আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর অং সান সুচি বলেছেন, রাখাইনে সৃষ্ট রোহিঙ্গা সংকট হয়ত আরো ভালোভাবে সামাল দেয়া যেত।
রাখাইন রাজ্যে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর মিয়ানমার সেনাবাহিনীর দমন অভিযানের এক বছরের বেশি সময় পর তিনি একথা বললেন।
ভিয়েতনামের রাজধানী হ্যানয়ে বৃহস্পতিবার আসিয়ান নিয়ে ওয়ার্ল্ড ইকনোমিক ফোরামে সুচি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, এখন ভাবলে মনে হয়, কিছু উপায় অবশ্যই ছিল। ঘটনার পরবর্তী বিষয়গুলো বিবেচনা করে এই সংকট আরও ভালোভাবে সামাল দেওয়া যেত।
তিনি আরো বলেন, আমরা বিশ্বাস করি দীর্ঘমেয়াদে নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে আইনে স্বচ্ছতা প্রয়োজন। আমরা নির্ধারণ করে রাখতে পারি না যে আইনের মাধ্যমে কাকে সুরক্ষা দেয়া হবে।
গত বছরের আগস্টে নিরাপত্তা বাহিনীর তল্লাশি চৌকিতে হামলার পর রাখাইনে পূর্ব পরিকল্পিত ও কাঠামোবদ্ধ সহিংসতা জোরালো করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। সেই সঙ্গে শুরু হয় এশিয়ার এ অঞ্চলে সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে বড় শরণার্থী সঙ্কট। গত এক বছরে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছে।
রোহিঙ্গা সংকট ও রোহিঙ্গা গণহত্যার তথ্য সংগ্রহের সময় আটক বার্তা সংস্থা রয়টার্সের দুই সাংবাদিককে কারাদণ্ড দেয়া নিয়ে নীরব থাকায় বিশ্বজুড়ে ব্যাপক সমালোচনার সম্মুখীন হন শান্তিতে নোবেল জয়ী সুচি।
তবে ওই দুই সাংবাদিক ওয়া লোন (৩২) এবং কিয়াও সো ও’কে (২৮) দণ্ড দেয়ার বিষয়টি সমর্থন করে সুচি বলেন, তারা আইন ভঙ্গ করেছেন এবং তাদের দোষী সাব্যস্তের বিষয়টি মত প্রকাশের স্বাধীনতা সাথে সম্পর্কিত নয়। এটি রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা আইন লঙ্ঘনের সাথে সম্পর্কিত।
গত ৩ সেপ্টেম্বর ওই দুই সাংবাদিককে রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে সাত বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে মিয়ানমারের এক আদালত।
সুচি বলেন, তারা সাংবাদিক বলে তাদের কারাদণ্ড দেয়া হয়নি। তাদের শাস্তি দেয়া হয়েছে কারণ আদালত সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে তারা রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা আইন লঙ্ঘন করেছেন।
জাতিসংঘের একটি স্বাধীন তথ্যানুসন্ধান মিশনের প্রতিবেদনে সম্প্রতি বলা হয়, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ‘গণহত্যার অভিপ্রায়’ থেকেই রাখাইনের অভিযানে রোহিঙ্গা মুসলমানদের নির্বিচারে হত্যা, ধর্ষণের মত ঘটনা ঘটিয়েছে।
ওই প্রতিবেদনে মিয়ানমারের বেসামরিক সর্বোচ্চ নেতা অং সান সুচিরও সমালোচনা করে বলা হয়, রোহিঙ্গা নিধনযজ্ঞ ঠেকাতে নিজের নৈতিক অবস্থান ও রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা প্রয়োগ করতে ব্যর্থ হয়েছেন তিনি। সেই প্রতিবেদন ধরে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের তৎকালীন প্রধান রাদ আল হুসেন বলেছিলেন, রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে ব্যর্থ হওয়ায় সুচির পদত্যাগ করা উচিত ছিল।
সূত্র: বিবিসি ও রয়টার্স
নির্বাহী সম্পাদক