সম্প্রতি সিলেটে মোহামেডান স্পোটিং ক্লাবের নতুন কমিটি গঠনেও এমন দৃশ্য দেখা গেছে। স্বৈরশাসকের দোসর ও তাদের সময়ে সুবিধাভোগেীদের সাথে বসে ক্লাবের নতুন কমিটি গঠন প্রক্রিয়ায় সরাসরি জড়িত বিএনপির প্রভাবশালী এক নেতা ও সাবেক জনপ্রতিনিধি। তাঁরই মধ্যস্ততায় এই কমিটি করা হয়েছে।এতে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের সুবিধাভোগীদের পুনর্বাসন করা হয়েছে। যারা আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সকল ধরণের সুযোগ সুবিধা নিয়েছেন, ভোগ করেছেন।
এমনকি বিএনপি নেতাকর্মীদের দমন-পীড়নে আওয়ামী সরকারের নিয়ামক শক্তি হিসেবে কাজ করেছেন। যদিও বিএনপির হাইকমাণ্ডের এ ক্ষেত্রে কড়া নির্দেশনা রয়েছে। বিএনপির এ নির্দেশনায় বলা হয়- ‘স্বৈরশাসক গোষ্টীর সাথে জড়িয়ে যারা ব্যবসা বাণিজ্য করেছেন, তাদের দলে না ভেড়াতে কিংবা সুবিধা না দিতে।’ কিন্তু সিলেটের নেতারা চলছেন উল্টো স্রোতে। দলের কঠোর নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে সিলেটে স্বৈরাশাসকের সুবিধাভোগীদের নিয়ে মিলেমিশে যেনো ব্যবসা শুরু করেছেন বিএনপির সুবিধাভোগী নেতারা।এমনকি স্বেরশাসকের দোসর ও সুবিধাভোগীদের ব্যবসা-বাণিজ্য রক্ষা এবং তাদের পুণর্বাসনেও তৎপর তারা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ ও বিএনপি মিলেমিশে করা হয়েছে মোহামেডান স্পোটিং ক্লাবের কমিটি। এমনকি যারা খেলার সঙ্গে যুক্ত নয়, তাদের অনেককে কমিটিতে রাখা হয়েছে। ইতোমধ্যে শিল্পপতি রাগিব আলীকে সভাপতি এবং বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ও সিলেট মহানগরের ভারপাপ্ত সভাপতি মিফতা সিদ্দিকীকে সাধারণ সম্পাদক করে ১০ অক্টোবর গঠিত এই কমিটির প্রথম সদস্য হিসেবে রয়েছেন বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আরিফুল হক চৌধুরী এবং সিনিয়র সহসভাপতি পদে রাখা হয়েছে বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আবুল কাহের শামীমকে।
সদ্য গঠিত মোহামেডান স্পোটিং ক্লাবের কমিটি গঠনের শুরুতেই ফাটল ধরেছে। ইতোমধ্যে কমিটি থেকে চার সহ সভাপতিসহ ৭জন নিজেদের পদ প্রত্যাখ্যান করেছেন।
নাম না প্রকাশ করার শর্তে সিলেট মহানগর বিএনপির এক নেতা এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, সিলেট বিএনপির নেতারা এখন সুবিধা নিতে গিয়ে ফ্যাসিস্ট সরকারের নেতা-ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসন করতে মরিয়া। কেবল মোহামেডান স্পোটিং ক্লাব-ই নয়, আওয়ামী লীগ সরকারের সুবিধাভোগীদের অতিযত্মে লালন করছেন তারা।
সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ড. আহমদ আল কবীরের মালিকানাধীন সীমান্তিক এখন বিএনপির এক প্রভাবশালী নেতার ছত্রছায়ায় পরিচালিত হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটির দেখভালের দায়িত্বে আছেন প্রভাবশালী ওই বিএনপি নেতা।
এছাড়া সিলেটের আরো বেশ কয়েকটি দামিদামি হোটেল রেস্তোরা বিগত দিনে আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে মিলেমিশে ব্যবসায় করলেও সেসব প্রতিষ্ঠানের কর্ণধাররা এখন বিএনপির ছত্রছায়ায় চলে এসেছেন। সিলেট চেম্বারের সাবেক এক পরিচালকের অভিজাত একটি পার্টি সেন্টারও বিএনপি নেতাদের জন্য উন্মোক্ত করে দেওয়া হয়েছে। অথচ ওই পার্টি সেন্টারের মালিক সম্প্রতি গ্রেফতার হওয়া এক আওয়ামী লীগ নেতার সঙ্গে প্যানেলভূক্ত হয়ে সিলেট চেম্বারে নির্বাচন করেন। এমন কী তার ছত্রছায়ায় পরিচালিত হয়ে আসছিলেন। এখন বিএনপির নেতারাও সুবিধাভোগের জন্য সেসব প্রতিষ্ঠানকে মুশকিল দূর করতে ছায়া দিয়ে যাচ্ছেন, বলে অভিযোগ রয়েছে।