি ও জেলা প্রশাসক পর্যন্ত গড়িয়েছে। বিষয়টি জেলা প্রশাসক দেখবেন বলে আমরা আশাবাদী। 

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *