কয়েকদিন ঊর্ধ্বমুখী থাকার পর অবশেষে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ বাড়ায় দুদিনের ব্যবধানে দিনাজপুরের হিলিতে দেশীয় পেঁয়াজের দাম কমেছে কেজিতে ১৫ থেকে ২০ টাকা। রমজানে নিত্যপণ্যের দাম যখন দাম ঊর্ধ্বমুখী এমন সময়ে পেঁয়াজের দাম কমায় খুশি নিম্ন আয়ের মানুষজন।
শুক্রবার সরেজমিন হিলি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে প্রতিটি দোকানেই দেশীয় পেঁয়াজের সরবরাহ বেশ ভালো। এতে করে পণ্যটির দাম আগের তুলনায় কমতির দিকে রয়েছে। দুদিন আগে প্রতিকেজি দেশীয় পেঁয়াজ যেখানে ৪০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছিল বর্তমানে এখন তা কমে প্রকারভেদে ২০ থেকে ২৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
হিলি বাজারে পেঁয়াজ কিনতে আসা ফিরোজ হোসেন বলেন, ‘একে তো রমজানে সাধারণ সময়ের তুলনায় বাড়তি পরিমাণে খরচ হয় আমাদের। এর ওপর নিত্যপণ্যের দামের ঊর্ধ্বমুখীর কারণে বেশ বিপাকের মধ্যেই পড়তে হচ্ছিল। রমজান শুরুর আগে যে পেঁয়াজ ২৫ থেকে ৩০ টাকা ছিল সেই পেঁয়াজ রমজান শুরুর ফলে দাম বেড়ে ৪০ টাকায় উঠে যায়। বাড়তি দামের কারণে বাধ্য হয়ে ক্রয়ের পরিমাণ কমাতে হয়েছিল।’
আরেক ক্রেতা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রমজানকে ঘিরে যখন পণ্যের দাম কমানোর হিড়িক লাগে। আর আমাদের দেশে রমজানকে ঘিরে দাম বাড়ানোর প্রতিযোগিতা শুরু হয়। যে পেঁয়াজ রমজানের আগেই কিনলাম ৩০ টাকায় সেই পেঁয়াজ রমজান শুরু হতেই ৪০ টাকা হয়ে যায় কীভাবে? এটি সম্পূর্ণ ব্যবসায়ীদের কারসাজি। তারাই কৃত্রিম সংকট তৈরি করে পণ্যের দাম বাড়াচ্ছেন। আবার কয়দিন না যেতেই পেঁয়াজের দাম কমে গেলো কীভাবে? এমন কী হলো, এটি কারসাজি নয়তো কী! বিষয়টি প্রশাসনের দেখা দরকার।’
হিলি বাজারের পেঁয়াজ বিক্রেতা আবুল হাসনাত বলেন, ‘দেশীয় পেঁয়াজের যথেষ্ট সরবরাহ থাকায় বেশ কিছুদিন ধরেই পেঁয়াজের দাম কমতির দিকেই ছিল। প্রতিকেজি পেঁয়াজের দাম ৩০ টাকার মধ্যেই ছিল। কিন্তু রমজান শুরুর আগের দিন থেকে পেঁয়াজের দামটা ঊর্ধ্বমুখী হতে শুরু করে।’
এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘রমজান শুরুর দিকে ক্রেতারা পেঁয়াজ ক্রয়ের পরিমাণ বাড়িয়ে দেন। যারা কিনা আগে এক থেকে দেড় কেজি পেঁয়াজ ক্রয় করছিলেন রমজানকে ঘিরে তারা সেটি বাড়িয়ে বাড়তি পরিমাণে ৫ থেকে ১০ কেজি করে পেঁয়াজ ক্রয় করছিলেন। এতে করে পণ্যটির চাহিদা বাড়ায় মোকামে পেঁয়াজের দাম বাড়িয়ে দিয়েছিলেন বিক্রেতারা। সেই সঙ্গে কৃষকরা বাড়তি দামের আশায় পেঁয়াজ বিক্রি কিছুটা কমিয়ে দিয়েছিলেন। যার কারণে মোকামেই পণ্যটির দাম বাড়ছিল ফলে আমাদেরকেও বাড়তি দামে বিক্রি করতে হচ্ছিল।’
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর দিনাজপুর কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক বোরহান উদ্দিন বলেন, ‘রমজানকে ঘিরে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম যেন স্বাভাবিক থাকে নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকে সে লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর। আমরা নিয়মিতভাবে আমাদের দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় বিভিন্ন হাট ও বাজারে অভিযান চালাচ্ছি।’