জাতীয়ভাবে পালন করা হচ্ছে এমন আটটি দিবস বাতিল করছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। আজ বুধবার (১৬ অক্টোবর) অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে এই তথ্য জানানো হয়। উপদেষ্টা পরিষদের পক্ষ থেকে এই তথ্য পোস্ট করা হয়।
পোস্টে বলা হয়, বাতিল হচ্ছে জাতীয় আট দিবস। এর মধ্যে রয়েছে-
ঐতিহাসিক ৭ মার্চ
১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম দিবস ও জাতীয় শিশু দিবস
৫ আগস্ট শেখ হাসিনার ভাই শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের জন্মবার্ষিকী
৮ আগস্ট শেখ হাসিনার মা বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জন্মবার্ষিকী
১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস
১৮ অক্টোবর শেখ হাসিনার ছোট ভাই শেখ রাসেল দিবস
৪ নভেম্বর জাতীয় সংবিধান দিবস
১২ ডিসেম্বর স্মার্ট বাংলাদেশ দিবস।
জনপ্রশাসন সূত্র জানায়, ২০২৪ সালে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মিলে ৯১টি দিবস সরকারিভাবে পালনের তালিকা রয়েছে। এর মধ্যে ৮৪টি রয়েছে ইংরেজি ক্যালেন্ডারের তারিখ অনুযায়ী। বাকি সাতটি দিবসের মধ্যে তিনটি দিবস আরবি ক্যালেন্ডার অনুযায়ী। এগুলো হচ্ছে—ঈদুল ফিতর ১ শাওয়াল, ঈদুল আজহা ১০ জিলহজ, ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) ১২ রবিউল আওয়াল।
আর তিনটি দিবস রয়েছে বাংলা ক্যালেন্ডার অনুযায়ী। এগুলো হচ্ছে—বাংলা নববর্ষ উদযাপিত হয় ১ বৈশাখ, রবীন্দ্রজয়ন্তী উদযাপিত হয় ২৫ বৈশাখ এবং নজরুলজয়ন্তী উদযাপিত হয় ১১ জ্যৈষ্ঠ। এ ছাড়া একটি দিবস পালিত হবে বছরের শুরুতে সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, যার কোনও তারিখ চূড়ান্ত করা হয়নি। সেটি হচ্ছে জাতীয় টিকা দিবস, যা বছরের শুরুতে নির্ধারণযোগ্য।
এ ছাড়া এই ৮৪টি দিবসের মধ্যে শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবার-সংশ্লিষ্ট দিবসগুলোর মধ্যে রয়েছে ১৯৭১ সালে রেসক্রস ময়দানে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণ উপলক্ষে দিবসটি পালিত হয় ৭ মার্চ। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন উপলক্ষে ১৭ মার্চ পালিত হয় জাতীয় শিশু দিবস, মুজিবনগর দিবস পালিত হয় ১৭ এপ্রিল। শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের জন্মবার্ষিকী উদযাপিত হয় ৫ আগস্ট. সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মা বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জন্মবার্ষিকী ৮ আগস্ট, জাতীয় জ্বালানি নিরাপত্তা দিবস ৯ আগস্ট (শেখ মুজিবুর রহমানের শাসনামলে পাঁচটি গ্যাসক্ষেত্র কেনা হয়েছিল, এই পাঁচটি গ্যাসক্ষেত্র থেকে এখনও গ্যাস সরবরাহ করা হয়।এটিকে স্মরণীয় করতেই শেখ হাসিনা সরকার ৯ আগস্ট পালন করছিল জাতীয় জ্বালানি নিরাপত্তা দিবস হিসেবে, জাতীয় শোক দিবস ১৫ আগস্ট, শেখ রাসেল দিবস ১৮ অক্টোবর, স্মার্ট বাংলাদেশ দিবস ১২ ডিসেম্বর, জাতীয় বিমা দিবস ১ মার্চ।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্র জানিয়েছে, এসব দিবসের মধ্যে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে সরকার ঘোষিত ১৫ আগস্টের সরকারি ছুটি বাতিল করেছে অন্তবর্তীকালীণ সরকার। দিবসটি অতীতে সরকারিভাবে পালিত হলেও এ বছর তা হয়নি। দিবসটি বাতিলও করেনি সরকার। এ বছর ৮ আগস্ট বর্তমান সরকারের দায়িত্বভার গ্রহণের পর প্রথমই আসে ১৫ আগস্ট। দিবসটি কীভাবে ইউনূস সরকার পালন করবে, তা নিয়ে দেশব্যাপী ব্যাপক আলাপ-আলোচনা শুরু হলে সরকার জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ঘোষিত ১৫ আগস্টের ছুটি বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেয়।
অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের প্রথম বৈঠকেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। পরে এ বিষয়ে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, উপদেষ্টা পরিষদের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর সংলাপে ব্যাপক ঐকমত্যের ভিত্তিতে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ঘোষিত ১৫ আগস্টের সাধারণ ছুটি বাতিলের বিষয়টি উপদেষ্টামণ্ডলীর বৈঠকে অনুমোদিত হয়েছে।