ঝালকাঠির রাজাপুরে জমি নিয়ে বিরোধ থাকায় প্রতিপক্ষরা কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে দুই মাস ধরে এক দিনমজুরের পরিবারকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ঘটনায় দিনমজুর জালাল হাওলাদার রাজাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানা পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ করেও কোন সুফল পায়নি।
জানা যায়, উপজেলার গালুয়া পাকা মসজিদ এলাকায় দিনমজুর জালাল হাওলাদারের বাড়ি। জমি নিয়ে একই এলাকার প্রভাবশালী প্রতিপক্ষ মোয়াজ্জেম মাস্টার ও মহারাজ খানের সঙ্গে বিরোধ চলছিল তাদের। প্রতিপক্ষরা লোকজন নিয়ে অক্টোবর মাসের প্রথম দিকে জালালের বাড়ি থেকে বের হওয়ার রাস্তায় পিলার পুতে কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে দেয়। এতে একমাত্র চলাচলের পথটি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। জালাল ও তার স্ত্রী হেপি বেগম এ কাজে বাধা দিলে প্রতিপক্ষরা তাদের মারধর করে। তারা নানাভাবে হুমকি দেয় জালালের পরিবারকে।
জালালের শাশুড়ি লিলি বেগম জানান, কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ার পর রাজাপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে পরের দিন সকালে দুই পুলিশ তদন্তে গেলেও কোন ব্যবস্থা নেয়নি। পরে নিরুপায় হয়ে তিনি ৬ অক্টোবর সকালে ইউএনও আফরোজা বেগমের পারুলের কাছে অভিযোগ দেন।
তিনি গালুয়া ইউনিয়ন ভূমি উপসহকারী কর্মকর্তা বিজন বিহারী হালদারকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। ২০ নভেম্বর তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয় ইউএনওর কাছে। প্রতিবেদনে ঘর থেকে বের হওয়ার একমাত্র পথ কাটা তার দিয়ে বন্ধের কথা উল্লেখ করা হলেও অজ্ঞাত কারনে মোয়াজ্জেম ও মহারাজের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি ইউএনও।
দিনমজুর জালাল হাওলদার বলেন, ঘটনার পর থেকে আমার স্ত্রীকে হুমকি দিচ্ছে প্রতিপক্ষরা। তাদের হুমকি ও ভয়ে চার সন্তান রেখে বাড়ি ছেড়ে বাবার বাড়িতে আছে স্ত্রী। বর্তমানে স্কুল পড়ুয়া মেয়ে নিপা ও তন্নি ক্লাস করতে পারছে না। শিশুদের নিয়ে মানবেতর জীবনযাবন করছি। আমরা এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। রিকশা চালিয়ে রোজগার করতাম কিন্তু চলাচলের পথ বন্ধ থাকায় রাতে রিকশা বাড়িতে নিতে পারছি না।
জানতে চাইলে অভিযুক্ত মহারাজ খান বলেন, বাড়ির পাশে তাদের কোনো জায়গা নেই। আমরা মসজিদের সঙ্গেই ইমামের থাকার জন্য ঘর করবো, তাই কাঁটাতার ও পিলার দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে রাজাপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ইউনুচ মোল্লা বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে উভয় পক্ষকে সালিশ মানিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হলেও তা সফল হয়নি। আর পরে কোনো পক্ষই আসেনি।
রাজাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফরোজা বেগম পারুল বলেন, মসজিদ কমিটির আপত্তি থাকায় ওই পরিবারটিকে বিকল্প পথ দেওয়া হয়েছে। তাতে যদি তারা অনিচ্ছুক বা কোনো আপত্তি থাকে তবে সার্ভেয়ার পাঠিয়ে খোঁজ-খবর নেওয়া হবে। তাদের চলাচলালের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করা হবে।
নির্বাহী সম্পাদক