ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর বিদেশি কোনও সরকারপ্রধান হিসেবে প্রথম বাংলাদেশে আসলেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম। প্রায় পাঁচ ঘণ্টার ব্যস্ত সময় পার করে ঢাকা ছেড়েছেন তিনি।
শুক্রবার (৪ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৭টার কিছু সময় আগে আনোয়ার ইব্রাহিমকে বহনকারী বিমান ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ছেড়ে যায়। দুপুর সোয়া ২টায় তিনি বাংলাদেশে অবতরণ করেছিলেন।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমকে বহনকারী বিমান সন্ধ্যা ৭টার কিছু সময় আগে উড্ডয়ন করেছে।
নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আস্থার নিদর্শন হিসেবে পূর্ব নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী পাকিস্তানে তিন দিনের রাষ্ট্রীয় সফর শেষে ফেরার পথে মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রীসহ ৫৮ সদস্যের প্রতিনিধি বহর নিয়ে বাংলাদেশে আসেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম। দুই নেতার মধ্যে চার দশকের বন্ধুত্ব ও পরিচিতি রয়েছে বলে তাদের আলাপচারিতায় উঠে আসে।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন পরে ৮ আগস্ট অধ্যাপক ইউনূস অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন। তাকে অভিনন্দন জানিয়ে প্রথম ফোন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রায় দুই মাসের মাথায় বিদেশি কোনও সরকার প্রধানের প্রথম সফরেও ঢাকায় এলেন তিনি।
শুক্রবার বেলা আড়াইটার দিকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। বিমানবন্দরে গার্ড অব অনারে আনুষ্ঠানিকতা সারার পর কিছু সময়ের জন্য একান্ত আলাপে বসেন দুই সরকার প্রধান। এরপর একই গাড়িতে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের স্থান হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের পথ ধরেন তারা।
বৈঠকের পর যৌথ সংবাদ সম্মেলনে আসেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস ও প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম। এরপর চা চক্র পর্ব শেষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে বঙ্গভবনে যান তিনি। বঙ্গভবনের আনুষ্ঠানিকতা সেরে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে দেশের পথ ধরেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী। অতিথিকে বিদায় জানাতে বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টা ইউনূসসহ সরকারের শীর্ষ ব্যক্তিরা।
বৈঠক ও আনুষ্ঠানিকতায় ভরপুর সংক্ষিপ্ত এই সফরে দুই দেশের সম্পর্ক, ব্যবসা ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির বিষয়ে কার্যকর আলোচনা হয়েছে। শ্রমিক হিসেবে মালয়েশিয়া যাওয়ার উদ্যোগ নিয়ে ব্যর্থ হওয়া ১৮ হাজার বাংলাদেশিকে আবারও মালয়েশিয়া গমনের সুযোগ দেওয়া হবে বলে ঘোষণা করেন মালয় অতিথি।
মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ৫৮ সদস্যের প্রতিনিধি দলে সেদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ মন্ত্রী, পরিবহন উপমন্ত্রী, ধর্ম বিষয়ক উপমন্ত্রী, দুজন সংসদ সদস্য এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাসহ আরও কিছু প্রতিনিধি ছিলেন।