ভাদ্রের খরতাপে পুড়ছে সিলেট। গরমে ত্রাহি অবস্থা। এর মধ্যে চলছে ঘন্টায় ঘন্টায় লোডশেডিং। এক ঘন্টা বিদ্যুৎ পেলে পরের ঘন্টা থাকতে হচ্ছে লোডশেডিংয়ের বিড়ম্বনায়। রাত-দিন সমানতালে চলছে বিদ্যুতের আসা যাওয়া। বিদ্যুতের এই বিপর্যস্ত অবস্থায় ফুঁসছেন সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীরা। বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের কারণে কলকারখানার উৎপাদনে যেমন ব্যাঘাত ঘটছে, তেমনি বিপণিবিতানগুলোর ব্যবসায়ীরাও পড়েছেন বিপাকে। বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধানে ব্যবসায়ীরা আল্টিমেটাম দিয়েছেন। আজ বুধবারের মধ্যে লোডশেডিং সহনীয় পর্যায়ে আনতে না পারলে আন্দোলনে নামার ঘোষণা দিয়েছেন সিলেটের ব্যবসায়ীদের একাধিক সংগঠন।
জানা গেছে, মঙ্গলবার ( ১০ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টা পর্যন্ত সিলেট জোনে বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ১৯০.৬০ মেগাওয়াট। কিন্তু সরবরাহ করা হয়েছে ১৩৬.৮৫ মেগাওয়াট। চাহিদার তুলনায় ২৮.২০ শতাংশ কম বিদ্যুৎ পেয়েছে সিলেট জোন।
এছাড়া সিলেট জেলায় মঙ্গলবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ১৩৪.৭২ মেগাওয়াটের বিপরীতে সরবরাহ করা হয়েছে ৯৩.৬৬ মেগাওয়াট। অর্থাৎ চাহিদার তুলনায় সিলেট জেলায় ওই সময়ে ৩০.৪৭ শতাংশ কম বিদ্যুৎ পেয়েছে।
এর আগের দিনও (সোমবার) ছিল প্রায় একই অবস্থা। সিলেট জোনে ২১৪.৭০ মেগাওয়াট চাহিদার বিপরীতে ১৬০.৪০ মেগাওয়াট এবং সিলেট জেলায় ১৪১.৫০ মেগাওয়াট চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ ছিল ৯৮.৯৪ মেগাওয়াট। ফলে সোমবার সিলেট জোনে ঘাটতি ছিল ২৫.২৯ শতাংশ ও জেলায় ঘাটতি ছিল ৩০.০৭ শতাংশ।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন ও বিতরণ বিভাগ থেকে সিলেট জেলায় প্রায় ৩০ শতাংশ ঘাটতি দেখানো হলেও মুলত এর চেয়ে বেশি ভোগান্তিতে রয়েছেন মানুষ। সিডিউল লোডশেডিং ছাড়াও নানা ত্রুটির কারণে ঘন্টার পর ঘন্টা বিভিন্ন এলাকা বিদ্যুৎহীন অবস্থায় থাকছে। ফলে গড়ে ১২ ঘন্টার বেশি বিদ্যুৎ পাচ্ছেন না সিলেটবাসী।
বিদ্যুতের সীমাহীন ভোগান্তির কারণে সিলেটে ফুঁসে ওঠছেন সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীরা। বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান আজ বুধবারের মধ্যে না হলে ঐক্যবদ্ধ কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামার ঘোষনা দিয়েছে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি সিলেট জেলা শাখা এবং সিলেট জেলা ও মহানগর ব্যবসায়ী ঐক্য কল্যান পরিষদ। অনেকে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন আন্দোলনে হলে ঘটে যেতে পারে অনাকাঙ্খিত ঘটনা।
সিলেট বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবু হোসাইন জানান, মঙ্গলবার বিদ্যুৎ বিভাগের একটি অভ্যন্তরীণ সভা হয়েছে। ওই সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক সিলেটের বিদ্যুতের বর্তমান অবস্থা তুলে ধরে ঢাকায় একটি প্রতিবেদন পাঠানো হবে। এরপর ঢাকা থেকে কী সিদ্ধান্ত আসে তার জন্য অপেক্ষা করতে হবে।
সিলেট বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী আব্দুল কাদির জানান, বিদ্যুতের লোড ম্যানেজমেন্টের দায়িত্ব সিলেট অফিসের হাতে নেই। সিলেটের সমস্যার ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে। লোডশেডিং বাড়ানো বা কমানো সিলেটের কর্মকর্তাদের এখতিয়ারের বাইরে। তারপরও জনগণের ক্ষোভের মুখে পড়তে হচ্ছে সিলেটের কর্মকর্তাদের।