একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য সারা দেশে ৩০০ আসনে ৩ হাজার ৫৬ জন মনোনয়ন দাখিল করেছেন।সিলেট জেলার ৬ আসনে মনোনয়নপত্র জমা ৬২ প্রার্থীর।
অনেকটা উৎসবমুখর পরিবেশে সারা দেশে জাতীয় নির্বাচনের মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন প্রার্থীরা। বুধবার রাতে ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
সচিব বলেন, রংপুর বিভাগে ৩৬১ জন, রাজশাহী বিভাগে ৩৫৩ জন, খুলনা বিভাগে ৩৫১ জন, বরিশাল বিভাগে ১৮২ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ২৩৬ জন, ঢাকা বিভাগে ৭০৮ জন, সিলেট বিভাগে ১৭৭ এবং চট্টগ্রাম বিভাগে ৬৮৮টি মনোনয়ন দাখিল করা হয়েছে। সবচেয়ে বেশি মনোনয়ন পড়েছে ঢাকা-৮ আসনে ২২টি।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য মনোনয়নপত্র জমার শেষ দিন ছিল বুধবার। এদিন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে আনন্দ মুখর পরিবেশে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরা।
সিলেট জেলার ৬ আসনে মনোনয়নপত্র জমা ৬২ প্রার্থীর
সিলেটের ছয়টি সংসদীয় আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন ৬২ জন প্রার্থী। এসব প্রার্থীদের মধ্যে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি, জামায়াত, এনপিপি, বাসদ, গণফোরামসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা রয়েছেন। এছাড়া স্বতন্ত্র হিসেবেও অনেকে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
সিলেট জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ের তথ্যানুসারে, সিলেটের ছয়টি সংসদীয় আসনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি, ১৩ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন সিলেট-৩ আসনে। অন্যদিকে সবচেয়ে কম, ৭ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন সিলেট-৪ আসনে।
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, সিলেট-১ আসনে ১১ জন, সিলেট-২ আসনে ১১ জন, সিলেট-৩ আসনে ১৩ জন, সিলেট-৪ আসনে ৭ জন, সিলেট-৫ আসনে ১১ জন এবং সিলেট-৬ আসনে ৯ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
সিলেটের ছয়টি আসনে মনোনয়নপত্র জমা দেয়াদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন-
সিলেট-১ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন ১১ প্রার্থী
সিলেট-১ আসন (সিটি করপোরেশন ও সদর উপজেলা) : আওয়ামী লীগের ড. এ কে আব্দুল মোমেন, বিএনপির ইনাম আহমদ চৌধুরী ও খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির, জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় সদস্য মাহবুবুর রহমান চৌধুরী, বাসদের প্রণব জ্যোতি পাল, বাসদ (মার্ক্সবাদী) উজ্জ্বল রায়, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি) ইউসুফ আহমদ।
সিলেট-২ আসন (বিশ্বনাথ-ওসমানীনগর) : বিএনপির তাহসিনা রুশদীর লুনা ও আবরার ইলিয়াস অর্ণব, জাতীয় পার্টির ইয়াহইয়া চৌধুরী এহিয়া, খেলাফত মজলিসের মুনতাসীর আলী, স্বতন্ত্র প্রার্থী যুক্তরাজ্য প্রবাসী বিএনপি নেতা আব্দুর রব মল্লিক, গণফোরামের মোকাব্বির খান, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মাওলানা কাজী আমিন উদ্দিন, এনপিপি’র মনোয়ার হোসেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী মুহিবুর রহমান, ড. এনামুল হক সরদার।
সিলেট-৩ আসন (দক্ষিণ সুরমা, ফেঞ্চুগঞ্জ ও বালাগঞ্জ) : আওয়ামী লীগের মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী কয়েস, বিএনপির এম এ হক, শফি আহমদ চৌধুরী, ব্যারিস্টার এম এ সালাম ও কাইয়ুম চৌধুরী, জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় সদস্য উছমান আলী, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মাওলানা নজরুল ইসলাম, খেলাফত মজলিসের দিলওয়ার হোসেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী জুনায়েদ মোহাম্মদ।
সিলেট-৪ আসন (গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর ও কোম্পানীগঞ্জ) : আওয়ামী লীগের ইমরান আহমদ, বিএনপির দিলদার হোসেন সেলিম ও সামছুজ্জামান জামান, জাতীয় পার্টির এ টিউ তাজ রহমান, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মাওলানা আতাউর রহমান, জাতীয় পার্টির আশিক আলী, ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের জিল্লুর রহমান।
সিলেট-৫ আসন (জকিগঞ্জ-কানাইঘাট) : আওয়ামী লীগের হাফিজ আহমদ মজুমদার, বিএনপির মামুনুর রশীদ মামুন, জাতীয় পার্টির সেলিম উদ্দিন, ইসলামী ঐক্যজোটের এম এ মতিন চৌধুরী, জামায়াতের মাওলানা ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক, স্বতন্ত্র প্রার্থী ফয়জুল মুনীর চৌধুরী, বিএনপি নেতা শরীফ আহমদ লস্কর।
সিলেট-৬ আসন (বিয়ানীবাজার, গোলাপগঞ্জ) : আওয়ামী লীগের নুরুল ইসলাম নাহিদ, বিএনপির ফয়সল আহমদ চৌধুরী ও হেলাল খান, বিকল্পধারার সমশের মবীন চৌধুরী, জামায়াতের মাওলানা হাবিবুর রহমান, ইসলামী ঐক্যজোটে এডভোকেট মাওলানা আব্দুর রকিব, স্বতন্ত্র প্রার্থী জাহাঙ্গীর হোসেন মিয়া মিলু।
সিলেট জেলা রিটানির্ং কর্মকর্তা কাজী এমদাদুল ইসলামের কাছে একে একে তারা মনোনয়নপত্র জমা দেন। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটের প্রার্থী ড. এ কে আবদুল মোমেন পরিবারের সদস্য ও দলের নেতাদের নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিতে আসেন। এসময় তার বড় ভাই অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতও তার সাথে ছিলেন।
ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র বাছাই হবে ২ ডিসেম্বর। বৈধ প্রার্থীরা আগামী ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত তাদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করতে পারবেন। পরদিন ১০ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দ করা হবে। প্রার্থীরা ১১ ডিসেম্বর থেকেই প্রচারে নামতে পারবেন। ভোটগ্রহণ আগামী ৩০ ডিসেম্বর।
সিলেট সদর উপজেলা এবং সিটি কর্পোরেশন এলাকা নিয়ে গঠিত সিলেট-১ আসন। এ আসনটি মর্যাদাপূর্ণ আসন হিসেবে সব রাজনৈতিক দলের কাছে বিবেচিত। মিথ রয়েছে- এ আসনে যে দলের প্রার্থী বিজয়ী হন; সেই দল সরকার গঠন করে। স্বাধীনতা পরবর্তী সবকটি নির্বাচনেই এর প্রতিফলনও ঘটেছে।
সর্বশেষ দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেট-১ আসন থেকে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। এর আগে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি সাবেক অর্থমন্ত্রী এম. সাইফুর রহমানকে পরাজিত করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। পরপর দুই মেয়াদে তিনি সরকারের অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন।
বার্তা বিভাগ প্রধান