নিউজ ডেস্ক: তিস্তার দুর্গম চর এলাকায় দিনে পর দিন ৩ জন শিক্ষক অনুপস্থিত থাকার পর মাসে ২/৩ দিন এসে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে বিল উত্তোলন করেন। এ দিকে একজন শিক্ষক নিয়মিত আসলেও ক্লাশ নেয় লুঙ্গি পড়ে।
শিক্ষার করুন অবস্থার চিত্র পাওয়া গেল নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার ঝুনাগাছ চাপানি ইউনিয়নের পূর্ব ছাতুনামার চর এলাকায়।
কাগজ কলমে শিক্ষা দেয়া হয় পূর্ব ছাতুনামা আমিন পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। ২০১৭ সালের বন্যার বিদ্যালয়টি নদী গর্ভে বিলিন হওয়ার পর চরে টিনের ঘর তৈরি করে কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। কোমলমতি শিক্ষার্থীদের নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছে স্থানীয় অভিভাবকগন।
বুধবার দুপুরে সরেজমিনে সেখানে গিয়ে দেয়া যায়, পূর্ব ছাতুনামা আমিন পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪ জন শিক্ষকের মধ্যে ৩জন শিক্ষক অনুপস্থিত।
স্থানীয় অভিভাবকদের অভিযোগ ৩জন শিক্ষক মাসে ২/৩ দিন এসে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে সরকারী বেতন উত্তোলন করেন। সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে থাকলেও সেখানে পড়াশুনা না হওয়া অনেকে বাধ্য হয়ে পাশ্ববর্তী হাতীবান্ধা থানায় আত্বীয়ের বাসায় রেখে পড়াশুনা করাতে হচ্ছে।
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আবুল বাশার একাই প্রতিদিন লুঙ্গি পড়ে এসে স্কুলে শিক্ষার্থীদের গল্প গুজব করে সময় কাটিয়ে চলে যান। ঝুনাগাছ চাপানি ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম বলেন, পূর্ব ছাতুনামা চরে সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় থাকলে পড়াশুনা না হওয়ায় অভিভাবকগন পাশ্ববর্তী এলাকায় গিয়ে শিক্ষার্থীদের ভর্তি করে।
সহকারী শিক্ষক আবুল বাশার বলেন, তিন জন শিক্ষক সকলে ব্যস্ত আছেন আগামীকালে (বৃহস্পতিবার) ক্লাষ্টারের মিটিং খাওয়ার বাজার করার জন্য। তিনি লুঙ্গি পড়ে প্রতিষ্ঠানে আসেন বিষয়টি উপজেলা শিক্ষা অফিসের অনুমতি নেয়া আছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খলিলুর রহমান মোবাইল ফোনে বলেন, আমি তো বিদ্যালয়ের ক্লাস্টারের বাজার করার কাজে ব্যস্ত আছি। সহকারী শিক্ষক লুঙ্গি পরে প্রতিষ্ঠানে প্রসঙ্গে বলেন, নদী পাড় হওয়ার কারনে লুঙ্গি পড়ে ক্লাশ নেয়ার অনুমতি দেয়া হয়েছে। অন্য শিক্ষকগন অনুপস্থিত প্রসঙ্গ জানতে চাইলে মোবাইল ফোনটি বন্ধ করে রাখে।
সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা ফিরোজুল আলম বলেন, সহকারী শিক্ষক লুঙ্গি পড়ে ক্লাশ করার কোন অনুমতি দেয়া হয়নি। তিনজন শিক্ষক কেন অনুপস্থিত বিষয়টি আমার জানা নেই।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা স্বপন কুমার দাশ বলেন, আমি ছুটিতে আছি বিষয়টি বলতে পারব না। তবে সহকারী শিক্ষা অফিসারকে খোজ নেয়ার জন্য বলা হয়েছে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ওসমান গনি বলেন, বিষয়টি খোজ নেয়ার জন্য উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে বলা হয়েছে। লুঙ্গি পড়ে কোন শিক্ষক ক্লাশ করার নিয়ম নাই।
নীলফামারী জেলা প্রশাসক খালেদ রহীম বলেন, বিষয়টি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে তদন্ত করার জন্য বলা হয়েছে।
নির্বাহী সম্পাদক