দীর্ঘ সাড়ে সাত ঘণ্টা জেরার পর অবশেষে মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারীকে ছেড়ে দিয়েছে কুয়ালালামপুর বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন পুলিশ। ইমিগ্রেশন ভোগান্তি পেরিয়ে শেষ পর্যন্ত তাই মালয়েশিয়ায় প্রবেশ করতে সক্ষম হয়েছেন জনপ্রিয় এই ইসলামি বক্তা। শনিবার (১১ অক্টোবর) রাত ২টার দিকে মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারীর ব্যাক্তিগত সহকারী মো. মুরাদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানিয়েছেন, মিজানুর রহমান আজহারীকে বিমানবন্দরে আলাদা কক্ষে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এরপর স্থানীয় সময় শনিবার (১১ অক্টোবর) রাত ২টার দিকে আজহারীকে দেশটিতে প্রবেশ করতে দিয়েছে ইমিগ্রেশন পুলিশ। এর আগে স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিটে ফ্লাইট থেকে নামার পর মালয়েশিয়ায় প্রবেশকালে বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশন পুলিশের জেরার মুখে পড়েন মিজানুর রহমান আজহারী। তাকে আলাদা কক্ষে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
দেশটির ইমিগ্রেশন পুলিশ সূত্র বলছে, মিজানুর রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তবে, কেন তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলো সে ব্যাপারে স্পষ্টভাবে কিছু জানা যায়নি। পুলিশ বলছে, মালয়েশিয়ার পুলিশ হেডকোয়ার্টারে তার নামে বিগত সরকারের আমলের একটি অভিযোগ রয়েছে। তবে তদন্তের স্বার্থে পুলিশের পক্ষ থেকে এর বেশি কিছু জানানো হয়নি।
দীর্ঘ সাড়ে চার বছর পর মালয়েশিয়া থেকে গত ২ অক্টোবর দেশে ফেরেন জনপ্রিয় ইসলামি বক্তা মিজানুর রহমান আজহারী। শুক্রবার (১১ অক্টোবর) আবার মালয়েশিয়া ফিরবেন বলে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক পোস্টে জানান তিনি।
ওই ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেন, দীর্ঘ পাঁচ বছর পর সংক্ষিপ্ত সফরে দেশে এসেছিলাম। বেশিরভাগ সময় পরিবারের সাথেই কাটিয়েছি। এরই মাঝে বিভিন্ন ঘরানার আলেম-ওলামা ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের নিয়ে একটি ক্লোজ মিট-আপ প্রোগ্রাম করেছিলাম। আলহামদুলিল্লাহ, সত্যিই সে-দিনটি বেশ উপভোগ্য ছিল। তবে শর্ট নোটিশে প্রোগ্রামটি আয়োজনের কারণে অনেক প্রিয় ভাই আসতে পারেননি। আবার কিছুটা তাড়াহুড়ো করে দাওয়াত দেয়ার কারণে, বেখেয়ালবশত অনেকে বাদ পড়েছেন। আশাকরি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। পরবর্তীতে সবার সাথে সাক্ষাতের প্রত্যাশা রইলো।
মাওলানা মিজানুর রহমান লিখেন, আজ মালয়েশিয়া চলে যাচ্ছি। মাস খানেক পর আবারও দেশে ফিরবো ইনশাআল্লাহ। তখন আইনশৃঙ্খলা, জননিরাপত্তা, প্রটোকল, লোকেশন সিলেকশন, শ্রোতা ধারণ ক্ষমতা, অর্গানাইজিং ক্যাপাসিটিসহ সবকিছু অনুকূল হলে, দেশজুড়ে বিভাগীয় পর্যায়ে হয়ত কয়েকটি প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করতে পারি। তবে, সব কিছুই নির্ভর করবে উপযুক্ত পরিবেশ ও পরিস্থিতির ওপর।
ওয়াজ-মাহফিল নিয়ে নিজের ওই ফেসবুক পোস্টে জনপ্রিয় এ বক্তা লিখেন, আমি এ জমিনে কোরআনের আলো ছড়িয়ে দিতে চাই পরিকল্পিতভাবে। তাই আগের মতো জেলায় জেলায় গণহারে তাফসির প্রোগ্রাম করতে চাচ্ছি না। আউটডোর প্রোগ্রাম সীমিত করে, কিছু ইনডোর প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করতে চাই। পাবলিক ইভেন্ট ছাড়াও অ্যাকাডেমিক এবং প্রাতিষ্ঠানিক কাজে যুক্ত হতে চাই। এসব স্বপ্ন বাস্তবায়নে আপনাদের সহযোগিতা প্রয়োজন। শিগগিরই এসব প্রকল্পের ঘোষণা আসবে ইনশাআল্লাহ। দোয়ায় রাখবেন।