মাদক ব্যবসার বিরোধে রাজধানীর মোহাম্মদপুর জেনেভা ক্যাম্পে গোলাগুলিতে দুই মাসে নিহত হয়েছেন পাঁচ জন। আহত হয়েছেন একশর বেশি মানুষ। এসব ঘটনায় নিয়মিত অভিযান চালানোর দাবি করা হলেও সহিংসতা কমেনি। এ কারণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এর দায় এড়াতে পারে না, বলছেন বিশ্লেষকেরা।
চাপাতি হাতে দুই পক্ষের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়ে মোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্পে। চলতি সপ্তাহেও দিনদুপুরে এভাবেই চলে সংঘর্ষ।
১৮ অক্টোবর গোলাগুলিতে ভাঙে ক্যাম্পের মসজিদের কাঁচ। তার আগের দিন গোলাগুলিতে নিহত হন শানেমাজ নামের রেস্তোরাঁ কর্মী।
স্থানীয়রা বলছেন, জেনেভা ক্যাম্পে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ বসবাস করে। সরকার পতনের পর প্রায় প্রতিদিনই ঘটছে গোলাগুলি আর সংঘর্ষ। যার প্রধান কারণ ভুইয়া সোহেল ও চুয়া সেলিম বাহিনীর দ্বন্দ্ব।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দাবি, মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণের দ্বন্দ্বেই ক্যাম্পে সহিংসতা বেড়েছে। নিয়মিত অভিযান চালানোর দাবি করলেও কেন সহিংসতা কমছে না, তার সদুত্তর নেই তাদের কাছে।
র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লে জেনারেল মুনীম ফেরদৌস বলেন, ‘আমরা জেনেভা ক্যাম্পে সহিংসতা নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন ধরনের গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত রেখেছি। অনেক ক্ষেত্রে ক্যাম্পের বাইরে থেকে অপরাধীরা এসে সহিংসতার ঘটনার পর তারা চলে যায়। তবে যেভাবেই হোক আমরা অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার জন্য গোয়েন্দা নজরদারি চালিয়ে যাচ্ছি।’
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ডিসি (মিডিয়া) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বলেন, ‘মোহাম্মদপুর বিহারি ক্যাম্পকেন্দ্রিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যেন নিয়ন্ত্রণের বাইরে না যায় সে জন্য আমাদের নিয়মিত টহল কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। সেই সঙ্গে গোয়েন্দা তৎপরতাও বাড়ানো হয়েছে।’
বিশ্লেষকেরা বলছেন, মাদক নিয়ন্ত্রণ করলে সহিংসতা কমতে পারে। তবে বাহিনীগুলোর কর্মকাণ্ড দেখে তাদের লক্ষ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন তারা।
অনুসন্ধান বলছে, জেনেভা ক্যাম্পে দিনে ৫০ লাখ টাকার মাদক বিক্রি হয়।
সমাজ ও অপরাধ বিশ্লেষক ড. তৌহিদ হক বলেন, ‘মোহাম্মদপুরে মাদক ব্যবসায় যে লাভের অংশ সেটি যে পর্যন্ত বা যার কাছ পর্যন্ত যায় সে তো চাইবে না যে এই সহিংসতা বন্ধ হোক। এ কারণে সমস্যা সমাধান করতে হলে আগে মূল হোতাকে আগে চিহ্নিত করতে হবে।’