লেবাননের ইরানপন্থি শিয়া সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসরাল্লাহ বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি ভেবে থাকে যে লোহিত সাগরে ইয়েমেনের হুথিরা ইসরায়েলকে মোকাবিলা করা থেকে বিরত থাকবে, তাহলে তারা ভুল করছে। ইয়েমেনে মার্কিন হামলা সাগরটিতে নৌ চলাচলকে হুমকির মধ্যে ফেলে দিয়েছে। রবিবার (১৪ জানুয়ারি) তিনি এই মন্তব্য করেছেন। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ খবর জানিয়েছে।
গত সপ্তাহে লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে ইসরায়েলি হামলায় নিহত শীর্ষ হিজবুল্লাহ কমান্ডার উইসাম তাবিলের স্মরণে আয়োজিত অনুষ্ঠানে দেওয়া ভাষণে নাসরাল্লাহ বলেছেন, লোহিত সাগরের নিরাপত্তা ব্যাহত হয়েছে। জলসীমাটি লড়াই, ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন ও যুদ্ধজাহাজের মঞ্চে পরিণত হয়েছে।
ইরানপন্থি হুথিদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে ইয়েমেনের বেশিরভাগ ভূখণ্ড। গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে লোহিত সাগরে নৌযানে হামলা চালিয়ে আসছে তারা। সম্প্রতি দুই দফায় হুথিদের অবস্থানে হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। এর ফলে গাজায় ইসরায়েল-হামাস সংঘাত নাটকীয়ভাবে আঞ্চলিক পর্যায়ে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
হুথিদের এক মুখপাত্র বলেছেন, ইঙ্গ-মার্কিন হামলার কোনও ন্যায্যতা নেই এবং লোহিত সাগরে ইসরায়েলগামী জাহাজে হামলা অব্যাহত থাকবে।
ভাষণে নাসরাল্লাহ বলেছেন, বিপজ্জনক হলো যে কাজটি আমেরিকানরা লোহিত সাগরে করেছে তাতে সব নৌ চলাচলের নিরাপত্তা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এমনকি ফিলিস্তিন বা ইসরায়েল যাচ্ছে না যেসব জাহাজ সেগুলোও হুমকিতে রয়েছে। কারণ সাগরটি লড়াই, ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন ও যুদ্ধজাহাজের মঞ্চে পরিণত হয়েছে।
ইরানপন্থি হিজবুল্লাহও ইসরায়েলের সঙ্গে পাল্টাপাল্টি আন্তঃসীমান্ত গোলাবর্ষণে লিপ্ত রয়েছে। তারাও গাজায় ইসরায়েলি আক্রমণের জবাবে ইসরায়েলি ভূখণ্ডে রকেট ও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে আসছে। ৭ অক্টোবর ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পর প্রায় প্রতিদিন লেবাননের সীমান্ত থেকে হিজবুল্লাহ যোদ্ধা ও ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর পাল্টাপাল্টি গোলাগুলি চলছে। এই তিন মাস ধরে সীমান্তবর্তী এলাকায় এই সংঘর্ষে লেবাননে হিজবুল্লাহর শতাধিক যোদ্ধাসহ প্রায় ২০০ জন নিহত হয়েছেন। অন্যদিকে ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলে দেশটির ৯ জন সেনা সদস্য ও অন্তত চার জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন।
ইরাক এবং সিরিয়াতেও মার্কিন সেনাদের অবস্থানে হামলা চালাচ্ছে ইরানপন্থি মিলিশিয়া ও সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো।
নাসরাল্লাহ বলেছেন, লেবাননে দূত পাঠানো হয়েছে। দূত তাদের বলেছেন, যদি হিজবুল্লাহ হামলা বন্ধ না করে তাহলে ইসরায়েল লেবাননের সঙ্গে যুদ্ধ শুরু করবে।
অবশ্য দূতের পরিচয় তিনি প্রকাশ করেননি।
তিনি দাবি করেছে, ইসরায়েল সীমান্তে গোলাবর্ষণের লক্ষ্য ছিল গাজায় দেশটির আগ্রাসন বন্ধ করানো।
হিজবুল্লাহ বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের জানা উচিত যে, লোহিত সাগরের নিরাপত্তা এবং লেবানন ফ্রন্টের শান্ত পরিস্থিতি, ইরাকের পরিস্থিতি এবং পুরো অঞ্চলে সংঘাতের পথে যেসব অগ্রগতি ঘটছে সেগুলো একটি বিষয়ে সঙ্গে বাঁধা রয়েছে, আর তা হলো গাজায় আগ্রাসন বন্ধ করতে হবে। আপনারা (যুক্তরাষ্ট্র) পরিণতি ও ফলাফল মোকাবিলার চেষ্টা করছেন, কারণ সমাধান করুন।
বার্তা বিভাগ প্রধান