ইমার্জিং এশিয়া কাপ শুরু হতে যাচ্ছে ১৮ অক্টোবর থেকে, সে টুর্নামেন্টের জন্য আজ দল ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। কিন্তু দলে চোখ রেখেই অবাক হতে হবে দেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের। ১৫ জনের স্কোয়াডের ৮ ক্রিকেটারই যে এরই মধ্যে জাতীয় দলে খেলে ফেলেছেন! কেউ কেউ তো জাতীয় দলে নিয়মিতও হয়ে গেছেন।
টুর্নামেন্টটার মূল উদ্দেশ্যই ছিল, এশিয়ার তরুণ ক্রিকেটারদের একটা মঞ্চ তৈরি করে দেওয়া। কিন্তু বাংলাদেশের স্কোয়াডে চোখ রাখলে প্রশ্ন উঠতে পারে – ঘুরেফিরে একই মুখগুলোকে এসব টুর্নামেন্টে পাঠানোর কারণ কী পাইপলাইনের জীর্ণ দশা?
কে কে আছেন এই দলে? সেই ২০২০ সালে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপজয়ী বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক আকবর আলী এই দলের অধিনায়ক। তিনি এখনো জাতীয় দলে সুযোগ না পেলেও সহ-অধিনায়ক সাইফ হাসান এরই মধ্যে বাংলাদেশ দলের হয়ে ৬টি টেস্ট আর ৫টি টি-টোয়েন্টি খেলে ফেলেছেন।
পারভেজ হোসেন ইমন তো মাত্রই ভারতে তিন টি-টোয়েন্টির সিরিজে প্রথমবার বাংলাদেশের জার্সি গায়ে জড়িয়েছেন। বছর দেড়েক ধরে বাংলাদেশের সাদা বলের ক্রিকেটের দল দুটিতে নিয়মিত হয়ে ওঠা তাওহীদ হৃদয়কেও এখনো ‘ইমার্জিং’ বিবেচনা করছেন নির্বাচকেরা। জানা গেছে, আফিফ হোসেন ছুটিতে বলে তাঁর জায়গায় হৃদয়কে নেওয়া হয়েছে।
এর বাইরে ৪ ওয়ানডে ও ১৯ টি-টোয়েন্টি খেলা শামিম হোসেন পাটওয়ারি আছেন। গত বছর এশিয়ান গেমসে বাংলাদেশ দলের হয়ে ৩টি ম্যাচ খেলা রিপন মন্ডল আছেন। এমনকি বাংলাদেশের হয়ে তাঁর ২ ওয়ানডে ও ১৩ টি-টোয়েন্টির সর্বশেষটি ২০১৮ সালে খেলা ২৮ বছর বয়সী আবু হায়দার রনিও আছেন এই দলে।
শুধু কী মূল স্কোয়াড? রিজার্ভে দেখুন, সেখানে সবাই জাতীয় দলে নিয়মিত বা জাতীয় দলের আশপাশে থাকা মুখ – জাকের আলী অনিক, শেখ মেহেদী, তানজিম হাসান সাকিব, নাসুম আহমেদ।
অথচ একই টুর্নামেন্টের জন্য ভারত, পাকিস্তান এমনকি আফগানিস্তানের দলে তাকান, বেশিরভাগই অপরিচিত নাম। ভারতের স্কোয়াডে অধিনায়ক তিলক ভার্মার বাইরে জাতীয় দলে জার্সি গায়ে জড়ানো খেলোয়াড় বলতে শুধু অভিষেক শর্মা, রাহুল চাহার আর সাই কিশোরকেই চোখে পড়বে। এঁদের কেউই অবশ্য জাতীয় দলে নিয়মিত নন।
পাকিস্তান স্কোয়াডে অধিনায়ক মোহাম্মদ হারিসের বাইরে পাকিস্তানের জার্সিতে দেখেছেন বলে মনে করতে পারবেন শুধু আব্বাস আফ্রিদি আর শাহনেওয়াজ দাহানিকে। আফগানিস্তান দলে পরিচিত মুখ বলতে শুধু করিম জানাতের বাইরে কদিন আগেই দলে সুযোগ পাওয়া আল্লাহ মুহাম্মদ গজনফর এর লেগ স্পিনার কায়েস আহমেদ আছেন। শ্রীলঙ্কার চিত্রটাও একই।
শুধু বাংলাদেশ দলেই স্কোয়াডের ৫৩% খেলোয়াড় জাতীয় দলে অভিজ্ঞ, রিজার্ভসহ হিসাব করলে হারটা দাঁড়ায় ৬৩%। জাতীয় দল, এইচপির সঙ্গে এই ‘এ’ দলে ঘুরেফিরে একই মুখের উপস্থিতি তো পাইপলাইন সম্পর্কে ভালো ধারণা দেওয়ার কথা নয়।
৮ দলের ইমার্জিং এশিয়া কাপ এবারই প্রথম হচ্ছে টি-টোয়েন্টি সংস্করণে। বাংলাদেশের গ্রুপে অন্য তিন দল – শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তান ও হংকং।
বাংলাদেশ স্কোয়াড:
আকবর আলী (অধিনায়ক), সাইফ হাসান (সহ-অধিনায়ক), পারভেজ হোসেন ইমন, নাঈম শেখ, জিশান আলম, তাওহীদ হৃদয়, শামিম হোসেন, মাহফুজুর রহমান রাব্বি, রাকিবুল হাসান, আলিস আল ইসলাম, ওয়াসি সিদ্দিকী, আবু হায়দার রনি, রেজাউর রহমান রাজা, রিপন মন্ডল, মারুফ মৃধা।
রিজার্ভ: জাকের আলী অনিক, শেখ মেহেদী হাসান, তানজিম হাসান সাকিব, নাসুম আহমেদ।
প্রতিনিধি