ডেস্ক নিউজ: গতকালই (শুক্রবার) আর্জেন্টিনার সর্বশেষ বিশ্বকাপ জেতার ৩২ বছর পূরণ হলো। ১৯৮৬ সালের বিশ্বকাপের পর মহাকালের ক্যালেন্ডারের পাতায় গড়িয়ে চলা সময়ের স্রোতে চোখ রেখে কেবল অপেক্ষাই করে গেছে আর্জেন্টাইনরা আরেকটি শিরোপার জন্য। এবার সেই অপেক্ষার প্রহর শেষ করার স্বপ্নে বিভোর লাতিন আমেরিকার দেশটি। ফ্রান্সের অপেক্ষাটা অতদিনের নয়, এরপরও দেখতে দেখতে পেরিয়ে গেছে ২০ বছর। ২০০৬ সালে ফাইনালে ওঠা হয়েছিল তাদের, কিন্তু ফুটবল দেবতা মুখ ঘুরিয়ে নেওয়ায় উৎসবের বদলে হতাশার দেশে পরিণত হয় ফ্রান্স। রাশিয়া বিশ্বকাপ দিয়ে ১৯৯৮ সালের রঙিন মুহূর্ত ফিরে আনার স্বপ্ন এবার ফরাসিদের।
বিশ্বকাপ এলেই ফুটবল বিশ্লেষকদের চোখে ফেভারিট থাকে আর্জেন্টিনা-ফ্রান্স, যা ভক্তদের দেখায় স্বপ্ন। আজ (শনিবার) এক পক্ষের স্বপ্নভঙ্গ হচ্ছে নিশ্চিত। রাশিয়ার আসরের শেষ ষোলোতেই যে দেখা হয়ে যাচ্ছে সাবেক দুই বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের। বাংলাদেশ সময় রাত ৮টায় তাদের ম্যাচ দিয়েই শুরু হচ্ছে এবারের আসরের শেষ ষেলোর লড়াই। উত্তেজনায় ঠাসা খেলাটি সরাসরি দেখা যাবে বিটিভি, মাছরাঙা, নাগরিক টিভি, টেন টু ও টেন থ্রি চ্যানেলে। উত্তেজনা বোঝাতে অন্য কিছুর দরকার নেই, শুধু দল দুটির নামই যথেষ্ট। ইতিহাস-ঐতিহ্য তো আছেই, সঙ্গে দুই দলের খেলোয়াড়ের তালিকায় চোখ রাখলে স্পষ্ট হয়ে যাবে কাজানে মঞ্চায়িত হতে যাচ্ছে এবারের বিশ্বকাপের অন্যতম সেরা ম্যাচ। আর্জেন্টিনা আলোকিত লিওনেল মেসি, সের্হিয়ো আগুয়েরো, আনহেল দি মারিয়া, গনসালো হিগুয়েইনের আলোতে, আর ফ্রান্সের তারা আন্তোয়ান গ্রিয়েজমান, কাইলিয়ান এমবাপে, উসমান দেম্বেলে, অলিভের জিরু। দুই জয় ও এক ড্রতে ‘সি’ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন হিসেবে নকআউটে জায়গা পেয়েছে ফ্রান্স। গ্রুপে তুলনামূলক সহজ প্রতিপক্ষ থাকায় শেষ ষোলোর ম্যাচে ফরাসিদের দিতে হবে ‘আসল’ পরীক্ষা। নকআউট পর্ব নিশ্চিত হয়ে যাওয়ায় ডেনমার্কের সঙ্গে গোলশূন্য ড্রয়ের ম্যাচে দলের বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়কে বিশ্রামে রেখেছিলেন কোচ দিদিয়ের দেশম। আলবিসেলেস্তেদের বিপক্ষে সতেজ হয়ে নামতে পারবেন তারা। ফ্রান্সের গ্রুপ পর্বের হিসাব যতটা সহজ, আর্জেন্টিনার হিসাব ততটাই কঠিন। বাদ পড়ার শঙ্কায় থাকা দুইবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা শেষ ম্যাচে নাইজেরিয়ার বিপক্ষে জিতে টিকে গেছে বিশ্বকাপে। শুরু থেকেই বিবর্ণ আর্জেন্টিনার জন্য সুখবর হলো লিওনেল মেসির গোল পাওয়া। আইসল্যান্ডের বিপক্ষে পেনাল্টি মিসে আত্মবিশ্বাসে যে চিড় ধরেছিল, সেটা ঠিক হয়ে গেছে আফ্রিকান দেশটির বিপক্ষে করা দুর্দান্ত গোলে। বলার অপেক্ষা রাখে না ফ্রান্সের সবচেয়ে দুশ্চিন্তার নাম এই মেসিই। মঞ্চটা বিশ্বকাপ বলেও চিন্তিত হতে পারে ফরাসিরা। ফুটবল মহাযজ্ঞে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে যে কখনও জিততে পারেনি ফ্রান্স। লাতিন আমেরিকার দলটির মুখোমুখি হওয়া দুই ম্যাচেই হার নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে ১৯৯৮ সালের চ্যাম্পিয়নদের। বিপরীতে ‘লে ব্লুজ’ আশীর্বাদ হয়ে আছে আর্জেন্টিনার জন্য। বিশ্বকাপে ফ্রান্সকে হারানো মানেই লাতিন দেশটির ফাইনাল নিশ্চিত! ১৯৩০ ও ১৯৭৮ বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলার পথে তারা হারিয়েছিল ফরাসিদের।
অন্য একটি পরিসংখ্যান আবার আত্মবিশ্বাস জোগাচ্ছে ফ্রান্সকে। লাতিন আমেরিকার দলের বিপক্ষে বিশ্বকাপে ৭৫৭ মিনিট কোনও গোল হজম করেনি ‘লে ব্লুজ’। ১৯৮৬ সালের বিশ্বকাপে এই অঞ্চলের ব্রাজিলের বিপক্ষে সবশেষ গোল হজম করেছে তারা।
বার্তা বিভাগ প্রধান