বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের চলছে মুহুর্মুহু মর্টারশেল ও গুলিবর্ষণ। এতে সীমান্তে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। ফলে বান্দরবানের তুমব্রু সীমান্তের এপারের দুই গ্রামের প্রায় তিন হাজার মানুষ অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন।
রবিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) রাত থেকে সকাল সাড়ে ১০টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত থেমে থেমে মর্টারশেল ও গুলির শব্দ আসছে। এতে তুমব্রু সীমান্তে বাংলাদেশি দুই জনের বাড়িতে মর্টারশেলের বিস্ফোরিত অংশসহ গুলি এসে পড়েছে। তবে এ ঘটনায় কোনও হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
আরও পড়ুন: মিয়ানমার থেকে ছোড়া গুলি বাংলাদেশি অটোরিকশায় পড়ার অভিযোগ
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘রাত থেকে এখন (সকালে) সীমান্তে মর্টারশেল-গুলিবর্ষণ থেমে নেই। এতে রাত থেকে দুই গ্রামের (কোনাপাড়া-পশ্চিম পাড়ার) প্রায় তিন হাজার মানুষ নিরাপদে অন্যত্রে আশ্রয়ে চলে গেছেন। এ ছাড়া মিয়ানমারের ছোড়া মর্টারশেলের কিছু অংশ ও গুলি এসে পড়েছে স্থানীয় দুই জনের বাড়িতে। তবে হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।’
তিনি বলেন, ‘সীমান্তে থমথমে অবস্থা। এখানকার বাসিন্দারা খুব বেশি আতঙ্কের মধ্য রয়েছে।’
সীমান্তের স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বলছেন, রাত থেকে থেকে এখনও মুহুর্মুহু গুলি ও মর্টারের গোলা নিক্ষেপ শুরু করে মিয়ানমার সীমান্তে। এ ঘটনায় পশ্চিম পাড়ার ফরিদ আলমের বাড়িতে গুলি এবং কোনাপাড়া ইউনুছ ওরফে ভুলুর বাড়িতে এসে পড়ে মর্টারশেলের খোসা। এতে বাড়ির টিন ছিদ্র হয়ে খোসাটি বাড়ির ভেতরে এসে পড়ে। তবে বাড়িতে কেউ না থাকায় হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
কিন্তু এ ঘটনার আগে থেকেই কোনারপাড়ার বাসিন্দারা ঘর ছেড়ে তাদের আত্মীয়-স্বজনের বাসায় চলে গেছেন। এতে নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম সীমান্তে তীব্র আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। ভয়ে লোকজন ঘর থেকে বের না হওয়ায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
তুমব্রু সীমান্ত এলাকার বাসিন্দা শাহাজান মিয়া বলেন, ‘ব্যাপক মর্টারশেল-গুলিবর্ষণ চলছে মিয়ানমার সীমান্তে। ফলে এখানকার মানুষ অন্যত্রে সরে যাচ্ছে। এখানে থমথমে অবস্থা। এই সীমান্তের মানুষের মাঝে রাত-দিন আতঙ্ক দিন যাপন করছে। অনেকে আবার ঘর থেকে বের হচ্ছে না।’
এদিকে টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং থেকে শাহপরীর দ্বীপ এলাকার মিয়ানমার সীমান্তে গুলিবর্ষণের আওয়াজ পেয়েছে বলে জানিয়েছেন সীমান্তে বাসিন্দারা।
টেকনাফ সীমান্তের বাসিন্দা মোহাম্মদ আলী বলেন, রাত থেকে সকাল পর্যন্ত থেমে গুলিবর্ষণ চলছে মিয়ানমার সীমান্তে। যার কারণে এখানকার মানুষের মাঝে ভয়ভীতি কাজ করছে।
এ বিষয়ে টেকনাফ ব্যাটালিয়ন (বিজিবি-২) অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. মহিউদ্দীন আহমেদ বলেন, সীমান্তে আমরা সর্বোচ্চ সর্তক অবস্থানে রয়েছি। কোনোভাবে নতুন করে কোনও অনুপ্রবেশ ঘটতে দেওয়া হবে না।
জানতে চাইলে বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শাহ মুজাহিদ উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত তুমব্রু এলাকায় আবারও গুলিবর্ষণে খবর পাওয়া গেছে। সীমান্তে বসবাসকারীদের সর্তক থাকতে বলেছি। পাশাপাশি সীমান্তের খোঁজ রাখছি।
বার্তা বিভাগ প্রধান