প্রয়াত আল-কায়েদা প্রধান ওসামা বিন লাদেনের ছেলে ওমর বিন লাদেনকে অবিলম্বে ফ্রান্স ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে দেশটির সরকার। গতকাল মঙ্গলবার ফরাসি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ তথ্য জানান।
বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে করা এক পুরোনো মন্তব্যের জেরে তাঁকে এ নির্দেশ দিয়েছে ফ্রান্স সরকার।
৪৩ বছরের ওমর বিন লাদেনের জন্ম সৌদি আরবে। তাঁর শৈশব কেটেছে সেখানেই। পরে তাঁর জীবনের কিছু সময় কাটে সুদানে ও আফগানিস্তানে।
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম জানিয়েছে, ১৯ বছর বয়সে বাবা ওসামা বিন লাদের সঙ্গ ত্যাগ করেছিলেন ওমর। এরপর ২০১৬ সাল থেকে তিনি উত্তর ফ্রান্সের নরম্যান্ডিতে থাকতে শুরু করেন এবং ছবি আঁকা শুরু করেন। বলা হয়ে থাকে ছবি আঁকার দক্ষতা বাড়াতেই তিনি ফ্রান্সে থিতু হয়েছিলেন।
ফ্রান্সের নতুন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ব্রুনো রতাইয়ু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে লিখেছেন, ওমর বিন লাদেন একজন ব্রিটিশ নাগরিকের স্বামী হিসেবে নরম্যান্ডির ওর্নে বাস করতেন। গত বছর তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সন্ত্রাসবাদের পক্ষ সমর্থন করে মন্তব্য করেছিলেন। ওই মন্তব্যের কারণে ওর্নের প্রশাসনিক প্রধান তাঁর বিরুদ্ধে ফ্রান্স ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশ জারি করেছেন।
দালতও এই প্রশাসনিক সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেছে বলেও জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ব্রুনো রতাইয়ু। তিনি বলেন, ‘জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এই পদক্ষেপ জরুরি ছিল বলে মন্তব্য করেছে আদালত।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও জানান, ওমর যাতে ভবিষ্যতেও ফ্রান্সে ফিরতে না পারেন, সে জন্য একটি নিষেধাজ্ঞাপত্রে স্বাক্ষর করেছেন তিনি।
ফ্রান্স ছাড়ার নির্দেশ জারির পর ওমর বিন লাদেন ফ্রান্স ত্যাগ করেছেন কি না, সে ব্যাপারে কিছু জানা যায়নি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও এ ব্যাপারটি স্পষ্ট করেননি।
২০০৬ সালে ব্রিটিশ নাগরিক জেন ফেলিক্স-ব্রাউনিকে বিয়ে করেন ওমর। তাঁদের এই বিয়ের খবর প্রকাশ্যে আসে ২০০৭ সালে। বিয়েটি সেই সময়ে বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছিল। কারণ জেন ছিলেন ওমরের চেয়ে ২০ বছরের বড়। ওমরকে বিয়ে করার আগে তাঁর পাঁচবার বিবাহবিচ্ছেদ হয়েছে। তাঁর নাতি–নাতনিও রয়েছে।
ওমরকে বিয়ে করার পর মুসলিম নাম গ্রহণ করেন জেন। নিজের নাম রাখেন জেইনা মুহাম্মদ। এরপর ওমর–জেইনা দম্পতি যুক্তরাজ্যে বসবাসের চেষ্টা করলেও ব্রিটিশ সরকার তাঁদের আবেদন গ্রহণ করেনি।
সৌদি ধনকুবের ওসামা বিন লাদেন ২০১১ সালের এপ্রিলে পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদে যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ বাহিনীর এক অভিযানে নিহত হন। জীবদ্দশায় তাঁর একাধিক স্ত্রী ছিল এবং তাঁদের ঘরে ২০ জনের বেশি সন্তান রয়েছে। ওমর বিন লাদেন তাঁদেরই একজন।