এবার গ্রীষ্মে সহনীয় মাত্রায় লোডশেডিং হবে, যা গ্রাম ও শহরে সমভাবে বণ্টন করা হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান। শনিবার রাজধানীর বিদ্যুৎ ভবনে আয়োজিত এক সেমিনারে তিনি জানান, জ্বালানি খাতে বিগত সরকারের রেখে যাওয়া ২৬০ কোটি ডলার বকেয়া পরিশোধ করেছে অন্তর্বর্তী সরকার।
এসময় আলোচকরা অভিযোগ করেন, দাম নির্ধারণে গ্রাহকদের ঠকাচ্ছে বিপিসি, পেট্রোবাংলা, পিডিবির মত প্রতিষ্ঠান।
ডলার সংকটে এলএনজি আমদানিতে বাধা, স্থানীয় উত্তোলনও দিন দিন কমছে। এমন বাস্তবতায় ২০২০-২১ অর্থবছর থেকে দেশে গ্যাস সরবরাহ নিম্নমুখী। এতে শিল্পে সংকট বেড়েছে, বিকল্প জ্বালানির চাপে বিদ্যুৎ খাতে বেড়েছে উৎপাদন খরচ।
নতুন গ্যাসকূপ না মিললে ২০৩০ সাল নাগাদ গ্যাসের চাহিদা মেটাতে ৭৫ ভাগ পর্যন্ত এলএনজি নির্ভরতা বাড়তে পারে। এজন্য দরকার হবে আরো দুই এফএসআরইউ। তাই গ্যাস চুরি-অপচয়রোধসহ দক্ষ জ্বালানি কৌশলের তাগিদ বিশেষজ্ঞদের।
জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ইজাজ হোসেন বলেন, ‘প্রথমেই গৃহস্থালি কাজে গ্যাসের ব্যবহার বন্ধ করা যেতে পারে। এরপর রেশন কার্ডের মাধ্যমে দরিদ্র ও বস্তিবাসীর জন্য এলপিজিতে ভর্তুকি দেওয়া যেতে পারে।’
সেমিনারে আলোচকরা বলেন, গ্যাস অনুসন্ধানে বিনিয়োগে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। সমুদ্রে গ্যাস অনুসন্ধানে পুনরায় দরপত্রের তাগিদ তাদের।
সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, ‘বিগত সরকারের সময় বেশি বেশি করে দেখানোর একটা প্রবণতা ছিল যার কারণে বেশি বেশি করে বেসরকারি বিনিয়োগ এবং বেশি বেশি করে তার মাধ্যম দুর্নীতি, এই বেশি প্রবণতাটা দুর্ভাগ্যজনকভাবে এখনও রয়ে গেছে।’
ক্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা শামসুল আলম বলেন, ‘ট্রু প্রাইসিং যদি গ্যাসে করা হয়, তাহলে অন্তত ২০ পারসেন্ট রেভিনিউ রিকোয়ারমেন্ট কমে যাবে। এই কোম্পানিগুলো এই বেনিফিট নিয়ে কি করছে?’
এসময় জ্বালানি উপদেষ্টা জানান, বিদায়ী সরকার জ্বালানি ও বিদ্যুৎখাতে ৩২০ কোটি ডলার বকেয়া রেখে গেছে। এতে সরবরাহকারীরা বাড়তি দাম চাপিয়ে দিচ্ছিলো। অন্তর্বর্তী সরকার বকেয়া ৬০ কোটি ডলারে নামিয়েছে।
ফাওজুল কবির খান বলেন, ‘সবাই বলছে ইকোনোমিতে ডাউন টার্ন। ডাউন টার্ন ছিল, এখন তো আর সেটা নাই। আমরা আশা করি যে এটা ম্যানেজ করতে পারব। লোড শেডিং হবে না, এটা বলব না। কিন্তু এটা সহনীয় মাত্রায় থাকবে এবং গ্রাম ও শহরের মধ্যে পার্থক্য থাকবে না।’
উপদেষ্টা আরও জানান, বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনা করে ইউনিট প্রতি খরচ কমানোর চেষ্টা করা হবে।