রংপুরে অপহরণ হওয়া চার শিশুকে উদ্ধার করেছে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ। গতকাল শুক্রবার রাত ১১টার দিকে রংপুর রেলওয়ে স্টেশন এলাকা থেকে তাদের উদ্ধার করা হয়। এ সময় অপহরণকারী আদুরী বেগম নামে এক নারীকেও আটক করা হয়। পরে অপহরণ মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছে পুলিশ।
স্থানীয়রা জানান, রংপুর নগরীর ৭ নম্বর ওয়ার্ডের তপোধন গ্রাম থেকে চার শিশু নিয়ে ওই নারী ইফতারের পরেই নিখোঁজ হন। বিষয়টি নিয়ে ওই এলাকায় হইচই পড়ে যায়। এর পরে বিষয়টি পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটকে জানানো হলে রেলস্টেশন, বাসস্ট্যান্ড এলাকাসহ বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান নেয় পুলিশ। এর পরই রেলস্টেশন এলাকা থেকে অপহৃত চার শিশুসহ ওই নারীকে রেলওয়ে পুলিশ আটক করে।
রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. মজিদ আলী জানান, রাত সাড়ে ১২টার দিকে রংপুর মেডিকেলে ওই নারীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে পুলিশ নিজ হেফাজতে রেখেছে। এই ঘটনায় শুক্রবার রাত দেড়টার দিকে নগরীর হারাগাছ থানায় একটি অপহরণ মামলা করেছেন মকবুল হোসেন নামে এক ব্যক্তি। মামলায় আদুরী বেগমকে প্রধান আসামি করে অজ্ঞাত আরও কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে।
গ্রেপ্তার আদুরী বেগম কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার ফকিরচর গ্রামের মনছুর আলীর স্ত্রী। তিনি রংপুর নগরীর বাবুপাড়া এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন।
উদ্ধার শিশুরা হলো-মমিনুল ইসলামের চার বছর বয়সী ছেলে ইসমাইল, মকবুল হোসেনের ছয় বছর বয়সী ছেলে রিফাত, আখিফুল ইসলামের আট বছর বয়সী মেয়ে আখি মনি ও মমিনুর ইসলামের ১২ বছর বয়সী সন্তান মিনু।
রিফাতের বাবা মকবুল হোসেন বলেন, ‘আদুরী বেগম নামক সেই নারী নিজেকে অসহায় দাবি করে গত বৃহস্পতিবার দিনের বেলা নগরীর ৭ নম্বর ওয়ার্ডের তপোধন গ্রামে বিভিন্ন বাড়িতে আশ্রয় চান। পরে আশিকুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি ওই নারীকে আশ্রয় দেন। রাতে ওই বাড়িতে অবস্থান করেন আদুরী। শুক্রবার সারাদিন ওই বাড়িতেই ছিলেন এবং সন্ধ্যায় ইফতারও করেন। ইফতারের পরে ওই চার শিশুকে নিয়ে উধাও হয়ে যান তিনি। এর কিছুক্ষণ পর বাচ্চাদের না পেয়ে এলাকায় হইচই পড়ে যায়। ঘটনার ব্যাপারে তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশকে জানানো হয়।
রংপুর রেলস্টেশনের সুপার শংকর গাঙ্গুলি বলেন, ‘আদুরী বেগম নামক সেই নারী নিজেকে অসহায় দাবি করে আশিকুল ইসলামের বাড়িতে সারাদিন থেকে ইফতারের পর চার শিশু নিয়ে উধাও হয়ে যান। এদিন রাতে ওই শিশুদের নিয়ে আদুরী বেগমকে ঘোরাফেরা করতে দেখে স্টেশনে থাকা লোকজনের সন্দেহ হয়। পরে স্থানীয়রা তাঁকে আটক করে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ এসে তাদের সবাইকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
পুলিশ কমিশনার মো. মজিদ আলী আরও বলেন, ‘অপহরণ হওয়া শিশুদের উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছি আমরা। মামলা হয়েছে, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আদালতে পাঠানো হবে।’