Home » মাহমুদুর রহমানের কারাগারে যাওয়া নিয়ে যা বললেন আসিফ নজরুল

মাহমুদুর রহমানের কারাগারে যাওয়া নিয়ে যা বললেন আসিফ নজরুল

দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের কারাগারে যাওয়া নিয়ে আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেছেন, মাহমুদুর রহমান সাজা স্থগিতের আবেদন না করায় আমাদের কিছু করার সুযোগ ছিল না। তিনি যদি আবেদন করতেন অবশ্যই আমরা তার সাজা স্থগিতের সুপারিশ করতাম।

বুধবার (২ অক্টোবর) এক ভিডিও বার্তায় তিনি এ কথা বলেন।

ভিডিও বার্তায় আসিফ নজরুল বলেন, ‘সাংবাদিক মাহমুদুর রহমান একটি মামলায় জামিন চাইতে গিয়েছিলেন। তারপর তিনি কারাগারে আছেন। এ ঘটনা অনেককে দুঃখ দিয়েছে। কাউকে ক্ষুব্ধ করেছে। আপনাদের কাছে মনে হয়েছে, ছাত্র-জনতার বিপ্লবের পর আসা সরকারের সময় কেন ফ্যাসিবাদবিরোধী লড়াইয়ের অন্যতম অগ্রনায়ক মাহমুদুর রহমান কারাগারে আছেন।’

শেখ হাসিনার সরকার মাহমুদুর রহমানকে ভুয়া মামলায় শাস্তি দেয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমি মাহমুদুর রহমানকে অনেক শ্রদ্ধা করি। এ দেশে শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদী শাসন ছিল। সেটার বিরুদ্ধে তিনি বুদ্ধিবৃত্তিক লড়াইয়ের সূচনা করেছিলেন। এ জন্য তাকে নির্যাতন-নিপীড়ন ভোগ করতে হয়েছে। তাকে একটা অবিশ্বাস্য ও চরম ভুয়া মামলায় ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার সরকার শাস্তি দেয়।’

আসিফ নজরুল বলেন, ‘এ মামলার বিচার কাজ সম্পন্ন হয়ে গিয়েছিল। শাস্তি দেওয়া হয়েছিল। তিনি দেশে আসার আগে তার স্ত্রীর বিরুদ্ধেও ভিত্তিহীন মামলা হয়। তিনি সেই মামলায় সাজা স্থগিত চেয়ে আপিল করার জন্য আবেদন করেছিলেন। এই আবেদন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে করা হয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যখন আমাদের অভিমত চায়, আমরা ইতিবাচকভাবে দেখার জন্য জোর সুপারিশ করি। আমাদের সুপারিশের ভিত্তিতে তার সাজা স্থগিত করে আপিলের সুযোগ দেওয়া হয়।’

তিনি বলেন, ‘মাহমুদুর রহমান যে মামলা শাস্তি পেয়েছেন, জেলে আছেন, একই মামলায় আরেকজন বরেণ্য সাংবাদিক শফিক রেহমানেরও সাজা হয়। তিনি সাজা স্থগিত চেয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন। আমাদের মতামতের ভিত্তিতে তার সাজা স্থগিত করে আপিল করার জন্য এপ্রুভ করা হয়। মাহমুদুর রহমান এটা করেন নাই। তার আত্মসম্মানবোধ অত্যন্ত স্ট্রং। তিনি খুবই দৃঢ়চেতা মানুষ। প্রচণ্ড দেশপ্রেমিক। হয়তো এসব কারণে তিনি সাজা স্থগিত চেয়ে আপিলের জন্য আবেদন করেন নাই। এটা করার সুযোগ কোনও মন্ত্রণালয়ের বা সরকারেরও ছিল না।’

যে আদালত তাকে শাস্তি দিয়েছিলেন, সেই আদালতে তিনি জামিন চেয়েছিলেন। আমাদের ফৌজদারি কার্যবিধিতে আছে, যদি কোনও আদালত কাউকে এক বছরের বেশি শাস্তি দেয়, তাহলে সেই আদালত দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তিকে জামিন দিতে পারবেন না। কিন্তু এর ওপরের আদালতে আবেদন করা হলে সেই আদালত জামিন দিতে পারবেন। মাহমুদুর রহমানের আইনজীবী যাতে জজ আদালতে আবেদন করতে পারেন, সে জন্য রায়ের দিনই দ্রুততার সঙ্গে আদালতের রায়ের কপিসহ সব কাগজপত্র বুঝিয়ে দেওয়া হয়। তিনি যে কোনও কারণেই হোক, ওই আদালতে এখনও জামিনের আবেদন করেননি। আবেদন করলে ওই আদালতের জামিন দেওয়ার এখতিয়ার আছে। সেখানে তার জামিন পাওয়ার পথ প্রশস্ত হবে। তিনি মুক্তভাবে তার দেশপ্রেম থেকে সাংবাদিক কিংবা বুদ্ধিজীবী হিসেবে ভূমিকা পালন করতে পারবেন বলে প্রত্যাশা করছি।’

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *