ভিসা ইস্যু করার ক্ষেত্রে কঠোর বিধি-বিধান যুক্ত করতে যাচ্ছে ইউরোপের দেশ পোল্যান্ড৷ ভিসা ইস্যু করার ক্ষেত্রে কোনো কর্মকর্তা যাতে কোনো ধরনের অনিয়ম বা অর্থের লেনদেন করতে না পারে, সেজন্য এমন কঠোর অবস্থান নিতে যাচ্ছে দেশটি৷
১০ অক্টোবর দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী রাডোস্লাভ সিকরস্কি এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন৷
গত বছর এক তদন্তে দেখা গেছে, দেশটির সাবেক রক্ষণশীল সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা অর্থের বিনিময়ে রাশিয়া এবং এশিয়া ও আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের নাগরকিদের পোলিশ ভিসা দিতে কনস্যুলেটগুলোর ওপর চাপ দিয়েছিল৷ সেই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে৷
পোল্যান্ড বিজনসে হারবার প্রোগ্রাম নামের একটি কর্মসূচির মাধ্যমে প্রতিবেশী দেশ বেলারুশ থেকে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে দক্ষ জনবল নিয়োগ দিত পোল্যান্ড৷ সেই কর্মসূচিটিও স্থগিত করেছে সরকার৷ এমনকি, মানবিক কারণে ভিসা দেওয়ার নিয়ম-কানুনও সংশোধন করা হচ্ছে৷
২০১৫ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং ন্যাটো সদস্য দেশটির ক্ষমতায় ছিল রক্ষণশীল ও জাতীয়তাবাদী রাজনৈতিক দল আইন ও বিচার পার্টি (পিআইএস)৷ ওই সরকারের আমলে ভিসা ইস্যুতে ব্যাপক দুর্নীতির প্রমাণ মিলেছে৷
১০ অক্টোবর দেশটির সুপ্রিম অডিট অফিসের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত শরতে সংবাদমাধ্যমে বলা হয়েছে, পিআইএস সরকার আমলে এশিয়া ও আফ্রিকায় থাকা পোলিশ কনস্যুলেটগুলো বড় অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে ভিসা ইস্যু করেছিল৷
এতে আরো বলা হয়েছে, ভিসা আবেদনের প্রক্রিয়াকে গতিশীল করতে কিছু পোলিশ কনস্যুলেটকে প্রভাবিত করার কাজে যুক্ত ছিল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়৷ ২০২২ সালের নভেম্বর থেকে ২০২৩ সালের মে পর্যন্ত একটি অস্বচ্ছ এবং দুর্নীতি পরায়ণ একটি ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছিল শুধু ভিসা ইস্যু করার জন্য৷
সুপ্রিম অডিট অফিসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বেসরকারি কিছু মধ্যস্থতাকারী সংস্থা এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত ছিল৷ সংস্থাগুলো অর্থের বিনিময়ে ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে এ বছরের মার্চ পর্যন্ত চার হাজার ২৫০টি ভিসা ইস্যুর সঙ্গে জড়িত ছিল৷ প্রতিটি ভিসার জন্য আবেদনকারীর কাছ থেকে সাত হাজার ইউরো করে অর্থ নেয়া হয়েছে৷
২০২৩ সালের আগস্টে ওই সময়ের পোলিশ উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী পিওতর ভারভজিককে হঠাৎ করে বরখাস্ত করা হয়৷ সংবাদমাধ্যমগুলো তখন ওই রাজনীতিবিদকে সিস্টেমের পিছনে মাস্টারমাইন্ড হিসাবে আখ্যায়িত করেছিল৷ এ বছরের জানুয়ারিতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়৷ দুর্নীতির অভিযোগে তার বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে৷