ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক কয়েকজন সংসদ সদস্য উপস্থিত—এমন খবরে শনিবার দিবাগত মধ্যরাতে চট্টগ্রামের একটি বিয়ের অনুষ্ঠান ঘেরাও করেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের একদল কর্মী। পরে সেখানে কোনো সাবেক এমপিকে না পাওয়া গেলেও আটক করা হয় চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক ফখরুল আনোয়ার চৌধুরীকে। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি খাদিজাতুল আনোয়ারের চাচা।
জানা গেছে, শনিবার রাতে নগরের খুলশী এলাকার টাইগারপাসের নেভী কনভেনশন সেন্টারে ফখরুল আনোয়ারের ছেলের বিয়ের অনুষ্ঠান ছিল। কনে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মোহাম্মদ মনজুর আলমের নাতনি। বিয়েতে চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির দুই সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী ও খাদিজাতুল আনোয়ারের উপস্থিত থাকার খবর ছড়িয়ে পড়ে।
ফখরুল আনোয়ার চৌধুরীকে আটকের তথ্য নিশ্চিত করেছেন নগর পুলিশের উত্তর বিভাগের উপ-কমিশনার মুহাম্মদ ফয়সাল আহম্মেদ।
পুলিশ জানায়, রাত ৯টার দিকে হঠাৎ করেই শতাধিক যুবক নেভী কনভেনশন সেন্টারের বাইরে জড়ো হয়। এ সময় নিরাপত্তা কর্মীরা বাধা দেয়। একপর্যায়ে বিক্ষুব্ধরা সেখানে ঢুকে স্লোগান দেন ও ফখরুল আনোয়ারকে ঘিরে রাখেন। বিশৃঙ্খল অবস্থা তৈরি হলে খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে ফখরুল আনোয়ারকে আটক করে।
এদিকে, সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী ও খাদিজাতুল আনোয়ার ওই বিয়ের অনুষ্ঠানে ছিলেন—এমন খবর ছড়িয়ে পড়লেও পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সেখানে তাদের পাওয়া যায়নি। তবে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের অনেক নেতা-কর্মী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
এ ছাড়া, সাবেক মেয়র এম মনজুর আলম তাঁর নাতনির বিয়ের অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকলেও তিনি দ্রুত অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করেন।
পুলিশ কর্মকর্তা মুহাম্মদ ফয়সাল আহম্মেদ বলেন, আটক আওয়ামী লীগ নেতা ফখরুল আনোয়ারের বিরুদ্ধে কোনো মামলা আছে কিনা তা খতিয়ে দেখে গ্রেপ্তার দেখানো হবে। বর্তমানে তাঁকে খুলশী থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত অনেকের সঙ্গে কথা বলে ও ফেসবুকে এই ঘটনার ভিডিও থেকে জানা যায়, রাত ৯টার দিকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের একদল কর্মী ওই কনভেনশন সেন্টারে হাজির হয়। তখন তারা ‘আবু সাঈদ মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ’, ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাইরে’ স্লোগান দিতে থাকে।