বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পকে অস্থিতিশীল করতে শ্রমিক সংগঠনের ব্যানারে একটি মহল ষড়যন্ত্র করছে বলে মনে করে বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্ততকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)। সোমবার রাজধানীতে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিজিএমইএ সভাপতি সিদ্দকুর রহমান এসব বলেন। সক্ষমতা অনুযায়ী দেশের পোশাক শিল্পে কর্মরতদের সর্বোচ্চ সুবিধা দেওয়া হয়েছে বলে মনে করেন তিনি।”
সিদ্দিকুর রহমান বলেন, সম্প্রতি ‘জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন’ নামে একটি সংগঠন পোশাক শিল্পে শ্রমিকদের নতুন মজুরী বোর্ডের বিষয়ে আংশিক ভুল তথ্য দিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছে। তাদের দেওয়া লিফলেট দেখলেই বুঝা যায় এরা কখনো পোশাক শিল্পের সাথে জড়িত ছিল না। অন্য কারো স্বার্থ হাসিলের জন্য এমন কাজ করছে। বিজিএমইএ নিজ উদ্যোগে সরকারের সাথে আলোচনা করে বিগত ৮ বছরে এই শিল্পের শ্রমিকদের ৩৮১ দশমিক ৩৫ শতাংশ বেতন বৃদ্ধি করেছে। অথচ এর বিপরীতে কেবল যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে গত ৪ বছরে পণ্যের মূল্য কমেছে ১১ দশমিক ৭২ শতাংশ। একই সময়ে পণ্যের উৎপাদন খরচ বেড়েছে ২৯ দশমিক ৭২ শতাংশ।”
তিনি আরো জানান, যেখানে বিশ্ববাজারে প্রতি বছর পণ্যের চাহিদা ও মূল্য কমছে সেখানে দেশের শ্রমিকদের প্রাতি বছর ৫ শতাংশ হারে বেতন বৃদ্ধি হচ্ছে। রানা প্লাজা ধস পরবর্তী সময়ে এই শিল্পে বড় ধরণের পরিবর্তন আসে। প্রতিটি কারখানাকে রিমেডিয়েশন বাবদ ৫ থেকে ২০ কোটি টাকা খরচ করতে হচ্ছে। যা কেবল উদ্যোক্তাদেরকেই বহন করতে হচ্ছে। বিগত ৫ বছরে অন্তত ১ হাজার ২শ কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে।”
বিজিএমইএর সভাপতি আরো বলেন, তাদের লক্ষ্য ছিল ন্যূনতম মজুরী ৭ হাজার টাকা করবে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর অনুরোধে সেটা ৮ হাজার টাকা করেছেন। যেটা তাদের সক্ষমতার ক্ষেত্রে কষ্টসাধ্য। ন্যূনতম মজুরী এর বেশি করা হলে অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে যাবে। বেকার হয়ে পড়বে লাখো শ্রমিক। তাই যারা মিথ্যা প্রপাগান্ডা ছড়াচ্ছে তাদের কথায় কান দেওয়ার আহবান জানান তিনি।”
উল্লেখ্য, গত ১৩ সেপ্টেম্বর পোশাক শিল্পের শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ৮ হাজার টাকা নির্ধারণ করে সরকার। এর মধ্যে বেসিক ৪ হাজার ১০০ টাকা, বাড়ি ভাড়া ২ হাজার ৫০ টাকা, চিকিৎসা ভাতা ৬০০ টাকা, যাতায়াত ভাতা ৩৫০ টাকা, খাদ্য ভাতা ৯০০ টাকা। তবে ২০১৪ সালের ঘোষিত মজুরী বোর্ডে মোট বেতনের ৬৮ শতাংশ বেসিক থাকলেও এবারের মজুরী বোর্ডে ৫১ শতাংশ করা হয়েছে। পোশাক শিল্পের শ্রমিকরা বেতন বৃদ্ধিসহ সকল সুযোগ-সুবিধা বেসিক বেতনের আলো ভোগ করে থাকে।”
মজুরী বোর্ড ঘোষণার আগে শ্রমিকপক্ষ ১৬ হাজার টাকা ন্যূনতম বেতন দাবি করে আর বিজিএমইএ ৬ হাজার ৩শো ৬০ টাকা করার প্রস্তাব দেয়। সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি) তাদের গবেষণায় এই শিল্পে সর্বনিম্ম মজুরী ১০ হাজার টকা করার সুপারিশ করে।”