Home » ট্রাফিক সপ্তাহে শিক্ষার্থীরা কাজ করতে চাইলে স্বাগত জানাবো ডিএমপি কমিশনার

ট্রাফিক সপ্তাহে শিক্ষার্থীরা কাজ করতে চাইলে স্বাগত জানাবো ডিএমপি কমিশনার

ডেস্ক নিউজ:  নিরাপদ সড়কের দাবিতে চলমান আন্দোলনে অংশ নেওয়া ছাত্রছাত্রীরা অবরোধ ও বিক্ষোভের পাশাপাশি রাজপথে ট্রাফিক শৃঙ্খলা বজায় রাখার কাজ করছে। কিছু ক্ষেত্রে তারা দৃষ্টান্তও স্থাপন করেছে। পুলিশের ঘোষণা করা ট্রাফিক সপ্তাহে ছাত্রদের সহায়তা নেওয়া হবে? শনিবার (৪ আগস্ট) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপি কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া এ প্রশ্নের উত্তরে বলেন, ‘আপনারা দেখছেন, ছাত্ররা যেখানেই গাড়ির কাগজ চেক করছে, সেখানে পুলিশের পর্যাপ্ত সহযোগিতা রয়েছে। আমরা অতীতেও স্কাউট আর গার্লস গাইডের সহায়তা নিয়েছি। তারা যদি ট্রাফিক সপ্তাহে আমাদের পাশাপাশি কাজ করতে চায়, আমরা স্বাগত জানাবো।’ রবিবার (৫ আগস্ট) থেকে সারাদেশে ‘ট্রাফিক সপ্তাহ’ পালন করবে বাংলাদেশ পুলিশ। শনিবারের সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন ডিএমপি কমিশনার। ট্রাফিক আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। ট্রাফিক সপ্তাহ প্রসঙ্গে মো. আছাদুজ্জামান মিয়ার ভাষ্য, ‘শিক্ষার্থীদের উদ্যোগগুলো ভেবে আমরা আগামীকাল রবিবার থেকে সারাদেশে ট্রাফিক সপ্তাহ ঘোষণা করেছি। সারাদেশে তা পালন করা হবে। ফিটনেসবিহীন গাড়ি, লাইসেন্স ছাড়া ড্রাইভিং কিংবা নবায়ন না করা, হেলপার কর্তৃক ড্রাইভিং অর্থাৎ ট্রাফিক আইনের কোনও ব্যত্যয় ঘটলে আমরা কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। মোটরসাইকেলে তিনজন চড়া, সিগন্যাল ভায়োলেশন করা, উল্টোপথে যাওয়া ও প্রভাবশালীদের আইন না মানার যে অপচেষ্টা, সেগুলোর বিরুদ্ধে আমরা এই ট্রাফিক সপ্তাহে উদ্যোগ নেবো।’ জনগণকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘আমাদের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো আইন না মানার সংস্কৃতি। আমরা ঢাকা শহরের কোনও কোনও এলাকায় গেলে খুব ট্রাফিক আইন মানি। কিন্তু বাইরে এলে আর মানি না। একই মানুষ লন্ডন বা টোকিওতে গেলে একটা ময়লা কোথাও ফেলে না। নির্দিষ্ট ডাস্টবিন না পাওয়া পর্যন্ত হাতে নিয়ে ঘোরে। আর ঢাকা শহরে আমরা যত্রতত্র ময়লা ফেলে দেই। ট্রাফিক আইন মানার সংস্কৃতি যদি আমরা চালু না করি, আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে সহযোগিতা না করি, তাহলে এই অবস্থার উত্তরণ অসম্ভব হয়ে যাবে। আসুন আমরা বিশৃঙ্খলা নয়, শৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে এই অবস্থা থেকে উত্তরণ করি, সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনি। ট্রাফিক আইন মেনে চলতে সবাইকে উদ্ধুদ্ধ করি।’ ডিএমপি কমিশনারের মন্তব্য, ‘রাস্তায় ছাত্রছাত্রীদের প্রতিবন্ধকতার কারণে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হচ্ছে। এটি কারও কাম্য নয়। কর্মজীবী মানুষ বিভিন্নভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছে। কর্মস্থলে আসা-যাওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে। সাধারণ ছাত্ররা যে অভিপ্রায় নিয়ে মাঠে নেমেছে সেজন্য তাদের স্যালুট করি। আমরা তাদের ধন্যবাদ জানাই। আমাদের যে কাজটা অনেক আগে করার কথা ছিল তারা সেই কাজটি করতে একটি নৈতিক ভিত্তির ওপর দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, ছাত্রছাত্রীরা কোনোভাবেই আমাদের প্রতিপক্ষ নয়, বরং আমাদের পরিপূরক। ভবিষ্যতে ট্রাফিক আইন কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করার সাহস তাদের কাছ থেকে পেয়েছি আমরা।’ দুই শিক্ষার্থীকে বাসচাপায় ‘হত্যার’ বিচার ও নিরাপদ সড়ক চাইসহ ৯ দফা দাবিতে শনিবার (৪ আগস্ট) ষষ্ঠ দিনের মতো রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ করছে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা। গত ২৯ জুলাই দুপুরে রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের অদূরে বিমানবন্দর সড়কে (র‌্যাডিসন হোটেলের উল্টোদিকে) বাসচাপায় রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী নিহত হয়। ওইদিন দুপুর সাড়ে ১২টায় বিমানবন্দর সড়কের বাঁ-পাশে বাসের জন্য অপেক্ষা করার সময় জাবালে নূর পরিবহনের একটি বাস তাদের চাপা দিলে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলো দিয়া খানম মীম ও আব্দুল করিম। এ সময় বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে কলেজের শিক্ষার্থীরা। তারা জাবালে নূর পরিবহনের ওই বাসে আগুন ধরিয়ে দেয় ও শতাধিক বাস ভাঙচুর করে। পরে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট চালকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, নিরাপদ সড়ক নিশ্চিতকরণ ও নৌপরিবহনমন্ত্রীর অনৈতিক বক্তব্যের প্রতিবাদসহ ৯ দফা দাবি জানায় শিক্ষার্থীরা। গত ১ আগস্ট বিকালে বাস মালিক ও শ্রমিকদের সঙ্গে বৈঠক করে শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেওয়ার কথা জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *