আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর দেশের মানুষের বারবার আস্থাই প্রমাণ করে তাঁর পক্ষেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে।’
আজ শনিবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের নিরঙ্কুশ বিজয় উপলক্ষে আয়োজিত বিজয় সমাবেশে নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন।
তাঁরা বলেন, দেশের স্বাধীনতার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশের মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তির বিপ্লব শুরু করেছিলেন। আর সে সময়েই বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে দেশকে পাকিস্তানের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ করার ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল।
বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর দেশে ফিরে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজনৈতিক অধিকার আদায়ের আন্দোলন শুরু করেছিলেন। এখন তিনি বঙ্গবন্ধুর অর্থনৈতিক মুক্তির দ্বিতীয় বিপ্লবের নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন। তাই দেশের জনগন বারবার তাঁকে নির্বাচিত করে আসছে বলে তাঁরা উল্লেখ করেন।
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সংসদ সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, সভাপতিমন্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, মোহাম্মদ নাসিম, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।
সমাবেশে অভিনন্দনপত্র পাঠ করেন দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
আমির হোসেন আমু বলেন, দেশের জনগন বারবার বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বিজয়ী করে তাঁর ওপর আস্থা জানিয়ে আসছে। এ আস্থার স্থাপনই প্রমান করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষেই বঙ্গবন্ধু আদর্শ বাস্তবায়ন করা সম্ভব।
তিনি বলেন, ১৯৮১ সালে ১৭ মে দেশে ফেরার পর বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা দেশের মানুষের রাজনৈতিক অধিকার আদায়ের সংগ্রাম শুরু করেছিলেন। এখন তিনি বঙ্গবন্ধুর দ্বিতীয় বিপ্লব দেশের মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তির সংগ্রামে নেতৃত্ব দান করছেন।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, দেশে মানুষ উন্নয়নের পক্ষে এবং সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে রায় দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ সকল ক্ষেত্রে পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে।
বঙ্গবন্ধুর মতো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও লক্ষ্য নির্ধারণ করে কাজ করেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ হবে জামায়াত, যুদ্ধাপরাধী, খুনী ও সন্ত্রাসীমুক্ত সংসদ। ১৯৭০ সালের মতো গণজোয়ার সৃষ্টি করে বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজ শেষ করার জন্য দেশের মানুষ আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়েছে।
বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নের অদম্য আকাঙ্খা নিয়ে দেশের জনগন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অবিস্মরণীয় বিজয় এনে দিয়েছে।’
মোহাম্মদ নাসিম বলেন, বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ৫ বছর সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ভিত্তিতে উন্নত দেশ গঠনে নেতৃত্ব দেবেন। যারা নির্বাচনে হেরে যায় তারা মাথা উচুঁ করে দাঁড়াতে পারে না।
সমাবেশে আরো বক্তব্য দেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, কেন্দ্রীয় কার্য নির্বাহী সংসদের সদস্য মির্জা আজম এমপি, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ প্রমুখ।
সমাবেশ পরিচালনা করেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক এবং তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ও উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন।
দুপুর আড়াইটায় পবিত্র ধর্মগ্রন্থ পাঠের মধ্য দিয়ে সমাবেশে শুরু হয়। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিকেল ৩টা ৫ মিনিটে সমাবেশস্থলে এসে পৌঁছেন।
প্রধানমন্ত্রী সমাবেশস্থলে এসে পৌঁছলে হাজার হাজার নেতা-কর্মী সবুজ ও সাদা কাপড়ের মধ্যে লাল বৃত্তের পতাকা নাড়িয়ে তাঁকে অভিনন্দন জানান।
এর আগে দুপুর বারোটা থেকে শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। দেশের বিশিষ্ট শিল্পীরা এতে সংগীত পরিবেশন করেন। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন দলের সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল।