যুক্তরাজ্য প্রবাসীদের দাবির মুখে ২০২০ সালে সিলেট-ম্যানচেস্টার রুটে চালু হয়েছিল বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের সরাসরি ফ্লাইট। এরপর থেকে সপ্তাহে নিয়মিত ৩টি ফ্লাইট চলাচল করলেও গত অক্টোবর থেকে বন্ধ হয়ে গেছে একটি। আর আগামী এপ্রিল থেকে এ রুটের টিকেট বুকিং বন্ধ রেখেছে বাংলাদেশ বিমান। ফলে এপ্রিল থেকে সিলেট-ম্যানচেস্টার ফ্লাইট বন্ধের আশঙ্কায় সিলেট ও যুক্তরাজ্যে ক্ষোভ দানা বেঁধেছে। ইতোমধ্যে দেশে-বিদেশে নানা কর্মসূচিও পালিত হয়েছে।
সূত্র জানায়, নর্থ ইংল্যান্ডে প্রায় তিন লাখ বাংলাদেশির বসবাস। এর সিংহভাগই সিলেটের। ম্যানচেস্টার থেকে সরাসরি ফ্লাইট থাকায় নর্থ ইংল্যান্ডে বসবাসকারী সিলেটিরা কোন ধরনের ভোগান্তি ছাড়াই দেশে আসা যাওয়া করতে পারছেন না।
বিশেষ করে সরাসরি এ ফ্লাইটে দেশে ফিরতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন বয়স্করা। সরাসরি এ ফ্লাইট যুক্তরাজ্যের বার্মিংহাম, নিউক্যাসল, সান্ডারল্যান্ড, গ্রেটার ম্যানচেস্টার ও স্কটল্যান্ড প্রবাসী সিলেটিদের কাছে বেশ জনপ্রিয়। যাত্রী চাহিদার কথা বিবেচনায় নিয়ে এতোদিন এ রুটে সপ্তাহের প্রতি রবি, মঙ্গল ও বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ বিমান ফ্লাইট পরিচালনা করতো।
গত অক্টোবর থেকে হঠাৎ করে সিলেট-ম্যানচেস্টার রুটের একটি ফ্লাইট কমিয়ে দেয় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। বাদ দেওয়া হয় মঙ্গলবারের ফ্লাইট। এরপর থেকে যুক্তরাজ্য প্রবাসী সিলেটিদের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি হতে থাকে। কিন্তু হঠাৎ করে মার্চ মাসের পর থেকে অর্থাৎ আগামী এপ্রিল থেকে অনলাইনে সিলেট-ম্যানচেস্টার ফ্লাইটের টিকেট বুকিং বন্ধ করে দেয় বিমান।
সূত্র জানায়, সিলেটের প্রবাসীদের পছন্দের এই ফ্লাইটটি অলাভজনক দেখিয়ে বন্ধ করে দেওয়ার পাঁয়তারা করছে বিমান। এ নিয়ে যুক্তরাজ্য প্রবাসী ও সিলেটের মানুষের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। সিলেট-ম্যানচেস্টার সরাসরি ফ্লাইট বন্ধ না করতে ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
প্রবাসীরা যুক্তরাজ্যে ও সিলেটবাসী স্থানীয়ভাবে সভা-সমাবেশ ও মানববন্ধন করে ফ্লাইট চালু রাখার দাবি জানাচ্ছেন। প্রবাসীরা এ রুটে ফ্লাইট বন্ধ না করে আগের মতো সপ্তাহে ৩ দিন ফ্লাইট চালু রাখার দাবি জানিয়েছেন। এ দাবিতে তারা ইতোমধ্যে ম্যানচেস্টারস্থ বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনারের কার্যালয়ে স্মারকলিপিও দিয়েছেন। আর সিলেটবাসীর ব্যানারে গণস্বাক্ষর কর্মসূচিও পালিত হয়েছে।
ম্যানচেস্টার প্রবাসী সিলেটের রোকন আহমদ চৌধুরী জানান, সিলেটের সাথে সরাসরি ফ্লাইট থাকায় প্রবাসীরা প্রয়োজনে স্বল্প প্রস্তুতিতে দেশে ফিরতে পারেন। বিশেষ করে পরিবারের বয়স্ক সদস্যরা বছরে দু’একবার দেশে ফিরতে চান। সরাসরি ফ্লাইট থাকায় সঙ্গী ছাড়াই তারা একা দেশে ফিরতে পারেন। এ রুটে ফ্লাইট বন্ধ হয়ে গেলে প্রবাসীরা দেশমুখী হওয়ার প্রবণতা কমবে।সিলেট পর্যটন প্যাকেজ
এ প্রসঙ্গে, সিলেট মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সিনিয়র সহসভাপতি আব্দুল জব্বার জলিল জানান, বাংলাদেশ থেকে ম্যানচেস্টারে সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনা করে একমাত্র বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। এ গন্তব্যে আগে সপ্তাহে তিনটি ফ্লাইট পরিচালনা করা হতো। গত অক্টোবর থেকে দুটি ফ্লাইট চলছে।
সপ্তাহে দুটি ফ্লাইটে অন্তত ৫০০ বাংলাদেশি দেশে ফেরেন। সে হিসাবে মাসে দুই হাজার জন দেশে আসেন। সরাসরি ফ্লাইট থাকার কারণে প্রবাসীরা নির্বিঘ্নে দেশে ফিরতে পারেন। প্রবাসীদের দেশমুখী করতে হলে এ রুটে ফ্লাইট বন্ধ নয়, আরও বাড়ানো দরকার।