কেবল রোহিঙ্গা নয়, রাখাইনে সংঘাতের কারণে ঘর ছাড়তে বাধ্য হচ্ছে অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর মানুষেরাও। মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম ইরাবতী খবর দিয়েছে, গত অক্টোবরে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও বিদ্রোহী সংগঠন আরাকান আর্মির মধ্যে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ার পর রাজ্যের দেড় হাজারের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। স্থানীয় সিভিল সোসাইটি গ্রুপগুলোকে উদ্ধৃত করে ইরাবতী এমন এক সময় এই পরিসংখ্যান জানালো, যখন মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ রাখাইনে নতুন করে সেনাবাহিনীর ‘শুদ্ধি অভিযান’ শুরুর ঘোষণা দিয়েছে। এদিকে ক’দিন আগে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক বিশেষ অনুসন্ধানে সেখানে ‘বৌদ্ধ গ্রাম’ নির্মাণ প্রকল্পের অগ্রগতির খবর দেওয়া হয়েছে। গত বছরের ২৫ আগস্ট রাখাইনের কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার পর পূর্ব-পরিকল্পিত ও কাঠামোবদ্ধ সহিংসতা জোরালো করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। হত্যা-ধর্ষণসহ বিভিন্ন ধারার সহিংসতা ও নিপীড়ন থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রায় ৭ লাখ মানুষ। তারা কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নিয়েছে। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে বাংলাদেশের সঙ্গে মিয়ানমার প্রত্যাবাসন চুক্তি করলেও এখনও তা বাস্তবায়িত হয়নি। পালিয়ে আসা ৭ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গার মধ্যে কেবল ৮ হাজার জনের তালিকা হয়েছে প্রত্যাবাসনের জন্য। মিয়ানমার প্রত্যাবাসনের অনুকূল পরিবেশ তৈরি করতে না পারায় ফিরে যেতে রাজি হয়নি প্রত্যাবাসন তালিকায় থাকা রোহিঙ্গারাও। ন্যায়বিচার, নাগরিকত্ব এবং নিজ গ্রামে ফেরা ও ভূমির অধিকার ফিরে পাওয়ার দাবি পূরণের আগে মিয়ানমার যেতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে তারা। এবার মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সঙ্গে সেখানকার বিদ্রোহী সংগঠনগুলোর সংঘাতে অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর মানুষের ঘরহারা হওয়ার খবর জানা গেল। ইরাবতীর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে রাখাইনের তিন শহরে নিজেদের বসতির কাছাকাছি এলাকায় গোলা হামলার পর ঘর-বাড়ি ছেড়ে পালাতে বাধ্য হচ্ছে বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর মানুষ।
বার্তা বিভাগ প্রধান