Home » সিলেটে ইফতার ঘিরে সরগরম রাজনীতি

সিলেটে ইফতার ঘিরে সরগরম রাজনীতি

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে পতন ঘটেছে ক্ষমতা আকড়ে থাকা আওয়ামী লীগের। বিরোধী দলকে ঠেকাতে আগের সেই যুদ্ধংদেহী মনোভাবে নেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সামনে জাতীয় নির্বাচনের ডামাঢোল। এমন প্রেক্ষিতে রমজানে সিলেটের ইফতারকেন্দ্রিক রাজনীতিতে যোগ হয়েছে ভিন্ন মাত্রা। বিশেষ করে বিএনপি ও জামায়াত ইফতারকেন্দ্রিক রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিয়ে এখন তুমুল ব্যস্ত। আগামী নির্বাচনের সম্ভাব্য প্রার্থীরা ইফতারকে প্রচারণার গুরুত্বপূর্ণ অংশ মনে করায় রমজানেও সিলেটজুড়ে রাজনৈতিক ব্যস্ততা দৃশ্যমান।

রাজনৈতিক মহলের ভাষ্য, বিগত প্রায় দেড় দশক ‘গায়ের জোরে’ আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকায় রাজনীতি ছিল চাপের মধ্যে, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড ছিল বৃত্তে বন্দি। বিগত বছরগুলোতে সিলেটে আওয়ামী লীগ দাপট দেখিয়ে মাঠ দখল করে রাখতো, বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে ‘স্পেস’ দিত না। আবার রমজানে বিএনপি, জামায়াত সীমিত পরিসরে যেসব ইফতার মাহফিলের আয়োজন করতো, সেগুলোতেও থাকতো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নানা বিধিনিষেধ। অনেক ক্ষেত্রে ইফতার আয়োজনে বাগড়া দিত পুলিশ।

এছাড়া বিএনপি ও জামায়াতের নেতা-কর্মীদের নামে মামলার পাহাড় থাকায় প্রকাশ্যে রাজনৈতিক তৎপরতাও তাদের জন্য কঠিন ছিল। কিন্তু ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর আওয়ামী লীগের ‘দম্ভের’ পতন ঘটেছে। সিলেটের কোথাও এখন আওয়ামী লীগ ও তাদের সহযোগীদের কোনো তৎপরতা নেই। গা ঢাকা দিয়েছেন সবাই। অভ্যুত্থানের পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতেও এসেছে পরিবর্তন। এই চাপহীন পরিস্থিতি এবার সিলেটের রাজনীতিতে বাড়তি উৎসাহ যোগ করেছে। বিএনপি ও জামায়াতসহ বিভিন্ন দলের নেতারা বিরামহীনভাবে ইফতারকেন্দ্রিক রাজনীতিতে কাজ করছেন।

রাজনৈতিক সূত্র জানায়, সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপি রমজানের শুরু থেকেই বিভিন্ন জায়গায় ইফতার মাহফিলের আয়োজন করছে। জেলা বিএনপি প্রতিটি উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে এ আয়োজন করছে। এসব আয়োজনে জেলার শীর্ষ নেতারা যোগ দিচ্ছেন, বক্তব্য রাখছেন।

কোনো কোনো দিন একাধিক জায়গায় ইফতার মাহফিল থাকায় জেলার নেতাদের টিম করে দেওয়া হচ্ছে, যাতে সব আয়োজনে শীর্ষ নেতাদের অংশগ্রহণ থাকে। বিএনপির বাইরে অঙ্গ সংগঠনগুলোও ইফতারের পৃথক আয়োজন করছে। এছাড়া রাজনৈতিক নেতাদের ব্যক্তিগত উদ্যোগেও অনেক ইফতার মাহফিল হচ্ছে। সিলেটের ছয়টি আসনে আগামী জাতীয় নির্বাচনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীদের তৎপরতাও বাড়তি আবহ যোগ করেছে। প্রচারণার অংশ হিসেবে সম্ভাব্য প্রার্থীরা নিজ নিজ আসনের ওয়ার্ডে, ইউনিয়নে, উপজেলায় ইফতারের আয়োজন করছেন। নিজেদের উদ্যোগ ছাড়াও তারা অনুসারী নেতা-কর্মীদের দিয়েও পৃথক আয়োজন করাচ্ছেন।

শুধু এমপি প্রার্থীরাই নন, উপজেলা চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী ও ইউনিয়ন চেয়ারম্যান হতে আগ্রহী নেতারাও ইফতার মাহফিলের মাধ্যমে নিজেদের অবস্থান সংহত করছেন। এদিকে, জামায়াতও বসে নেই। রাজনীতির খোলা হাওয়ায় ব্যাপক তৎপরতা চালাচ্ছে দলটি। জেলা ও মহানগর জামায়াতের উদ্যোগে ওয়ার্ডে, ইউনিয়নে, উপজেলায় নিয়মিত ইফতারের আয়োজন চলছে।

সিলেটের ছয়টি আসনে ইতোমধ্যেই জামায়াত সম্ভাব্য প্রার্থী ঘোষণা করেছে। এসব প্রার্থীরা ইফতার আয়োজনে মাঠ গরম করে রাখছেন। উপজেলা ও ইউনিয়নে জামায়াতের যারা নির্বাচনে আগ্রহী, তারাও পৃথক আয়োজন করছেন। দলটির ছাত্র সংগঠন শিবিরের পক্ষ থেকেও চলছে ধারাবাহিক ইফতার মাহফিল।

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *