ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার। ধোয়া মোছা আর নতুন রঙে রাঙানো হয়েছে চত্বর। প্রবেশ মুখ থেকে মূল বেদি, আঁকা হচ্ছে আলপনায়। এছাড়া শহীদ মিনারের আশপাশে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
মাতৃভাষার রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি আদায়ে গুলির সামনে বুক পেতে দিতে দ্বিধা করেনি এদেশের মানুষ। বায়ান্নর এই আত্মত্যাগের জন্য বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশিরা পেয়েছে অনন্য পরিচয়। তাই, ঘটা করেই ২১শে ফেব্রুয়ারি পালন করে সাধারণ মানুষ।
ভাষা শহীদদের স্মরণে এবারও প্রস্তুতি নিচ্ছে জাতি। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে চলছে ধোয়া-মোছা আর রঙের কাজ। শহীদ মিনারের বেদিসহ আশপাশে আলপনা আঁকাও চলছে। বুধবার সকালে প্রায় ৪০০ শিক্ষার্থী-শিক্ষক এ কর্মযজ্ঞ শুরু করেন।
একজন শিক্ষার্থী বলেন, ‘অবশ্যই আমাদের ভালো লাগা সৃষ্টি হয়। কারণ আলপনা এমন একটা মাধ্যম যে নকশাটা কল্পনা থেকে আসে। এটা আমাদের ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়ে ছোট একটি কাজ যেটা হয়ত আমরা আমাদের একটু সময় ব্যয় করে করতে পারছি। এর বেশি তো আমরা তাদের জন্য কিছু করতে পারব না। আমাদের শ্রদ্ধা এটাই।’
আগে সবুজ, হলুদ আর নীলসহ নানা রঙের সমাহার থাকলেও, এবার আলপনা আঁকা হচ্ছে কালো, সাদা আর লালে। আলপনার মোটিফে জুলাই বিপ্লবের প্রভাবও থাকছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক আজহারুল ইসলাম চঞ্চল বলেন, ‘১৯৫২ সালের যে চেতনা, এটাই কিন্তু অনুপ্রাণিত করেছে চব্বিশের গণআন্দোলনকে। ফলে আমরা ওটাকে চিন্তা করেছি যে সাদা কালো ও লাল। এই তিনের ভেতর দিয়ে, দেখা যায় যে গতানুগতিকতা থেকেও আমরা বের হলাম আবার এটাকে অর্থবোধক করে অনুষ্ঠানটা করলাম।’
বৃহস্পতিবার দুপুরের আগেই শেষ হবে আঁকাআঁকি। এজন্য শিক্ষার্থীদের রাতজাগা কর্মযজ্ঞ।
একজন শিক্ষার্থী বলেন, ‘এবার চারুকলার ৮ বিভাগ থেকে সবাই এসেছি, অংশগ্রহণ করেছি। আগে শহীদ মিনারে আসা হতো, শুধু ঘুরে চলে যেতাম বা ফুল দিয়ে চলে যেতাম। এই অভিজ্ঞতাটা তো কখনও হয়নি।’
শহীদ মিনার এলাকা এরই মধ্যে নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা সদস্যদের পাশাপাশি তল্লাশি চলছে ডগ স্কোয়াড দিয়ে। সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে বিভিন্ন পয়েন্টে।