সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল ডা. আজিজ আহমদ ভূঁঞা জানিয়েছেন, প্রধান বিচারপতির সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে— অভিযোগ ওঠা ১২ বিচারপতিকে কোনও বিচারিক বেঞ্চ দেওয়া হবে না।
হাইকোর্টে ফ্যাসিবাদী সরকারের নিয়োগ পাওয়া আওয়ামী লীগ সরকারের দোসর বিচারকদের অপসারণের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে বুধবার (১৬ অক্টোবর) বিকালে হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে এনেক্স ভবনে তিনি এ তথ্য জানান।
রেজিস্ট্রার জেনারেল ডা. আজিজ আহমদ ভূঁঞা বলেন, ‘আগামী রবিবার (২০ অক্টোবর) আদালত খুললে বিচারকদের অপসারণ সংক্রান্ত মামলা সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে তোলা হবে। ইতোমধ্যে ১২ বিচারপতিকে ছুটিতে পাঠানো হয়েছে।’
রেজিস্ট্রার জেনারেল বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একটি প্রতিনিধি দল আমার সঙ্গে দেখা করেছে। তাদের সঙ্গে দীর্ঘ সময় আমরা আলোচনা করেছি। পরবর্তী সময়ে এই বিষয় প্রধান বিচারপতির সঙ্গেও আমরা কথা বলেছি। বিচারপতিদের পদত্যাগ কিংবা অপসারণের একটি প্রক্রিয়া রয়েছে। কিন্তু আমাদের দেশে এই সংক্রান্ত কোনও আইন নেই। বিগত সরকার বিচারপতিদের অপসারণে একটি অ্যামেনমেন্ট নিয়েছিল। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট সেটি বাতিল করে দিয়েছে। এটি আবারও রিভিউর জন্য সরকার আবেদন করেছে। আগামী ২০ তারিখ রবিবার আদালত খুলবে। এটা নিয়ে ওইদিন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ রায় দেবেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘এছাড়া বিচারপতিদের পদত্যাগের যে দাবি, এ ক্ষেত্রে বিষয়টা হলো— বিচারক নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি, আবার অপসারণও করেন রাষ্ট্রপতি। এখানে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির যা করনীয় তিনি তা করেছেন। ইতোমধ্যে ১২ জন বিচারককে বেঞ্চ দেওয়া হচ্ছে না। এর মানে হচ্ছে, ২০ তারিখ তারা বিচারকাজ করতে পারবেন না। আমরা আশা করছি, ২০ অক্টোবর অ্যাটর্নি জেনারেল অফিস বিষয়টি আদালতে উত্থাপন করবে। পর্যায়ক্রমে কী হয় সেটা জানা যাবে।’
রেজিস্ট্রার জেনারেল আজিজের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর রায় আশা করি রবিবার আসবে। বিচারপতিদের সেদিনই পদত্যাগ করতে হবে। রায়ের জন্য রবিবার বিকাল পর্যন্ত আমরা অপেক্ষা করবো। হাইকোর্ট, জজকোর্টসহ দেশের বিচারালয়ে দম্ভের সঙ্গে বিক্ষোভ মিছিল করেছে। যাদের হাতে দুই হাজার শহীদের রক্তের দাগ রয়েছে। তারা চায় খুনি হাসিনাকে ফিরিয়ে আনতে। তাদের অপসারণে সুপ্রিম কোর্টের ক্ষমতা নেই। তাই আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বলবো— ভিডিও দেখে এই ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারের দাবি জানাই। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাদের গ্রেফতার করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘হাইকোর্টের ফ্যাসিস্ট ১২ বিচারপতিকে অপসারণের দাবিতে রবিবার পর্যন্ত আল্টিমেটাম দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা। রবিবার তাদের অপসারণ করা না হলে আমরা আরও কঠোর আন্দোলনের যাবো। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আমরা ফ্যাসিস্ট সরকারকে উৎখাত করেছি। আমাদের আন্দোলনের প্রতিফলনে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন হয়েছে। আমরা এ দেশে আরও কোনও ফ্যাসিস্ট সরকার দেখতে চাই না এবং ফ্যাসিবাদীদের কোনও ঠাঁই দেওয়া হবে না।’