Home » চীন থেকে আমদানিকৃত স্মার্টফোন-কম্পিউটারে শুল্ক ছাড় ট্রাম্পের

চীন থেকে আমদানিকৃত স্মার্টফোন-কম্পিউটারে শুল্ক ছাড় ট্রাম্পের

অনলাইন ডেস্ক: চীন থেকে আমদানি হওয়া স্মার্টফোন, কম্পিউটারসহ কিছু ইলেকট্রনিক পণ্যের ওপর নতুন শুল্ক ছাড় দিয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন।

স্থানীয় সময় গত শুক্রবার (১১ এপ্রিল) রাতে যুক্তরাষ্ট্রের কাস্টমস অ্যান্ড বর্ডার প্রোটেকশন একটি নোটিশ প্রকাশ করে জানায়, এই পণ্যগুলোকে ট্রাম্পের ঘোষিত ১০ শতাংশ বৈশ্বিক শুল্ক এবং চীনা পণ্যের ওপর আরোপিত ১২৫ শতাংশ শুল্ক থেকে অব্যাহতি দেওয়া হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো আশঙ্কা করেছিল—চীনে তৈরি এসব পণ্যের দাম বহুগুণ বেড়ে যেতে পারে। সেই উদ্বেগের পরিপ্রেক্ষিতেই এই ছাড় দেওয়া হলো।

বিশ্লেষকরা বলছেন, চীনের ওপর ট্রাম্পের শুল্কনীতিতে এটিই প্রথম বড় ধরনের ছাড় এবং একে ‘গেম-চেঞ্জার’ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

ছাড় দেওয়া পণ্যের মধ্যে রয়েছে—স্মার্টফোন, ল্যাপটপ, চিপসেট, সেমিকন্ডাক্টর, মেমোরি কার্ড এবং সোলার সেল।

ওয়েডবুশ সিকিউরিটিজের প্রযুক্তি গবেষণা প্রধান ড্যান আইভস এক্সে (সাবেক টুইটার) লিখেছেন, ‘স্মার্টফোন ও চিপস ছাড় পাওয়া মানেই প্রযুক্তি বিনিয়োগকারীদের জন্য স্বপ্নপূরণের মতো পরিস্থিতি।’

এর ফলে অ্যাপল, এনভিডিয়া, মাইক্রোসফটসহ বড় প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছে।

হোয়াইট হাউজ জানিয়েছে, এই ছাড় দেওয়া হয়েছে যেন কোম্পানিগুলো উৎপাদন দ্রুত যুক্তরাষ্ট্রে স্থানান্তর করতে পারে।

হোয়াইট হাউজের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প স্পষ্ট করে দিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র চীনের ওপর নির্ভর করে সেমিকন্ডাক্টর, চিপ, স্মার্টফোন, ল্যাপটপের মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তিপণ্য তৈরি করবে না।’

লেভিট আরও জানান, প্রেসিডেন্টের নির্দেশে এসব কোম্পানি এখন জোরেসোরে যুক্তরাষ্ট্রেই উৎপাদনের জন্য কাজ শুরু করেছে।
ফ্লোরিডায় অবস্থানরত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, ‘চীনের ওপর উচ্চ শুল্ক আরোপে আমি পুরোপুরি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছি। আমি মনে করি এর ফলাফল ইতিবাচক হবে।’

তবে হোয়াইট হাউজের ডেপুটি চিফ অফ স্টাফ স্টিফেন মিলার জানান, চীনের বিরুদ্ধে ফেন্টানিল সম্পর্কিত ২০ শতাংশ শুল্ক এখনও কার্যকর থাকবে এসব ইলেকট্রনিক পণ্যের ওপর।

কয়েকটি গবেষণা বলছে, যদি শুল্ক সম্পূর্ণভাবে কার্যকর হতো, তাহলে যুক্তরাষ্ট্রে আইফোনের দাম তিনগুণ পর্যন্ত বেড়ে যেতে পারতো।

কাউন্টারপয়েন্ট রিসার্স জানায়, গত বছর মার্কিন বাজারে আইফোনের বিক্রির অর্ধেকের বেশি অ্যাপলের দখলে ছিল। আর যুক্তরাষ্ট্রে বিক্রি হওয়া আইফোনের ৮০ শতাংশ এখনও চীনে তৈরি হয়, বাকি ২০ শতাংশ ভারতে।

চীনের ওপর নির্ভরতা কমাতে অ্যাপল ও স্যামসাং উভয়ই তাদের উৎপাদন সরবরাহের বিকল্প খুঁজছে। ভারত ও ভিয়েতনাম এখন এই নতুন উৎপাদন কেন্দ্রের তালিকায় শীর্ষে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, শুল্ক কার্যকর হওয়ার পর, অ্যাপল ভারতের উৎপাদন আরও বাড়ানোর পদক্ষেপ নিয়েছে।

এই সপ্তাহে ট্রাম্প বিশ্বজুড়ে নতুন উচ্চ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছিলেন। তবে বুধবার তিনি জানিয়েছেন—চীন বাদে বাকি দেশগুলোর ওপর ৯০ দিনের শুল্ক ছাড় দেওয়া হবে।

চীনের ওপর শুল্ক বাড়িয়ে ১৪৫ শতাংশ করার পেছনে যুক্তি হিসেবে ট্রাম্প বলেন—চীন পাল্টা ৮৪ শতাংশ শুল্ক আরোপে প্রস্তুত ছিল।

আর যে দেশগুলো পাল্টা শুল্ক দেয়নি, তারা জুলাই পর্যন্ত ১০ শতাংশ হারে শুল্ক দেবে।

হোয়াইট হাউজ বলছে, এই পদক্ষেপের উদ্দেশ্য হলো—অন্যান্য দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য আরও ভালো বাণিজ্য চুক্তি আদায় করা।

ট্রাম্প বলেছেন, তার আমদানি শুল্ক নীতির লক্ষ্য হচ্ছে—বিশ্ববাণিজ্যে ‘অন্যায্যতা’ রোধ করা এবং যুক্তরাষ্ট্রে চাকরি ও কারখানা ফিরিয়ে আনা।

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *