শুদ্ধবার্তাটুয়েন্টিফোর:
সিলেট নগরে পৃথক দুটি স্থানে বনবিভাগের কর্মকর্তাদের নিয়ে অতিথি পাখি নিধন ও বিক্রি বন্ধে অভিযান চালিয়েছেন পরিবেশকর্মীরা। মঙ্গলবার (৯ অক্টোবর) দুপুরে অভিযানকালে তারা দুজন পাখি বিক্রেতার কাছ থেকে বেশ কয়েকটি পাখি উদ্ধার করে অবমুক্ত করেন। পাখি অবমুক্তকরণকালে সিলেটের সিভিল সার্জন ডা. হিমাংশু লাল রায় বলেন, মানুষের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে হলে আমাদের পরিবেশ প্রকৃতি জীববৈচিত্রকে রক্ষা করতে হবে। তিনি বলেন, আমার বাসার কামরাঙ্গা গাছের ফল আমি খাই না। কারণ পাখি ও কীটপতঙ্গ যাতে এগুলো খেয়ে বাঁচতে পারে। আমাদের পরিবেশ-প্রতিবেশ রক্ষায় পাখির অবদান আছে। তাই আমাদের নিজেদের প্রয়োজনে পাখি নিধন না করে এগুলোকে রক্ষায় আমাদের আরও সচেতন হতে হবে। পাখি বিক্রি ও খাওয়া বন্ধ রাখতে হবে। এসময় উপস্থিত ছিলেন, বাপা সিলেট কমিটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল করিম কিম, ভূমি সন্তানের সমন্বয়ক আশরাফুল কবীর, পরিবেশকর্মী দ্বোহা চৌধুরী ও বদরুল ইসলাম চৌধুরী প্রমুখ। জানা গেছে, নগরের জিন্দাবাজার এলাকায় পরিবেশকর্মী দ্বোহা চৌধুরী একজন পাখি বিক্রেতার কাছে ৪টি দেখতে পেয়ে ফোন করেন বাপা সিলেট কমিটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল করিম কিমকে। কিম পাখি বিক্রেতাকে নজরবন্দি রাখতে বলে কিছু সময়ের মধ্যেই দুই জন বন কর্মকর্তাকে সাথে নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছেন। ঘটনাস্থল জিন্দাবাজার এলাকার রাজা ম্যানশন মার্কেট। অবস্থা বেগতিক দেখে পাখি বিক্রেতা স্থানীয় মানুষদের অনুনয় করে ক্ষমা প্রার্থনা করে ভবিষ্যতে পাখি বিক্রি না করার মুচলেকা দিয়ে রক্ষা পায়। এ সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশবাদী সংগঠন ভূমি সন্তানের সমন্বয়ক আশরাফুল কবীর। জিন্দাবাজারে আটককৃত টিয়া পাখিগুলো নিয়ে যাওয়া হয় টিলাগড় ইকো পার্কে। সেখানে পাখিগুলো অবমুক্ত করেন পরিবেশকর্মী আব্দুল করিম কিম, দ্বোহা চৌধুরী ও বদরুল ইসলাম চৌধুরী। এসময় টিলাগড় বন বিট কর্মকর্তা চয়নব্রত চৌধুরী এবং বনরক্ষী আবু তাহের, আব্দুস সাত্তার, আবু সাঈদ চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। উপস্থিত বন কর্মকর্তারা পাখিগুলোর মধ্যে ২টি লেজকাটা টিয়া ও ২টি চন্দনা বলে চিহ্নিত করেন । টিলাগড় ইকো পার্কে পাখি অবমুক্ত করে ফেরার পথে আব্দুল করিম কিম-এর কাছে আবারো খবর আসে পাখি বিক্রয়ের। ছাত্র ইউনিয়ন কর্মী নিখিল চন্দ্র ও মৃত্যুঞ্জয় দে চৌহাট্টা সিভিল সার্জন অফিসের সামনের রাস্তায় পাখি বিক্রি করতে দেখে বিক্রেতাকে আটকে রাখে। পূর্বে জিন্দাবাজারে পাখি আটকের সময় নিখিল ও মৃত্যুঞ্জয় সেখানে উপস্থিত ছিলেন। তাই তাঁদের মধ্যে পাখি বাঁচানোর সচেতনতা তৈরি হয়। তাঁদের সংবাদে বন কর্মকর্তাদের নিয়ে আব্দুল করিম কিম সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সামনে এসে তিনটি চন্দনা পাখি বিক্রেতার কাছ থেকে উদ্ধার করেন। পাখিগুলো নিয়ে সিভিল সার্জনের কার্যালয়ের টিলায় উপস্থিত হয়ে সিলেটের সিভিল সার্জন ডা. হিমাংশু লাল রায়ের উপস্থিতিতে পাখিগুলো মুক্ত আকাশে ছেড়ে দেয়া হয়।

বার্তা বিভাগ প্রধান