Home » ঢাকার রাস্তায় পড়ে থাকা ফরিদার সাথে দেখা করলেন কুড়িগ্রামের ডিসি

ঢাকার রাস্তায় পড়ে থাকা ফরিদার সাথে দেখা করলেন কুড়িগ্রামের ডিসি

নিউজ ডেস্ক: 

ঢাকার কলাবাগানে রাস্তার ধারে অসুস্থ হয়ে পড়ে থাকা ফরিদা ও তার সন্তানরা বর্তমানে সুস্থ আছেন। আজ বুধবার দুপুরে কলাবাগান এলাকায় গিয়ে তাদের সঙ্গে দেখা করে খোঁজখবর নিয়েছি। ফরিদা আজ রাতেই তার স্বামী সন্তানদের নিয়ে কুড়িগ্রামের উদ্দেশে রওয়ান হবেন। সেই ব্যবস্থাও করে দিয়েছি।

বুধবার বিকেলে  প্রতিবেদকের আলাপকালে কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভিন এসব তথ্য জানান। তিনি একটি বিশেষ ট্রেনিংয়ে দুদিন ধরে ঢাকায় অবস্থান করছেন। আগামীকাল বৃহস্পতিবার সকালে তিনিও কুড়িগ্রাম পৌঁছাবেন।

কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক বলেন, ফরিদা তার স্বামী সন্তানদের নিয়ে আগামীকাল কুড়িগ্রামে পৌঁছানোর পরপরই তাদের শহরে একটি ভাড়া বাসায় তুলে দেয়া হবে। সেখানে তাদের খাওয়া দাওয়াসহ সার্বিক দায়িত্ব সদর ইউএনও পালন করবেন। এর আগেও তারা শহরের একটি সরকারি খাস জমিতে থাকতো। সেই জমিতেই তাদের ঘর নির্মাণ করে দেয়া হবে। যতদিন পর্যন্ত তাদের নতুন ঘরে তুলে না দেয়া হবে ততদিন তারা ভাড়া বাসাতেই থাকবে।

তিনি বলেন, ঘরে তুলে দেয়ার পর ফরিদার স্বামী আনসার আলীকে বাড়ির আশপাশেই একটি দোকান করে দেয়ার ব্যবস্থা ইতোমধ্যে আমরা নিয়েছি। দোকানে মালামালও তুলে দেয়া হবে। মূলত ফরিদার সংসার সাজানোর জন্য যা যা প্রয়োজন সব কিছুই আমরা করবো। গরু-ছাগলও কিনে দেব। তার মেয়ে ও দুই ছেলেকে স্কুলে ভর্তি করার দায়িত্বও আমি নিয়েছে। আশা করছি তারা ভালো থাকবে।

সুলতানা পারভিন বলেন, আমি যতদিন কুড়িগ্রামে থাকবো তাদের দেখভাল করার দায়িত্ব আমার। তারা যেন ভালোভাবে জীবন-যাপন করতে পারেন সব ব্যবস্থা করে দেয়ার ব্যাপারে সদর ইউএনওকে বলা আছে। তাছাড়া আমি তো আছিই।

তিনি বলেন, কুড়িগ্রাম সব সময়ই প্রাকৃতিক দুর্যোগের শিকার। নদী ভাঙনে নিঃস্ব হয়ে পড়ছে এ জেলার মানুষ। সরকার এ জেলার উন্নয়নে অনেক বেশি আন্তরিক। যে কোনো ঘটনায় জেলা প্রশাসনও সব সময় তৎপর থাকে। আমরা খুব চেষ্টা করছি সকল দুর্যোগ কেটে উঠার।

প্রসঙ্গত, গত ৬ জুলাই রাজধানীর সোবহানবাগ মসজিদের কাছে জ্বর নিয়ে ফুটপাতে পড়ে থাকেন ফরিদা। পরদিনও রাস্তায় পড়েছিলেন তিনি। এদিন সন্ধ্যায় মাকে বাঁচাতে চেষ্টা করছিল তার দুই শিশু সন্তান। তারা প্লাস্টিকের বোতলে করে মায়ের মাথায় পানি ঢালছিল। সেই দৃশ্য দেখে মোবাইলে ধারণ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী পারবেস হাসান। এরপর তিনি ছবিটি ফেসবুকে পোস্ট করার পর তা ভাইরাল হয়ে যায়। পরিবারটির অসহায়ত্ব তুলে ধরে বিভিন্ন মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশের পর নজরে আসে কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভিনের। তিনি তাৎক্ষণিকভাবে একটি গণমাধ্যমের সঙ্গে যোগাযোগ করে পরিবারটির দায়িত্ব নেয়ার আশ্বাস নেন। সেই আশ্বাস থেকেই তিনি বুধবার ঢাকায় পরিবারটি সঙ্গে দেখা করেন।

সুলতানা পারভিন ৬ মাস আগে কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক হিসেবে যোগদান করেন। এরপর থেকেই তৃণমূল মানুষের খোঁজ নিতে ছুটে চলছেন মানুষের দ্বারে দ্বারে। বর্তমানে তিনি জনবান্ধব জেলা প্রশাসক হিসেবে কুড়িগ্রামের মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছেন।

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *