সরকার নিত্যপণ্যের দাম বেঁধে দিলেও তোয়াক্কা করছে না কেউ। ভোক্তাদের অভিযোগ, আওয়াজ দিয়ে ঘোষণা দেওয়া হলেও ডিম কিনতে হচ্ছে চড়া দামেই। এমনকি নির্ধারিত দামও জানেন না বিক্রেতারা। পাশাপাশি সবজির দাম নিয়েও অসন্তুষ্ট ক্রেতারা।
মঙ্গলবার ডিমের উৎপাদক, পাইকার ও খুচরা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। এতে, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের বেঁধে দেওয়া দামে ডিম বিক্রি করতে রাজি হন সবাই। বুধবার থেকে বাজারে অভিযানের সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়। কিন্তু বাজারে এসবের কোনো প্রভাব নেই।
রাজধানীতে ফার্মের মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৬৫ টাকা ডজন। অথচ খুচরা পর্যায়ে সরকার নির্ধারিত দাম ১৪২ টাকা ৪৪ পয়সা। ক্রেতা-বিক্রেতা কেউই জানে না এই দাম।
কারওয়ান বাজারে আসা একজন ক্রেতা বলেন, ‘দাম আজ নির্ধারণ করলে, কাল আবার আগের মতোই হয়ে যাবে। আমরা এটা চাই না। আমরা চাই, জিনিসপত্রের দাম আরও কমুক। সরকার বেধে দিলেই হবে না। এটা দেখতে হবে, মনিটরিং করতে হবে।’
এক বিক্রেতা বলেন, ‘দাম নির্ধারণের বিষয় জানি না। এটা আমার ছেলে বলতে পারবে।’
সট: অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আব্দুস সালাম বলেন, ‘ভোক্তা পর্যায়ে ১১ টাকা ৮৭ পয়সায় খুচরা ডিম বিক্রি হবে। এই বিক্রয় কার্যক্রম মনিটরিং করার জন্য আমাদের ওপর নির্দেশ আছে। আমরা এটা মনিটরিং করব। আশা করছি ন্যায্যমূল্যের ডিম বিকেলেই বাজারে আসবে।’
রাজধানীর বাহিরেও ডিমের সরকার নির্ধারিত দাম কার্যকর হয়নি। সব জেলাতে ডিম বিক্রি হচ্ছে বাড়তি দামে। খামারিদের অভিযোগ বড় কোম্পানিগুলোর সিন্ডিকেটের কারণে ডিমের দাম বেড়েছে।
খামারিরা বলছেন, বড় কোম্পানি সিন্ডিকেট করে খাদ্য ও বাচ্চা মুরগির দাম নির্ধারণ করে। বেশি দামে কেনার কারণে তাদের পক্ষে সরকার নির্ধারিত দামে ডিম ও মুরগি বিক্রি সম্ভব হচ্ছে না। খাদ্য ও বাচ্চার দাম নির্ধারণে নীতিমালার দাবি তাদের।
যশোরাঞ্চলে বছরে ৩২ কোটি ডিমের চাহিদার বিপরীতে উৎপাদন হচ্ছে ৫০ কোটি। তারপরও দাম বাড়তি। খামারিরা উৎপাদন খরচ বাড়ার কথা বললেও ভোক্তাদের দাবি, ডিমের দাম বেড়েছে সিন্ডিকেটের কারণে।
দাম নিয়ন্ত্রণে আমদানি শুরু হলেও রংপুর ও মেহেরপুরে ১৫ টাকা এবং হিলিতে ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৪ টাকা পিস।
এদিকে, স্বস্তি নেই সবজির বাজারেও। রাজধানীর বেশিরভাগ কাঁচা বাজারে সবজির কেজি প্রায় ১০০ টাকা। কাঁচামরিচের দাম এখনও ২৪০ টাকা। অথচ এক কেজি মোটা চালের দাম ৫৫ টাকা।
একজন ক্রেতা বলেন, ‘ভোগান্তিটা সহজেই শেষ হোক, কারণ সবজির দাম সবার নিয়ন্ত্রণের বাহিরে চলে যাচ্ছে। আমরা এখন দেখছি মাছ মাংসের চেয়ে সবজির দামটাই বেশি হয়ে যাচ্ছে।’
বাজার নিয়ন্ত্রণে জেলায় জেলায় বিশেষ টাস্কফোর্স গঠন করেও সুফল মিলছে না।