ডেস্ক নিউজ:
অসহনীয় গরমে প্রাণ যায় যায় অবস্থা। ঘর থেকে বের হলেই ঘামে শরীর জবজবে। একটু পরপর ঠান্ডা পানি পানেও নেই স্বস্তি। গায়ে ফোস্কা পড়ার জোগাড়। সুর্যের তেজে শরীরে সৃষ্টি হচ্ছে এক ধরণের জ্বালাপোড়া ভাব।
সিলেটের প্রকৃতি যখন এমন উত্তপ্ত, তখন আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন, তাপমাত্রা স্বাভাবিক। বছরের এই সময়টাতে ৩৫ থেকে ৩৬ বা সাড়ে ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস মোটেও অস্বাভাবিক নয়।
তাহলে অস্বাভাবিক গরমের কারণ?
প্রশ্নের জবাবে, বাতাসের আর্দ্রতা বা জলীয় বাষ্পের পরিমাণ অন্যান্য বছরের এই সময়ের চেয়ে অস্বাভাবিক রকম বেশি। আর তাই অত্যধিক গরম অনুভূত হচ্ছে। অতিরিক্ত ঘামের কারণও এই আর্দ্রতা।
সিলেট আবহাওয়া অফিসের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী গত রবিবার সিলেটের গড় তাপমাত্রা ছিল ৩৬ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সোমবার ছিল এরচেয়ে একটু কম। আর মঙ্গলবার ছিল ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়াবিদরা বলছেন জুন-জুলাই মাসে এই তাপমাত্রা সিলেটের জন্য খুবই স্বাভাবিক। আবাহমানকাল থেকেই এ সময়টাতে তাপমাত্রা এমনই থাকে।
তাদের মতে এবার জলীয় বাষ্পের পরিমাণটা অস্বাভাবিক রকমের বেশি। শতকরা প্রায় ৭০ থেকে ৮০ ভাগ। অন্যান্য বছর এ সময়টাতে বাতাসের আর্দ্রতা থাকে আরও কম।
মঙ্গলবার সকাল ৬টায় সিলেটে বাতাসের আর্দ্রতা ছিল শতকরা ৭৪ ভাগ আর সন্ধ্যা ৬টায় ছিল শতকরা ৮০ ভাগ।
তাছাড়া অতিরিক্ত গরম অনুভব হওয়ার আরেকটি কারণ স্বাভাবিকের চেয়ে কম বৃষ্টিপাত। এখন শ্রাবণমাস। বাংলাদেশে আষাঢ়-শ্রাবন বর্ষাকাল। বাংলাদেশে বছরের এই সময়টাতে বৃষ্টিপাত হয় সবচেয়ে বেশি।
কিন্তু এবার বাস্তবতা ব্যতিক্রম। সিলেটে ভরা বর্ষায়ও বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কম। আবহাওয়া অফিসের তথ্য, জুলাই মাসে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত হওয়ার কথা ৮শ’ মিলিমিটারের চেয়ে কিছু বেশি। সেই হিসাবে জুলাইয়ের প্রথম ১৫দিনে বৃষ্টি হওয়ার কথা ৪শ’ মিলিমিটারের বেশি। কিন্ত গত ১৭ দিনে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ৪শ’ মিলিমিটারের কম।
অতিরিক্ত গরম অনুভব হওয়ার এটিও একটি অন্যতম প্রধান কারণ।
সিলেটবাসীর জন্য আরও অস্বস্তির খবর হচ্ছে, সহসা গরমের এই তীব্রতা কমছেনা। কারণ, সিলেটের আকাশে বৃষ্টির আনাগোন থাকলেও তা খুব কম।
মানে এই অস্বস্তিকর গরম থাকবে অন্তত আরও ৩/ ৪ দিন।
এ প্রসঙ্গে সিলেটের আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমদ চৌধুরী বলেন, বাতাসে অস্বাভাবিক জলীয় বাষ্পের কারণেই অতিরিক্ত গরম অনুভব হচ্ছে। তাছাড়া বৃষ্টিপাতের পরিমাণও কম। এ অবস্থা অব্যাহত থাকতে পারে আরও কয়েকদিন।
বার্তা বিভাগ প্রধান