নিউজ ডেস্ক: ঈদুল ফিতরের ছুটি উপলক্ষে শেষ অফিস ছিল গত বৃহস্পতিবার (১৪ জুন)। অফিস করেই অনেকে ওইদিনই চলে গেছেন জেলা, উপজেলা বা নিজ গ্রামে। পরিবার পরিজনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগির করতে শত ভোগান্তি পেরিয়েও ছুটে গেছেন তারা। এবার তাদের আবার ঢাকায় ফেরার পালা। কর্মজীবী এসব ঢাকায় ফিরে আবারও যোগ দেবেন নিজ নিজ কর্মে, প্রাণ ফিরে পাবে ঈদের ছুটিতে ফাঁকা হয়ে যাওয়া ঢাকাও।
এবার ঈদের ছুটি ছিল মোট তিনদিন। এর মধ্যে দুদিনই সাপ্তাহিক ছুটির দিন (শুক্র ও শনিবার) ছিল। ফলে ঈদের ছুটি বলতে শুধু রোববার একদিনই পেয়েছেন সরকারি চাকরিজীবীরা। তবে অনেকে আবার অতিরিক্ত ছুটি নিয়েছেন।
রাজধানীর সঙ্গে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে নৌ রুট। সড়ক ও আকাশ পথে যোগাযোগ ব্যবস্থা থাকলেও অধিকাংশই লঞ্চে যাতায়াত করতে স্বাচ্ছ্যন্দবোধ করেন। তবে এখনও চিরচেনা রূপ ফিরে পায়নি সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আগামীকাল (মঙ্গলবার) থেকে এ রুটে যাত্রীদের চাপ বাড়তে পারে।
ভোরে সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে দেখা যায়, ঘাটে লঞ্চ ভেড়ানো, তবে বাইরে তেমন লোক সমাগম নেই। টার্মিনালের বাইরের সড়কে বিভিন্ন গন্তব্যের যানবাহন অপেক্ষায় করছে। টার্মিনালের ভেতরে প্রবেশ করে কয়েকজন দেখতে পাওয়া যায়। তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ভোর রাত তিনটা থেকে সাড়ে তিনটার দিকে বেশ কয়েকটি লঞ্চ ঘাটে ভিড়েছে। দিনের আলো ফোটার পর যাত্রীরা লঞ্চ থেকে বের হয়েছেন।
ঈদুল ফিতরের ছুটি শেষে পটুয়াখালীর বাউফল থেকে ঢাকায় ফিরছেন বেসরকারি একটি জরিপ সংস্থার কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ। জাগো নিউজকে তিনি বলেন, ‘নাড়ির টানে বাড়ি ফেরা মানুষগুলো আবার পেটের টানে ঢাকায় ফিরতে শুরু করেছে।’
ঈদ যাতায়াত নিয়ে কোনো আক্ষেপ না থাকলেও পরিবার পরিজনের মায়া কাটিয়ে উঠতে পারছেন না কালাম। তিনি বলেন, ‘একটা ছেলে ক্লাস সেভেনে পড়ে, একটা মেয়ে তিন বছর বয়স আর আমার স্ত্রী, তারা গ্রামে থাকে। ঈদে তাদের আরও দু’একটা দিন সময় দিতে পারলে ভালো লাগতো।’
তিনি বলেন, ‘অফিস শেষ করে বৃহস্পতিবারই গ্রামের বাড়িতে রওনা করি। ওইদিন খুব ভিড় ছিল, রোজা রেখে লঞ্চে উঠতে কষ্ট হয়েছিল। এছাড়া আলহামদুলিল্লাহ, কোনো সমস্যা হয় নাই। ভালোভাবে ঈদ করে ঢাকায় ফিরছি। তিনদিনের ছুটি, পেটের টানে আবারও ঢাকায় ফিরছি।’
ঢাকা থেকে পটুয়াখালী ঈদ করতে গিয়েছিলেন মিজানুর রহমান এবং শিলা রহমান দম্পতি। তাদের একটি ছেলে এবং একটি মেয়ে সন্তান রয়েছে। রাজধানীর কাঠালবাগানে বসবাস করা মিজানুর রহমান বেসরকারি চাকরিজীবি। তার হাতে আরও কয়েকদিন ছুটি থাকলেও সরকারি চাকরিজীবী স্ত্রী শিলা রহমানের ছুটি শেষ। তাই মিজানুর রহমানকে গ্রামের বাড়িতে রেখে দুই সন্তান নিয়ে সকালে ঢাকায় ফিরেছেন শিলা রহমান। তিনি বলেন, ‘তেমন চাপ নেই, আর ভোগান্তি নেই। ভাড়া ও নিয়ম অনুযায়ী দিয়ে এসেছি।’
ভোলা থেকে লঞ্চে ফিরেছেন মো. মোবারক প্যাদা। গুলিস্তানের একটি দোকানে কাজ করেন তিনি। মোবারক প্যাদা বলেন, ‘ঈদ ছুটির যাত্রাপথে তার কোনো সমস্যা হয় নাই, ভালোভাবে ঈদ করে ঢাকায় ফিরছি।’
বাংলাদেশ্য অভ্যন্তরীন নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের সদরঘাট টার্মিনালে কর্তব্যরতরা জানান, সোমবার ভোর থেকে ঈদ ফিরতি লঞ্চযাত্রীরা ঢাকায় আসা শুরু করেছেন। যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড় নেই। তবে আগামীকাল (মঙ্গলাবর) থেকে ভিড় বাড়বে। কারণ, ঈদে বাড়ি ফেরা মানুষের বড় একটা অংশ এখনও ছুটিতে রয়েছেন।
নির্বাহী সম্পাদক