Home » বাজপেয়ির শেষ বিদায়ে শোকার্ত মানুষের ঢল

বাজপেয়ির শেষ বিদায়ে শোকার্ত মানুষের ঢল

ডেস্ক নিউজ:

ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়ির শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে। আজ শুক্রবার বিকেলে দিল্লিতে রাষ্ট্রীয় স্মৃতিস্থল শ্মশানে পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। শেষকৃত্যানুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং, কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীসহ বর্তমান মন্ত্রিসভার সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, ভুটানের রাজা জিগমে খেসর নামগিয়াল ওয়াংচুক, আফগানিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট হামিদ করজাই, শ্রীলঙ্কার পররাষ্ট্রমন্ত্রী লক্ষণ কিরিয়েল্লা শেষকৃত্যানুষ্ঠানে যোগ দেন। শুক্রবার সকালে নয়াদিল্লির বাসভবন থেকে অটল বিহারি বাজপেয়ির মরদেহ নেওয়া হয় বিজেপির সদর দপ্তরে। সেখানে তাঁকে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়। এরপরই সাধারণ মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য মরদেহ রাখা হয়। প্রয়াত নেতাকে দলীয় দপ্তরে শ্রদ্ধা জানান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, বিজেপির সভাপতি অমিত শাহ, বিজেপির শীর্ষ নেতা রাজনাথ সিংহ অনন্তকুমার, সুরেশ প্রভুসহ অন্যরা। সেখান থেকে শোকযাত্রা পৌঁছায় রাজঘাটের কাছে রাষ্ট্রীয় স্মৃতিস্থলে। শেষযাত্রায় তাঁকে শ্রদ্ধা জানাতে দিল্লির রাস্তায় বিজেপির কর্মী, সমর্থক ও হাজার-হাজার মানুষের ঢল নামে। বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় ৫টা ৫ মিনিটে দিল্লির একটি হাসপাতালে শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন অটল বিহারি বাজপেয়ি। তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৩ বছর। মৃত্যুর আগে তাঁর শারীরিক অবস্থার মারাত্মক অবনতি ঘটে। তাঁকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছিল। ভারতের তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বাজপেয়ি অনেক দিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন। বার্ধক্যজনিত সমস্যাসহ তাঁর শারীরিক বিভিন্ন জটিলতা বেড়ে যাওয়ায় তাঁকে ৯ সপ্তাহ আগে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ১৯৯৬, ১৯৯৮ ও ১৯৯৯ সালে তিনবার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছিলেন অটল বিহারি বাজপেয়ি। প্রথম দফায় ১৩ দিন, দ্বিতীয় দফায় ১৩ মাস আর তৃতীয় দফায় পূর্ণ মেয়াদ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেশের দায়িত্বভার সামলেছেন তিনি। ২০১৪ সালে মোদির সরকার ক্ষমতায় আসার পরে বাজপেয়িকে ভারতরত্ন সম্মাননা দেওয়া হয়। একাধারে রাজনীতিক, দুর্দান্ত সাংসদ, কবি ও অসাধারণ বাগ্মী বাজপেয়ির জন্ম ১৯২৪ সালে গোয়ালিয়রে। বাবা কৃষ্ণবিহারী বাজপেয়ি ও মা কৃষ্ণা দেবী। ১৯৭৭ সালে জনতা পার্টি সরকারের মন্ত্রী হন তিনি। কিন্তু পরে সংঘপন্থী অন্য নেতাদের সঙ্গে বাজপেয়িও জনতা পার্টি ছেড়ে বেরিয়ে আসেন, গঠিত হয় ভারতীয় জনতা পার্টি। ১৯৮০ সালে প্রতিষ্ঠিত ভারতীয় জনতা পার্টির প্রথম সভাপতিও হন বাজপেয়ি। এর ১৬ বছর পরে প্রথমবার দেশের প্রধানমন্ত্রী হন। ২০০৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট পরাজিত হয়। পরাজয়ের দায় নিজের কাঁধে নিয়ে প্রধান বিরোধী দলনেতার পদ নেননি তিনি। পরে নিজেকে ক্রমশ সক্রিয় রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে নেন। বাজপেয়ির প্রয়াণে সাত দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। বাতিল করা হয়েছে সব সরকারি অনুষ্ঠান।

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *