অনলাইন ডেস্ক: ভূমি অত্যন্ত মূল্যবান সম্পদ। চট্টগ্রামে ভূমি যেন আরও বেশি মূল্যবান। এমনও জায়গা আছে যেখানে এক শতাংশ ভূমির মূল্য ঢাকা মহানগরের চেয়েও বেশি। দেশের অন্যসব মানুষের মতো চট্টগ্রামের মানুষেরও ভূমি সংক্রান্ত আইন, ভূমি ব্যবস্থাপনা ও ভূমির উন্নয়ন ইত্যাদি বিষয়ে তেমন কোনো ধারণা নেই। চট্টগ্রামের ভূমি অফিসটি যেমন জীর্ণ, এখানকার প্রথা-পদ্ধতি, কাজের ধরন সবই পুরনো ধাঁচের। এখানে সেবা নিতে এলে সময়, টাকা, বার বার যাতায়াতের ধকল সামলাতে হয়। সেবাগ্রহীতা নানা রকম সমস্যা ও হয়রানির শিকার হন। সবার কাছেই ভূমি অফিস মানে যেন আতঙ্কের নাম। এতে করে সরকারি সেবার প্রতি সাধারণ মানুষের ক্ষোভ ও বিরক্তির কোনো শেষ নেই।
ভূমি অফিসের সেবার মান বাড়িয়ে সাধারণ মানুষের মনে আস্থা ও সন্তুষ্টি ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে চট্টগ্রামের চাদগাঁও সার্কেল ভূমি অফিসে একটি উদ্ভাবনী প্রকল্পের কাজ শুরু করা হয়। পুরো সেবাদান প্রক্রিয়া সহজ করতে সেবাকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করা হয়। যেমন, ক. ভূমি অফিসের নামজারি সেবা, খ. ভূমি সম্পর্কে তথ্য, ভূমি উন্নয়ন কর ইত্যাদি, গ. ভূমির বর্তমান অবস্থা, আইন, সার্কুলার বা এর পরিবর্তন ইত্যাদি, ঘ. ভূমি অফিসের রেকর্ডরুম থেকে নকল সরবরাহ। এসব সমস্যা সমাধানে একটি ইন্টারেক্টিভ ওয়েবসাইট http://www.acland-chandgaonctg.gov.bd/ চালু করা হয়। যেখানে সব তথ্য ডাটাবেসের মাধ্যমে পাওয়া যায়। সেবার প্রতিটি ধাপ সম্পর্কে জানাতে গ্রাহকদের জন্য এসএমএস সার্ভিস চালু করা হয়েছে। সকল তথ্য ও সেবা সমন্বিত করে তা নিয়ে একটি মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করা হয়েছে। সারা বিশ্বে Google Play Store এর মাধ্যমে এটা উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে যা AC Land Office Chittagong নামে সেখানে পাওয়া যাচ্ছে।
এর ফলে অত্যন্ত অল্প খরচে এক সঙ্গে অনেক বেশি মানুষকে সেবা প্রদান করা সম্ভব হচ্ছে। সেবাগ্রহীতা একটি মোবাইল আ্যপ ব্যবহার করেই ভূমিসংশ্লিষ্ট প্রায় সকল তথ্য হ্যান্ডসেটে পাচ্ছেন এবং তা প্রিন্টও করতে পারছেন। ব্যাংক, সাবরেজিস্টার অফিস ও অন্যান্য সরকারি-বেসরকারি অফিস এই তথ্য কাজে লাগাতে পারছে। এর ফলে দালাল ও দুষ্ট কর্মচারীদের দৌরাত্ম্য যেমন হ্রাস পেয়েছে, সার্বিক ভূমি ব্যবস্থাপনা এবং সেবা প্রদানের গুণগত মান বৃদ্ধি পেয়েছে। সেবাগ্রহীতার সময়, খরচ, যাতায়াত যথাক্রমে ৭৫%, ৮৫% ও ৯০% হ্রাস পেয়েছে। চার লক্ষ ষাট হাজার টাকা ব্যয়ে এই উদ্ভাবনী প্রকল্প থেকে প্রতিদিন বিপুল সংখ্যক মানুষ উপকৃত হচ্ছে।
নির্বাহী সম্পাদক