ডেস্ক নিউজ : পৃথিবীর জনসংখ্যার একশ কোটি মানুষ প্রতিদিন খোলা আকাশের নিচে ঘুমাতে যায়। মূলত বাড়ি তৈরির জায়গা, বাড়ি তৈরির খরচ কিংবা প্রযুক্তিগত সমস্যার কারণেই বিপুলসংখ্যক মানুষের মাথা গোঁজার ঠাঁই হয় না। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের দুটি কোম্পানি যৌথভাবে এমন এক প্রযুক্তি নিয়ে এসেছেন যা সস্তায় এবং খুব কম জায়গার মধ্যে বাড়ি তৈরির ব্যবস্থা করে দেবে। ৩৮০ বর্গফুটের একতলা একটি বাড়ি তৈরি করতে সময় লাগবে মাত্র দুই দিন। আর খরচও খুব একটা বেশি নয়, ১০ হাজার মার্কিন ডলার। স্বল্প সময়ের মধ্যে অত্যন্ত নিখুঁত আর নান্দনিক মডেলের বাড়ি তৈরি করতে তারা থ্রিডি প্রিন্টিং প্রযুক্তি কাজে লাগানোর পথ খুঁজে বের করেছেন।
থ্রিডি প্রযুক্তিতে তৈরি করা বাড়িটি শুধু মাথা গোঁজার মতোই হবে না সত্যিকার হয়ে উঠবে সুখের ঠিকানা। মূলত উন্নয়নশীল দেশের সব মানুষের জন্য ঘর নিশ্চিত করার লক্ষ্যেই এই প্রকল্পটি কাজে লাগাতে চান। নির্মাণ প্রতিষ্ঠান আইকন এবং অলাভজনক সংস্থা নিউ স্টোরি যৌথভাবে বাস্তবায়ন করতে চান ৩৮০ বর্গফুটের ক্ষুদে বাড়ির স্বপ্ন। এই বাড়ির নিরাপত্তার দিক নিয়েও ভাবতে হবে না বাড়ির মালিককে। সেই বিষয়গুলো মাথায় রেখেই এই প্রযুক্তি তৈরি করা হয়েছে।
থ্রিডি প্রিন্টিংয়ে বাড়ি তৈরির সম্পর্কে বলতে গিয়ে প্রতিষ্ঠান দুটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, থ্রিডি প্রিন্টিংয়ের ছোট মেশিনে যেভাবে কোনো কিছু পরতে পরতে প্রিন্ট করা হয় এই বাড়ির দেয়াল এবং ছাদও তৈরি করা হবে সেইভাবে। পার্থক্য শুধু থ্রিডি প্রিন্টারের মাধ্যমে বাড়ি তৈরি করার ক্ষেত্রে কংক্রিটের জায়গায় অন্য এক ধরনের উপাদান ব্যবহার করা হবে। আইকনের প্রধান নির্বাহী বলেন, এই মেশিনের সাহায্যে আমরা সর্বোচ্চ ১১ ফুট উচ্চতার বাড়ি প্রিন্ট করতে সক্ষম।
আপাতত ৩৮০ বর্গফুটের বাড়ির জন্য ১০ হাজার ডলার খরচের হিসেব দিলেও প্রতিষ্ঠান দুটি আশা করছে এই বাড়ির আয়তন ৬৫০ এ নিয়ে গেলে খরচ তুলনামূলকভাবে কমে আসবে। বাড়ি তৈরির জন্য একসঙ্গে বেশি পরিমাণ কাঁচামাল সংগ্রহ করতে পারলে এবং থ্রিডি প্রিন্টিং মেশিনের অগ্রগতির ফলে খরচ কমে আসলে বাড়ি তৈরির খরচও অনেক কমে আসবে। তাদের আশা, আগামী কয়েক বছরের মধ্যে এর থেকেও কম টাকায় মানুষের জন্য বাড়ি তৈরি করতে পারবেন তারা।
এ বছরের শেষ দিকে পরীক্ষামূলকভাবে এল সালভাদোরে ১০০টি বাড়ি তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। নিউ স্টোরি’র সহ প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রধান নির্বাহী ব্রেট হেগলার বলেন, এল সালভাদোরে যদি সব কিছু পরিকল্পনামাফিক হয় তাহলে তা বাড়ি নির্মাণ শিল্পে যুগান্তকারী পরিবর্তন ঘটাবে। এই প্রযুক্তিকে কাজে লাগাতে পারলে দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার মানুষের জন্য দ্রুত ঘর নির্মাণও করা সম্ভব।