শুরু হয়েছে রমজান মাস। সারা দিন রোজা রাখার কারণে দিনের প্রায় ১৪-১৫ ঘণ্টা পানি পান না করে থাকতে হয়। তাই রমজানে শরীরে পানিশূন্যতা বা ডিহাইড্রেশন দেখা দিতে পারে।
রোজায় শরীরে পানিশূন্যতার লক্ষণ হলো বেশি বেশি তৃষ্ণা পাওয়া, গলা শুকিয়ে যাওয়া, ক্লান্ত বা দুর্বল লাগা, মুখ শুকিয়ে যাওয়া, বুক ধড়ফড় করা, মূর্ছা যাওয়া বা মাথা ব্যথা করা।
ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতালের পুষ্টিবিদ শায়লা শারমীন বলেন, ‘এমন অনেকেই আছেন, যারা সারাদিন রোজা রাখার পর ইফতারে ঠিকঠাক খাবার না খেয়ে পেট ভরে পানি পান করে থাকেন। তাদের ধারণা পানি সারা দিনের শুকিয়ে যাওয়া গলাকে ভিজিয়ে শরীরের পানিশূন্যতা দূর করবে। তাদের এই ধারণা সঠিক না। শরীরে পানিশূন্যতা বা ডিহাইড্রেশন তখনই দেখা দেবে, যখন শরীর পানি গ্রহণের চাইতে শরীর থেকে পানি বেশি বের হবে। আর না হয়, আপনি পানি কম পান করা হবে।’
রমজানে ডায়াবেটিস রোগীরা যেভাবে সুস্থ থাকবেনরমজানে ডায়াবেটিস রোগীরা যেভাবে সুস্থ থাকবেন
এই পুষ্টিবিদের মতে, এই সময়কার খাদ্যাভ্যাসের সঠিক পরিকল্পনা শরীরের পানিশূন্যতা দূর করতে পারে। রোজা রেখে শরীরের পানিশূন্যতা কমাতে যেসব বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে সেগুলো হলো:
১. ইফতারে বেশি পানি পান করা যাবে না। এ সময় পরিমিত পানি পান করুন।
২. সাহরি ও ইফতারে খাদ্যতালিকায় সুষম, উচ্চ আঁশসমৃদ্ধ খাবার রাখতে পারেন। পাশাপাশি ডিম, মাছ ও মাংস খেতে পারেন। এসব খাবারের কারণে খুব তাড়াতাড়ি ক্লান্ত বা দুর্বল হয়ে পড়বেন না।
৩. সাহরিতে চিয়া সিড ভেজানো পানি বা তোকমার শরবত কিংবা ইসুবগুল মিশিয়ে এক গ্লাস দুধ পান করতে পারেন। চিয়া সিড শরীরে পানি ধরে রাখতে সহায়তা করবে।
৪. সাহরিতে খেতে পারেন দুধ–কলা–ভাত, কিংবা ১ কাপ ননি তোলা বা লো ফ্যাট দুধ বা টকদই। এসব খাবার শরীরে পানির ভারসাম্য বজায় রাখবে।
৫. ইফতারে খেতে পারেন ফল, শসা, খেজুর, দই, দই-চিড়া, কলা-দই-চিড়া, লাচ্ছি, লাবাং, মাঠা, বিটের জুস, ডাবের পানি, লেবু-পানি, আখের গুড়ের শরবত, তরমুজ ও স্ট্রবেরি স্মুদি, বেলের শরবত। এসব পানীয় শরীরের পানিশূন্যতা কমাতে সহায়তা করবে। ইফতারে খেজুর খেলে যত উপকার মেলেইফতারে খেজুর খেলে যত উপকার মেলে
৬. সারা দিনের রোজার পর ইফতারে অল্প চিনি ও লবনের তৈরি খাবার খান। ইফতারে চা–কফির পরিবর্তে জিরা-পানি বা আদা-পানি পান করতে পারেন।
৭. তারাবির নামাজের সময় পানির বোতল নিয়ে মসজিদে যান, যাতে পানি পান করা বন্ধ না হয়।
৮. ইফতারের পর সাহরির আগ পর্যন্ত যে সময়টুকু জেগে থাকবেন, অল্প অল্প করে পানি পান করুন। এতে শরীরে পানির ভারসাম্য বজায় থাকবে।