মিয়ানমারের বিদ্রোহীদের অস্ত্র ফেলে রাজনৈতিক আলোচনায় যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সামরিক অভ্যুত্থানের নেতারা। শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) রাষ্ট্রীয় পরিচালিত পত্রিকা গ্লোবাল নিউ লাইট অব মিয়ানমারে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠী এবং সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে লড়াইরত পিপলস ডিফেন্স ফোর্স- পিডিএফকে তাদের কথিত ‘সন্ত্রাসী পথ’ ছেড়ে দিয়ে রাজনৈতিক আলোচনায় যোগ দেওয়ার আহ্বান জানায় এসএসি। তবে দ্রুতই তা প্রত্যাখ্যান করেছে বিরোধীরা। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ খবর জানিয়েছে।
মিয়ানমারে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে রক্তপাতহীন এক সেনা অভ্যুত্থান সংঘটিত হয়। ওই অভ্যুত্থানে অং সান সু চির নির্বাচিত সরকার ক্ষমতাচ্যুত হয়। এরপর ফেব্রুয়ারিতে ক্ষমতা দখলের পর দেশটি শাসন করছে সামরিক বাহিনী। তারা নিজেদের ‘স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন কাউন্সিল-এসএসি’ নামে পরিচয় দিয়ে আসছে।
ওই অভ্যুত্থানের পর মিয়ানমারে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। এখনও দেশটির বিভিন্ন স্থানে সেনাদের সঙ্গে জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠী ও পিডিএফের রক্তক্ষয়ী লড়াই চলছে।
গত অক্টোবর থেকে সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে বড় ধরনের আক্রমণ শুরু করার পর এই সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো দেশের বিস্তীর্ণ এলাকা নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। ফলে প্রচণ্ড চাপে পড়েছে জান্তা বাহিনী।
অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরিয়ে দেওয়া নির্বাচিত আইনপ্রণেতাদের নিয়ে গঠিত ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট (এনইউজি) দ্রুত জান্তা বাহিনীর এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে।
এনইউজির মুখপাত্র নাই ফোন ল্যাট বলেছেন, এই প্রস্তাব বিবেচনারও যোগ্য নয়।
সামরিক বাহিনী যখন গণবিক্ষোভে বর্বর শক্তি প্রয়োগ করে তা দমন করতে শুরু করে, তখন পিডিএফ গঠন করে এনইউজি।
মিয়ানমারের পর্যবেক্ষক সংস্থা- অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্স-এএপিপি জানিয়েছে, অভ্যুত্থানের পর থেকে কমপক্ষে ৫ হাজার ৭০৬ জনকে হত্যা করেছে জান্তা বাহিনী। আটক করেছে ২১ হাজার মানুষকে।
গত মাসে জাতিসংঘের তদন্তকারীরা বলেছেন, সামরিক বাহিনী হাতে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ এবং যুদ্ধাপরাধ উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে।