রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে তৃতীয় ধাপে বাদ পড়া বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ওপর জলকামান ও লাঠিচার্জ করেছে পুলিশ। বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণের দাবিতে তারা প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার দিকে যাচ্ছিলেন। এ সময় এই ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত পাঁচ জন আহত হয়েছেন।
বুধবার (১২ মার্চ) দুপুর দেড়টার দিকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ঘটনাটি ঘটে।
শিক্ষকরা। দীর্ঘদিনেও দাবি আদায়ের বিষয়ে ন্যূনতম আশ্বাস না পাওয়ায় তারা প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের যমুনার দিকে যাচ্ছিলেন। কিন্তু আগে থেকেই কদম ফোয়ারা মোড়ে সতর্ক অবস্থায় ছিল পুলিশ। বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষকদের মিছিলটি কদম ফোয়ারা কাছাকাছি এলে পুলিশ তাদের বাধা দেয় এবং বোঝানোর চেষ্টা করে, এতজনকে একসঙ্গে নিয়ে বাসভবনের সামনে যাওয়ার সুযোগ নেই। আপনারা চাইলে কয়েকজন প্রতিনিধি মিলে সেখানে যেতে পারেন। কিন্তু তাতে তারা রাজি হননি।
পরে বাধা উপেক্ষা করে তারা সামনের দিকে যেতে চাইলে পুলিশ তাদের ওপর জলকামান নিক্ষেপ করে। তাতেও ফেরানো যায়নি বেসরকারি প্রথমিক বিদ্যালয় শিক্ষকদের। এ সময় পুলিশ বাধ্য হয়ে তাদের ওপর লাঠিচার্জ করে। এই ঘটনায় অন্তত পাঁচ জন বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক আহত হয়েছেন।
এ সময় আন্দোলনকারী শিক্ষক লিয়াকত আলী বলেন, ‘আমাদের দাবি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ। আমরা মিছিল করে যমুনার দিকে যাচ্ছিলাম কিন্তু আমাদের পানি (জলকামান) মারা হলো। এতো বৈষম্য কেন? সরকার যদি যথাযথ ব্যবস্থা করতো তাহলে কিন্তু আমাদের রাস্তায় দাঁড়াতে হতো না।’
এর আগে সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক মো. ফিরোজ উদ্দিন বলেন, ‘বৈষম্যের শিকার হচ্ছে সারা বাংলাদেশের তৃতীয় ধাপে জাতীয়করণ থেকে বাদ পড়া চলমান যোগ্য বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো। গত ৩ ফেব্রুয়ারি প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে পাঠানো চিঠির দ্রুত বাস্তবায়নের দাবিতে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি থেকে আমরা অবস্থান করছি। ২০১৩ সালে সারা বাংলাদেশের ২৬ হাজার ১৯৩টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করলেও সমযোগ্যতা থাকার পরেও শুধুমাত্র রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ও আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে সারা বাংলাদেশের চলমান যোগ্য ৪ হাজারের অধিক বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ থেকে বাদ পড়ে যায়। এরইসঙ্গে প্রায় ৮ লক্ষাধিক শিক্ষার্থী তাদের মৌলিক অধিকার হতে বঞ্চিত হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘২০১৫ সাল থেকে আমরা জাতীয়করণের দাবিতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ২০১৮ সালে ১৮ দিন, ২০১৯ সালে ৫৬ দিন, ২০২৪ সালে ১০ ও ১১ সেপ্টেম্বর এবং সর্বশেষ ২০২৫ সালের ২৫ জানুয়ারি থেকে ২৭ জানুয়ারি পর্যন্ত আন্দোলন কর্মসূচি পালন করেছি। ২৫ থেকে ২৭ জানুয়ারি আন্দোলনের ফলে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে একটি চিঠি মন্ত্রণালয়ের ইস্যু করা হয়। এই চিঠি দ্রুত বাস্তবায়নের জোর দাবি জানাচ্ছি।’