চট্টগ্রাম ব্যুরো: মোবাইল ফোনে পর পুরুষের সাথে কথা বলার অপরাধে নিজের স্ত্রী সুমি ইসলাম (২০)কে গলাকেটে জবাই করে হত্যা করেছে জাহিদ হোসেন রাজু (৩৭) নামে এক পাষন্ড যুবক। হত্যার পর মস্তক বিচ্ছিন্ন মরদেহ বস্তায় ভরে নালায় ফেলে এবং খন্ডিত মস্তক ফেলে ঘটনাস্থল থেকে অন্তত ৩/৪ কিলোমিটার দুরে একটি কবরস্থানে। সোমবার (২৯ অক্টোবর) ভোররাতে বেপারীপাড়া পইট্টাদীঘির পশ্চিম পাশে কবরস্থানের ঝোপের ভেতর থেকে ওই নারীর মাথা উদ্ধার করা হয় বলে জানান হালিশহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম ওবায়দুল হক। তিনি বলেন, মস্তকবিহীন মরদেহ উদ্ধারের পর অনুসন্ধ্যানে নামে এবং সন্দেহভাজন খুনি হিসেবে স্বামী জাহিদ হোসেন রাজুকে আটক করে। পরে এ খুনের সাথে জড়িত আব্দুল জলিল এবং ফেরদৌসি নামে আরো ২ জনকে গ্রেফতার করা হয়। আটক রাজু খাগাছড়ি জেলার মাটিরাঙ্গা থানার কাজী পাড়া গ্রামের হারুনুর রশিদের ছেলে। বর্তমানে চট্টগ্রাম মহানগরীর হালিশহর থানার ছোটপুল, ইসলাম হাজীর ব্রীকফিল্ড, নাবালক মিয়ার বাড়ীতে ভাড়া থাকতেন।
জাহিদ পুলিশের কাছে দাবি করেছে, দাম্পত্য কলহ থেকে এ হত্যাকান্ড ঘটিয়েছেন তিনি। বিয়ের পর থেকে সুমির সঙ্গে জাহিদের বনিবনা হচ্ছিল না । বিভিন্ন জনের সঙ্গে সুমির মেলামেশা নিয়ে প্রায়ই তাদের মধ্যে ঝগড়া হতো।
গ্রেফতার জাহিদের বরাত দিয়ে হালিশহর থানা পুলিশ জানিয়েছে, গত দেড় বছর আগে তাদের বিয়ে হয়। সিডিএ আবাসিক এলাকায় একটি বুটিক হাউজে সুমি চাকরি করার সুবাধে জাহিদ ও সুমি ছোটপুল এলাকায় একটি বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতেন। তবে বিয়ের পর থেকে তারা দুজনের মধ্যে পারিবারিক কলহ লেগেই ছিলো। জাহিদের দাবি তার স্ত্রী সুমি বিভিন্ন জনের সাথে মেলামেশা করায় বাঁধা হয়ে দাড়ালে তাদের মধ্যে তুমুল ঝগড়া হয়। এক পর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে এ হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে বলে দাবি জাহিদের।
অজ্ঞাত নারীর লাশ উদ্ধারের পর হত্যার রহস্য উদঘাটন উপলক্ষে আজ সোমবার সিএমপির পক্ষ থেকে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয় নগরীর দামপাড়া পুলিশ লাইনস্থ সিএমপি কার্যালয়ে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গ্রেফতারের পর রাজু হত্যার দায় স্বীকার করে। জানায়-তার স্ত্রী মৃত সুমি ইসলাম (২০) প্রায় সময় বিভিন্ন ছেলেদের সাথে মোবাইল ফোনে কথাবার্তা বলত। এ নিয়ে তাদের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া ঝাটি হয়। তারই জের ধরে গত ২৬ অক্টোবর রাত ০১টা ৪৫ মিনিটের সময় রাজু তার পরিচিত আব্দুল জলিল এবং ফেরদৌসিকে নিয়ে পরিকল্পিতভাবে সুমি ইসলাম (২০)কে প্রথমে লায়লনের রশি দিয়ে শ্বাসরোধ করে এবং পরে জবাই হত্যা করে। ধারালো ছোরা দিয়ে দেহ হতে মাথা বিচ্ছিন্ন করা হয় এবং লাশ গোপন করার জন্য ডবলমুরিং থানাধীন বেপারী পাড়াস্থ পইট্টা দীঘির পশ্চিম পাড় কবরস্থানের দক্ষিণ পাশে ঝোপের মধ্যে মস্তকটি ফেলে দেয় এবং মস্তক বিহীন দেহটি হালিশহর থানাধীন ছোটপুল ইসলাম মিয়া ব্রীকফিল্ডের ৩নং রোডস্থ খান সাহেব এবং জাবেদ এর বাড়ীর মাঝখানে নালার মধ্যে বস্তায় ঢুকিয়ে বস্তার মুখ রশি দ্বারা বেঁধে নালায় ফেলে দেয়।
নির্বাহী সম্পাদক