Home » বন্যার পানি কমতে শুরু হলেও দুর্ভোগ কমেনি

বন্যার পানি কমতে শুরু হলেও দুর্ভোগ কমেনি

নিজস্ব প্রতিনিধি: সিলেট এর মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ কয়েকটি স্থানে বন্যার পানি কমলেও মানুষের দুর্ভোগ কমেনি। কোথাও বিধ্বস্ত বাড়িঘর মেরামত করতে না পারায় দুর্গতরা ঘরে ফিরতে পারছেন না। আবার কোথাও পানিবাহিত রোগ ছড়িয়ে পড়ছে। হাওয়ার ও নদীতে মাছ মরে ভেসে ওঠার খবরও পাওয়া গেছে। আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর

মৌলভীবাজারে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে শুরু করেছে। বসতভিটা থেকে পানি নেমেছে। এ অবস্থায় ক্ষতিগ্রস্তরা বাড়িঘর মেরামতের চেষ্টা করছেন। কারণ মেরামত না করে অনেকেই আশ্রয় কেন্দ্র থেকে ফিরতে পারছেন না। গতকাল সরেজমিনে রাজনগর উপজেলার ক্ষতিগস্ত বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, কয়েকটি নিচু এলাকার বসতভিটায় এখনো পানি রয়েছে। বিভিন্ন এলাকার টিনশেড ঘরের অনেকেই খুজে পাচ্ছে না বলে জানান, প্রবল স্রোত তাদের ঘরবাড়ি ভেঙে সবকিছু নিয়ে গেছে। এখন সবাই পথে বসা অবস্থায়। ঘর মেরামত করার সামর্থ্য নেই। কাঁচা ঘরের মালিক শাহিন জানান, তার বসতভিটা থেকে পানি নেমেছে, তবে বেড়া ভেঙে যাওয়ায় ঘরে উঠতে পারছেন না।”

“এদিকে মনু নদের পানি কমতে শুরু করলেও ভাঙনস্থান দিয়ে বেরিয়ে যাওয়া পানি এশিয়ার বৃহত্তম হাওর হাকালুকি ও রাজনগরের কাউয়াদিঘিতে গিয়ে পড়ায় হাওরাঞ্চলে পানি অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেখানে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার নিচ্ছে।”

হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার দীঘলবাক ও ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের প্রায় ৩৫টি গ্রামের বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করছে। গতকাল থেকে পানি কমছে। তবে পানিবাহী রোগ ছড়িয়ে পড়ছে। এ অবস্থায় উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবদুস সামাদের নেতৃত্বে একটি ভ্রাম্যমাণ মেডিকেল টিম চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছে। অভিযোগ পাওয়া গেছে, সরকারিভাবে বন্যার্ত মানুষের মাঝে কোনোরকম ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হয়নি। ফলে সাধারণ মানুষ পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। জানা গেছে, ঘরে পানি ঢোকায় অনেকেরই মূল্যবান সম্পদের ক্ষতি হয়েছে।

“চট্টগ্রাম ১২ থেকে ১৬ জুন টানা বর্ষণে উত্তর চট্টগ্রামের হাটহাজারী, রাউজান ও ফটিকছড়ি উপজেলার অধিকাংশ এলাকা পানিতে ডুবে গিয়েছিল। হালদা নদীও এ তিন উপজেলায়। জানা গেছে, বন্যার সময় খাল, বিল, ডোবা ও পুকুরের পানি একাকার হয়ে যায়। পরে দূষিত হয়ে এসব পানি গিয়ে পড়ে হালদায়। ফলে গতকাল হালদায় অনেক মরা মাছ ভাসতে দেখা গেছে। স্থানীয় অনেকে ওসব মাছ ধরেছেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ও হালদা রিসার্চ ল্যাবরেটরির সমন্বয়ক ড. মনজুরুল কিবরিয়া বলেন, বন্যার সময় পানি বিভিন্ন স্থান থেকে আবর্জনাসহ হালদায় পড়ে। বর্জ্যে পানি দূষিত হওয়ায় এতে অক্সিজেনের মাত্রা কমে যায়। এ কারণে মাছ মারা যাচ্ছে। বিশেষ করে চিংড়ি প্রয়োজনীয় মাত্রার অক্সিজেন ছাড়া থাকতেই পারে না। তাই এ মাছই বেশি মারা যাচ্ছে। পরিবেশ অধিদফতর চট্টগ্রাম মহানগরের পরিচালক আজাদুর রহমান মল্লিক বলেন, ‘খবর শুনে আমরা হালদায় গিয়েছিলাম। সেখানে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জেনেছি, বৃষ্টিতে বন্যার পানি একাকার হওয়ায় পানি দূষিত হয়ে যাচ্ছে।”

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *