প্রায় দুই মাস পর মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে বাংলাদেশের কক্সবাজার টেকনাফ সীমান্তে আবারও মুহুর্মুহু গোলার বিকট শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ১১টার দিকে টেকনাফ সাবরাং সীমান্তসহ পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় রাখাইন থেকে বোমা বিস্ফোরণের বিকট শব্দ শোনা গেছে। গোলার শব্দে স্থানীয় লোকজন আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন।
এদিকে, দীর্ঘদিন বন্ধের পর মিয়ানমারে বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন আরাকান আর্মির (এএ) সঙ্গে দেশটির সেনাবাহিনীর (জান্তা সরকার) মধ্য তুমুল সংঘর্ষ ফের শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে। তার আগে দীর্ঘ ১১ মাসের লড়াই-সংঘাতের পর ২০২৪ সালের ৭ ডিসেম্বর মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু টাউনশিপের ২৭০ কিলোমিটার এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিল দেশটির সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মি। এরপরও স্বস্তিতে নেই সশস্ত্র গোষ্ঠীটি। মাঝখানে প্রায় দুই মাস সংঘাত বন্ধ থাকার পর আবারও ওপার থেকে এপারে গোলাগুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে।
জানতে চাইলে টেকনাফ পৌরসভাস্থল সীমান্তের বাসিন্দা মোহাম্মদ ইসলাম বলেন, ‘সীমান্তের খুব কাছে হওয়ায় ওপারে গোলার বিস্ফোরণ হলে আমার বাড়িঘর কেঁপে ওঠে। শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টায় মিয়ানমারের গোলার শব্দ শোনা গেছে। এতে আগের মতো বাড়িঘর কেঁপে ওঠে। এতে ঘরে থাকা লোকজন আতঙ্কিত হয়ে পড়ে।’
শাহপরীর দ্বীপ বড় মাদ্রাসার শিক্ষক মো. জসিম বলেন, ‘দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর আজ (শুক্রবার) হঠাৎ মর্টারশেলের বিকট শব্দের আওয়াজে ঘুম ভেঙে গেছে। আমরা আতঙ্কে আছি। কালকে থেকে পবিত্র রমজান মাস শুরু। এ পবিত্র রমজান মাসেও সারা দিন রোজা রেখে রাতে ঘুমাতে পারবো না মনে হয়।’
টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আব্দুস সালাম বলেন, ‘মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে গোলাগুলির শব্দ এপারে শোনা যাচ্ছে বলে স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন। দীর্ঘদিন বন্ধের পর ফের সীমান্ত অশান্ত হতে শুরু করেছে।’
ওপারের গোলার বিকট শব্দের সীমান্তের এপার কাঁপছে উল্লেখ করে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, ‘আমিও দুটি মুহুর্মুহু গোলার বিকট শব্দ শুনেছি। এতে সীমান্ত কেঁপে উঠছে। দীর্ঘদিন পর আবারও শোনা যাচ্ছে ওপারের বিকট শব্দ। তবে সীমান্তে আমাদের দায়িত্বরত বাহিনীদের মাধ্যমে খোঁজখবর রাখছি।’
তবে এ বিষয়ে সীমান্তে দায়িত্বে থাকা বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এবং বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের পক্ষ থেকে কোনও মন্তব্য পাওয়া যায়নি।