একবারের বিশ্বকাপজয়ী ফ্রান্স আরও একটি বিশ্বকাপের দ্বারপ্রান্তে। ১৯৯৮ বিশ্বকাপের পর আবারও শিরোপার হাতছানি দলটির সামনে। তবে এখানেই ভয়-হতাশা ফ্রান্সের। ১৯৯৮ বিশ্বকাপের পর রাশিয়া বিশ্বকাপের ফাইনাল পর্যন্ত আরও দুটি শিরোপার ফাইনালে উঠেছিল ফরাসিরা। একটি ২০০৬ বিশ্বকাপ অপরটি সাম্প্রতিক ২০১৬ ইউরো ফাইনাল। ১০ বছরের ব্যবধানে দুইবার বৈশ্বিক ও মহাদশেীয় শিরোপার খুব কাছে গিয়েও ব্যর্থ হয়েছিল ফ্রান্স। ২০০৬ বিশ্বকাপ ফাইনালে ইতালির বিপক্ষে হেরে স্বপ্নভঙ্গ হয়েছিল তাদের।’
সেই হৃদয়ভঙ্গের দিনে পেনাল্টিতে গড়ায় ফাইনাল। নির্ধারিত সময় ১-১ গোলে ড্র ছিল খেলা। পেনাল্টিতে ইতালি তাদের পাঁচটি শটেই লক্ষ্যভেদ করে। তবে ডেভিড ত্রেজেগে পেনাল্টি মিস করায় শিরোপাস্বপ্ন ভেঙে যায় ফ্রান্সের।’,
ওই বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে পর্তুগালকে হারিয়েছিল ফরাসিরা। ১০ বছর পর ২০১৬ সালে পর্তুগাল কাঁদায় ফ্রান্সকে। ঘরের মাঠে ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপে দারুণ ফেভারিট ছিল তারা। ফেভারিটের মতো খেলে ফাইনালেও পৌঁছে যায়। অপরদিকে অপ্রত্যাশিত ভাবে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর পর্তুগাল উঠে আসে ফাইনালে। শিরোপা নির্ধারণীতে নির্ধারিত সময়ে খেলা গোলশূন্য ড্র হয়। ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। সেখানে ১০৯ মিনিটে এডেরের গোল আবারও হতবাক করে দেয় ফ্রান্সকে। আবারও একটি শিরোপায় এক হাত রেখেও হতাশ হতে হলো দেশটিকে। তবে সেই ফ্রান্স যে বেশ শক্তিশালী এর প্রমাণ রেখে দুই বছরের ব্যবধানে আবারও ফাইনালে তারা। এবার বিশ্বকাপের ফাইনালে। বলা যায় টানা দুটি টুর্নামেন্টের ফাইনালে উঠল ফ্রান্স। এবার কী হবে! আবারও শিরোপা হারানোর বেদনায় ভাসবে তারা নাকি ১৯৯৮ ফিরিয়ে নিজেদের ইতিহাসে দ্বিতীয় বিশ্বকাপ ঘরে তুলবে ফ্রান্স।
সামনে আরেকটি ফাইনাল বলেই সতর্ক ফ্রান্স। ঘরের মাঠে শিরোপা হারিয়ে হৃদয়ভঙ্গের বেদনায় পড়েছে একবার। এবার আর সেই ভুল করতে চায় না ফরাসিরা। ২০১৬ সালের ওই ফাইনালে দলের কোচ ছিলেন দিদিয়ের দেশম। এবারও দলকে নিয়ে ফাইনালে তিনি। তবে দেশম স্বীকার করেছেন ইউরো ২০১৬ সালের ফাইনালের হারের দুঃসহ স্মৃতি এখনও ভুলতে পারেনি ফ্রান্স। বিশ্বকাপের শিরোপা ঘরে তুললে সেই দুঃখ ভুলে যাবেন তারা। বেলজিয়ামকে সেমিফাইনালে হারিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করার পরে দেশম এ কথাগুলো বলেন।
ঘরের মাঠে মাত্র দুই বছর আগের হতাশা এখনও তাড়িয়ে বেড়ায় ফ্রান্স দলকে। মঙ্গলবার সেমিফাইনালে জয়ের পরে ফ্রেঞ্চ কোচ বলেন, ‘হ্যাঁ, আমরা এখন আরেকটি ফাইনালে। দুই বছর আগে কী ঘটেছিল, এখনও আমার মনে আছে। এবার আমরা ফাইনালে জয়ের জন্যই যাচ্ছি। ইউরোর ফাইনালটি এখনও আমরা কেউ ভুলতে পারিনি। এর আগেও একটি বিশ্বকাপ ফাইনাল হেরেছিলাম। কিন্তু এবার কোনো ভুল করতে চাই না। এবার আমরা শিরোপা চাই।’ ১৯৯৮ সালে বিশ্বকাপজয়ী দলের অধিনায়ক দেশম তার তরুণ দলটি নিয়ে দারুণ উচ্ছসিত, ‘এটা সত্যিই ব্যতিক্রম। আমি সত্যিকার অর্থেই খেলোয়াড়দের নিয়ে খুশি। তারা তরুণ, কিন্তু তাদের মধ্যে জয়ের আকাক্সক্ষা আছে। প্রতিপক্ষ হিসেবে বেলজিয়াম বেশ কঠিন। এ ম্যাচে জয়ী হওয়ার সব কৃতিত্ব খেলোয়াড়দের।’ ২০১৬ সালের স্মৃতি উমতিতির মনেও হতাশার জন্ম দেয়। ম্যাচ শেষে তিনিও কোচের মতোই বলেছেন, ‘আমরা ইউরোর ফাইনাল জিততে পারিনি। সে কারণেই বিশ্বকাপের জয়টা জরুরি। আশা করছি, এবার সব পাল্টে যাবে। বিশ্বকাপ জয় করেই আমরা ঘরে ফিরব।’ ফ্রান্সের অধিনায়ক ও গোলরক্ষক হুগো লোরিস ইউরোর কথা ভেবেই এখনই শিরোপা নিয়ে ভাবছেন না। জানান সমর্থকরা শিরোপা স্বপ্ন দেখতেই পারে কিন্তু দ্বিতীয়বার এ ভুল তিনি করবেন না, ‘আশা করছি রোববার শেষ উৎসবটাও আমরা উদযাপন করব। কোচ যা বলেছে আমরা সেটাই করার করেছি। দুই বছর আগের পুনরাবৃত্তি চাই না। তাই এখনই শিরোপা নিয়ে কিছু বলার নেই। শিরোপা জয়ের স্বপ্ন সমর্থকরা দেখতে পারে কিন্তু আমি কাপ হাতে পাওয়ার আগে দেখছি না।’:::::::::::::::
This website uses cookies so that we can provide you with the best user experience possible. Cookie information is stored in your browser and performs functions such as recognising you when you return to our website and helping our team to understand which sections of the website you find most interesting and useful.