মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিসের প্রচারের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের মোবাইল হ্যাক করেছে চীনের একদল হ্যাকার। গতকাল শুক্রবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এই তথ্য জানিয়েছেন এই পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগত এক ব্যক্তি।
রয়টার্স বলছে, এর আগে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তাঁর নির্বাচনী রানিং মেট জেডে ভ্যান্সকে টার্গেট করেও সাইবার হামলা চালায় ওই হ্যাকারের দলটি। তবে কোনো সাইবার হামলাই নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস বলছে, এ ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।
গোটা বিষয়টি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল এমন ব্যক্তিদের উদ্ধৃত করে নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, চীনের হ্যাকাররা যে বিরাট চক্রান্ত করেছিল তারই অংশ হিসেবে এই হ্যাক করার চেষ্টা করা হয়েছে। সংবাদমাধ্যমে উল্লেখ করা হয়েছে, বিশেষ সিস্টেমকে প্রয়োগ করে এই চক্রান্ত করা হয়েছিল।
তবে এসব সাইবার হামলার ব্যাপারে ওয়াকিবহাল নয় বলে জানিয়েছে ওয়াশিংটনে অবস্থিত চীনা দূতাবাস। তবে তারা বলছে, এ ধরনের সাইবার হামলা ও তথ্যচুরি কখনোই সমর্থন করে না তারা।
এ নিয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে চীনা দূতাবাসের মুখপাত্র বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট নির্বাচন আমেরিকার অভ্যন্তরীণ বিষয়। এই নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করার কোনো ইচ্ছাই নেই চীনের। এমনকি তাতে কখনো চীন হস্তক্ষেপ করবেও না।’
এ ব্যাপারে কমলা হ্যারিসের নির্বাচনী ক্যাম্পেইন থেকে মন্তব্য পাওয়া যায়নি। এ নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে এফবিআই ও মার্কিন সাইবার সিকিউরিটি ও ইনফ্রাস্টাকচার সিকিউরিটি এজেন্সি। তবে এ সংক্রান্ত বিবৃতিতে হ্যাকিংয়ের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের তথ্য প্রকাশ করা হয়নি।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ইরানি হ্যাকারদের বিরুদ্ধেও হ্যাকিংয়ের অভিযোগ উঠেছে। গত আগস্টেই জানা গিয়েছিল, রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রচারশিবিরের তথ্য হ্যাক হয়েছে। মার্কিন গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলছেন, ট্রাম্পের প্রচারশিবিরের তথ্য হ্যাক করেছে ইরানের একটি হ্যাকিং গ্রুপ। ট্রাম্পের সেসব ইমেইল চুরি করে তৃতীয় পক্ষকে দিয়েছে ওই হ্যাকিং গ্রুপ। আর সেই তৃতীয় পক্ষ হচ্ছে ডেমোক্র্যাট শিবির।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, এফবিআইসহ মার্কিন সরকারের অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থা এক যৌথ বিবৃতিতে গত আগস্টে জানায়, বিরোধ সৃষ্টি করতে এবং গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের প্রতি আস্থা নষ্ট করতে ইরান মার্কিন নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করছে। গত ১০ আগস্ট ট্রাম্পের প্রচার দলও তথ্য হ্যাকের জন্য ইরানকে দায়ী করে। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছিল তেহরান।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, গত জুলাই থেকেই হ্যাকিং গ্রুপটি বেনামি একটি উৎস থেকে ইমেইল পেতে শুরু করে। এসব ইমেইলে ট্রাম্পের প্রচারশিবিরের কার্যক্রমের অভ্যন্তরীণ তথ্য ছিল। এর পরেই তারা বুঝতে পারে যে, হ্যাকিংয়ের শিকার হয়েছে। এমনকি অজ্ঞাত এ ইমেইলে ট্রাম্পের ভাইস প্রেসিডেন্ট (রানিং মেট) পদপ্রার্থী জেডি ভ্যান্সের সম্ভাব্য দুর্বলতা নিয়েও তথ্য ছিল বলে জানা গেছে।
এসব ইমেইল মূলধারার সংবাদমাধ্যম ও সংস্থাগুলোর কাছে সরবরাহ করতে চেয়েছিল ইরানি ওই হ্যাকিং গ্রুপ। কিন্তু এতদিন সেই চেষ্টা সফল হয়নি। এবার তারা সফলতা পেল। গত কয়েক সপ্তাহে ডেমোক্র্যাটদের একজন অপারেটিভের কাছে এই ইমেইল পাঠাতে সক্ষম হন তারা। ওই হ্যাকিং গ্রুপের নাম মিন্ট স্যান্ডস্টর্ম বা এপিটি৪২।