দেশের মানুষের জন্য কাজ করতে গিয়ে দিনে মাত্র ৫ ঘণ্টা ঘুমান বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন: ‘একজন মানুষের তো ২৪ ঘণ্টা সময়। এই সময় থেকে আমি নিজের জন্য মাত্র ৫ ঘণ্টা নেই, ঘুমানোর জন্য। এছাড়া প্রতিটি মুহূর্ত আমি কাজ করি দেশের মানুষের জন্য, দেশের উন্নয়নের জন্য।’
শনিবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগ আয়োজিত গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সম্মাননা গ্রহণ শেষে একথা বলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।’
তিনি বলেন: দেশের উন্নয়ন ও দেশের মানুষের জন্যই শুধু কাজ করি। এর বাইরে আমার আর কোন কাজ নেই। এমনকি আমি কোন উৎসবে যাই না। সারাক্ষণ আমার একটাই চিন্তা, দেশের উন্নয়ন, দেশের মানুষের উন্নয়ন। সারাক্ষণ চেষ্টা করি, কোথায় কোন মানুষ কী অবস্থায় আছে, তার খোঁজখবর রাখতে।’
মহাকাশে বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইটের সফল উৎক্ষেপণ, বাংলাদেশের স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের যোগ্যতা অর্জন, অস্ট্রেলিয়ায় গ্লোবাল উইমেনস লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড পাওয়া এবং সর্বশেষ ভারতের কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডি-লিট ডিগ্রি অর্জনসহ সরকারের বিভিন্ন অর্জনে শেখ হাসিনাকে সংবর্ধনা দেয় আওয়ামী লীগ’
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনার উদ্দেশে একটি অভিনন্দনপত্র পড়ে শোনান আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এর আগে সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় ছিল কণ্ঠশিল্পী ও সংসদ সদস্য মমতাজের গান এবং সাদিয়া ইসলাম মৌ’র নির্দেশনায় নৃত্যনাট্য।’
বক্তব্যের শুরতেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতার ভাষায় প্রধানমন্ত্রী বলেন: এ মণিহার আমায় নাহি সাজে। আমি জনগণের সেবক। জনগণের জন্য কাজ করি। জনগণ কী পেলো সেটা ছাড়া আর আমার কোনও ভাবনা নাই। আমার সৌভাগ্য আমি জাতির পিতার কন্যা হিসেবে জন্ম নিয়েছি।
তিনি বলেন: দেশের মানুষ যা কিছু অর্জন করেছে তা অর্জিত হয়েছে ত্যাগের মধ্য দিয়ে। বাংলাদেশের মানুষ যা অর্জন করেছে তা মহান ত্যাগের মধ্য দিয়েই করেছে। বাঙালি রক্তের বিনিময়েই তাদের দাবি অর্জন করেছে। আর এক্ষেত্রে নেতৃত্ব দিয়েছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। আধুনিক উন্নত দেশ বিনির্মানে কাজ করেছেন তিনি।’
‘আমি তার স্বপ্ন পূরণে কাজ করছি। আমার কোনো চাওয়া পাওয়া নেই, জনগণ কী পেল সেটাই আসল’, বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।’
শেখ হাসিনা বলেন: আমার লক্ষ্য জাতির পিতার স্বপ্ন পূরণ করা, বাংলার মানুষকে একটি সুখী-সমৃদ্ধ দেশ উপহার দেয়া। আজ আমাকে যে সংবর্ধনা দেয়া হলো, তা আমি বাংলার মানুষকে উৎসর্গ করলাম।”
তার সরকারের সময়ে বাংলাদেশ উচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন: আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা অর্জন করেছি। ২০২০ সালে দেশকে ক্ষুধা ও দারিদ্র মুক্ত করে বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকী ও ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করা হবে।’
ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মাণে তার সরকার কাজ করেছে বলে জানিয়েছেন তিনি। বলেন: বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের মধ্য দিয়ে আমরা স্যাটেইল যুগে প্রবেশ করেছি। রুপপুরে পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করে আমরা পরমাণু যুগে প্রবেশ করেছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন: একটি গোষ্ঠী নৌকা ঠেকানোর জন্য সবসময় উঠেপড়ে লাগে। মানুষ নৌকায় ভোট দিয়েছে বলেই আজ আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি, দেশের মানুষ অধিকার ফিরে পেয়েছে। আমি তাদের বলতে চাই, নৌকা ঠেকিয়ে কি আপনারা আবারো ওই রাজাকারদের ক্ষমতায় আনতে চান?
আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর সভাপতিত্বে গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের জাতীয় নেতারাও বক্তব্য রাখেন।’